ঢাকা, রবিবার, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

এক বছর কারাভোগের পর জমজ সন্তান নিয়ে মুক্তি পেলেন টুম্পা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৯ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২২
এক বছর কারাভোগের পর জমজ সন্তান নিয়ে মুক্তি পেলেন টুম্পা

বরিশাল:চেক জালিয়াতির মামলায় ২০২১ সালের ৩০ জুন কারাগারে যান বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের হৃদয় পান্ডের স্ত্রী টুম্পা বাড়ৈ। দীর্ঘ সময় পরে প্রমাণ হয়, চেকটিতে বাদী ষড়যন্ত্র করে টুম্পার কাছ থেকে স্বাক্ষর আদায় করেন।

বিষয়টি আদালতের নজরে এলে কারাগারে থাকা টুম্পার মুক্তির আদেশ দেওয়া হয়।

যদিও কারাগারে যাওয়ার সময় টুম্পা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন এবং কারান্তরীণ থাকা অবস্থায় যমজ দুটি শিশুর জন্ম দেন তিনি। জমজ সন্তান দুটি জন্মের পর থেকে কারাগারের ভেতরে মা টুম্পার সঙ্গেই ছিল।  

এদিকে এক বছর পর যখন টুম্পা বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন, তখন তার যমজ সন্তান সাগর ও সাগরিকার বয়স ১১ মাস।

বুধবার (২৯ জুন) মুক্ত হওয়ার পর অপরাধ সংশোধন এবং পুনর্বাসন সমিতির পক্ষ থেকে এ দুই শিশুর জন্য আর্থিক সহায়তা এবং তাদের মা টুম্পাকে একটি সেলাই মেশিন দেন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, পাঁচ লাখ টাকার চেক জালিয়াতির মামলায় ২০২১ সালের ৩০ জুন কারাগারে যান টুম্পা। পরে প্রমাণ হয়, ওই চেকটিতে বাদী ষড়যন্ত্র করে টুম্পার কাছ থেকে স্বাক্ষরটি আদায় করেন। বিষয়টি আদালত শতভাগ নিশ্চিত হয়ে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেন।

তিনি জানান, কারাগারে থাকা অবস্থায় টুম্পা যমজ শিশুর জন্ম দেন। ছেলের নাম রাখা হয় সাগর এবং মেয়ের নাম সাগরিকা। বর্তমানে তাদের বয়স ১১ মাস। মায়ের সঙ্গে তারাও কারাগারে ছিল। ওই সময় টুম্পা সেলাই মেশিনের কাজ শেখেন। তিনি এখন ভালোভাবে মেয়েদের পোশাক বানাতে পারেন।

তার মুক্তির খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তার যমজ শিশুদের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং তার জন্য সেলাই মেশিনের ব্যবস্থা করতে বলেন। মুক্ত হওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে টুম্পাকে এসব সহায়তা দেওয়া হয়। এসময় তার স্বামী হৃদয় পান্ডেও উপস্থিত ছিলেন।

টুম্পার স্বামী হৃদয় পান্ডে জানান, বাড়ি গিয়ে সেলাই মেশিনে কাপড় সেলাই করবেন তার স্ত্রী আর  বেকার হওয়ায় তিনি তাকে সহায়তা করবেন।

জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, অপরাধ সংশোধন এবং পুনর্বাসন সমিতির মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে আসামি ও কয়েদিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যাতে করে তারা মুক্ত হয়ে আত্মনির্ভরশীল হতে পারেন। এ জন্য তাদের আর্থিক সহায়তাও করা হয়। এরপর তাদের ফলোআপে রাখা হয়। এভাবে বহু আসামি ও কয়েদি বর্তমানে অপরাধ থেকে সরে ভালোভাবে জীবনযাপন করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় টুম্পাকেও আর্থিক সহায়তাসহ একটি সেলাই মেশিন দেওয়া হলো। যাতে করে তিনি আয় করে সংসার চালাতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১৪৭ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২২
এমএস/এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।