ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

পাবনায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, আটক ১

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২২
পাবনায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, আটক ১

পাবনা: পাবনার চাটমোহর উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের কাঁঠাল বাড়িয়া গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

এ ঘটনায় একই গ্রামের ফিরোজ উদ্দিনের ছেলে অভিযুক্ত নাছির উদ্দিনকে (১৪) আটক করেছে থানা পুলিশ।

সে স্থানীয় একটি স্কুলের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তবে এ ঘটনার তিনদিন (৭২ ঘণ্টা) অতিবাহিত হলেও এখনো শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়নি বলে জানা গেছে। এই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ঠ থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা সময়ক্ষেপণ করছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।

গত ১৫ জুন (বুধবার) বিকেলে এ ঘটনা ঘটার পরে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ঠ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর অভিযুক্ত  কিশোরকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে ঘটনার সত্যতা শিকার করেছে ওই কিশোর। পরে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

এদিকে ঘটনার দিন রাতেই নির্যাতিত শিশুটিকে পাবনা সদরের ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্র্তি রাখা হয়েছে। তবে ঘটনার পর দীর্ঘ ৭২ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা এখনো সম্পন্ন হয়নি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

ভুক্তিভোগী পরিবারের অভিযোগ, ১৬ জুন (বৃহস্পতিবার) সংশ্লিষ্ঠ থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) রফিককে বহুবার অনুরোধের পরেও তিনি বিষয়টি কর্ণপাত করেননি। এ মামলার পর তিনি নিজে হাসপাতালে না এসে বাদীর কাছে এজহারের কপি দিয়ে পাঠিয়ে দেন হাসপাতালে। কিন্তু আইনগত প্রক্রিয়ার ও চিকিৎসক না থাকায় ওয়ান-স্টপ সেন্টারের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা শিশুটির ডাক্তরি পরীক্ষা করাতে পারেনি। এদিকে হাসপাতালের শয্যায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শিশুটিকে ভর্তি রাখা হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে, শনিবার (১৮ জুন) বেলা ১১টার দিকে পাবনা সদর হাসপাতালে শিশুটির খোঁজ নিতে গেলে তখনো তদন্তকারী কর্মকর্তা সেখানে পৌঁছায়নি। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে  তিনি একজন নারী কনস্টেবল সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হন সেখানে। এই দীর্ঘ সময় ক্ষেপণ আর অবহেলার বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, আইনগত প্রক্রিয়ার কারণে দেরি হয়েছে। মামলা নথিভুক্ত করে আসতে হয়। এই বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযুক্ত ওই কিশোর প্রাথমকিভাবে ঘটনাটি শিকার করেছে আমাদের কাছে। এখন ডাক্তারি পরীক্ষার পরে চিকিৎসকদের প্রতিবেদন পেলে আমরা সেটি আদালতে পাঠাবো। তবে এ ক্ষেত্রে কোনো সময়ক্ষেপণ করা হয়নি। মাঝে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে সময় লেগেছে বলে জানান তিনি।

এদিকে ওয়ান-স্টপ এর দায়িত্বরত সেবিকা বলেন, মেয়েটি বুধবার রাতে আমাদের এখানে এসেছে। পরেরদিন বিকেলে পুলিশের একটি কাগজ নিয়ে আমাদের কাছে এসেছিলেন মেয়েটির বাবা। তখন কোনো চিকিৎসক ছিল না। আর এভাবে ধর্ষণের পরীক্ষা করা হয় না। সেখানে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মেয়ে পুলিশ সদস্য থাকতে হয়। কোনো পুলিশ সদস্য এখনো এখানে আসেনি।  

এ ধরনের ঘটনায় যদি খুব জরুরি হয়ে থাকে তবে চিকিৎসককে ডেকে এনে পরীক্ষা করা হয়। তবে এখানে আমাদের কোনো গাফলতি নেই বলে জানান তিনি।

মেয়েটির বাবা ও মা কান্না জড়িত কণ্ঠে উপস্থিত গণমাধ্যকর্মীদের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশা করেন। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না হয় সেজন্য অভিযুক্ত ধর্ষককে কঠিন শাস্তির দাবি করেন পরিবারটি। একই সঙ্গে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা চান তারা।

ঘটনার বিষয়ে চাটমোহর অঞ্চলের দায়িত্বরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজিব সাহরিন বলেন, এ ঘটনায় মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরে রাতেই ধর্ষক কিশোরকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে অভিযুক্ত ছেলেটি ঘটনার সত্যতা শিকার করেছে আমাদের কাছে। তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষায় তদন্তকারী কর্মকর্তার গাফিলতি ছিল কিনা সেই বিষয়ে তাকে ডাকা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষায় সময় লেগেছে এটা সত্য। তবে ন্যায় বিচার বা চিকিৎসকদের প্রতিবেদন সঠিক নিয়মে পাঠানো হবে। আর ইচ্ছাকৃত সময়ক্ষেপণ করলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।