ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

নিম্নবিত্তদের আবাসন নিয়ে ভাবছে রাজউক

মাছুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
নিম্নবিত্তদের আবাসন নিয়ে ভাবছে রাজউক ফাইল ছবি

ঢাকা: ঢাকায় বসবাসরত স্বল্প আয়ের মানুষের (নিম্নবিত্ত) জন্য সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পের আদলে আবাসন তৈরির কথা ভাবছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ লক্ষ্যে প্রস্তাবনাও তৈরি করেছে তারা।

এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকায় বসবাসরত স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য অল্প ভাড়ায় এসব আবাসন বরাদ্দ করা হবে।

গত ২০ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবে নগর সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় রাজউক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিয়া এ প্রকল্পের বিষয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, সরকারের আশ্র‍য়ন প্রকল্পের মতো এটি বিনামূল্যে করার কথা বলেছেন অনেকেই। কিন্তু, সেটি হলে ঢাকায় চাপ আরও বাড়বে। তখন দেখা গেল, আশ্রয়নের ঘরের জন্য রাজধানীতে আরও মানুষ আসতে শুরু করবে।

তিনি বলেন, কাজেই  আমরা যেটি চাই, সেটি হচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য এসব ঘর করতে। যাতে তারা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে না থাকে। এই প্রকল্পে আমরা দু'ধরনের আবাসন তৈরির কথা ভাবছি। যদি আমরা ৩০০-৪০০ বর্গফুটের আবাসন তৈরি করি, সেক্ষেত্রে মাসিক সাড়ে ৩ হাজার টাকায় এটি বরাদ্দ দেওয়া যাবে। আরেকটি হল, যদি আমরা ৫০০-৬০০ বর্গফুটের আবাসন তৈরি করতে চাই সেক্ষেত্রে ৫-৬ হাজার টাকা মাসিক কিস্তি নির্ধারিত হবে। নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে মালিকানা তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

এই প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পরিকল্পনাবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আকতার মাহমুদ খান বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকায় যেসব নিম্নবিত্তরা থাকেন, যদি প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখে, তাহলে তাদের জন্য বলা যায় যে, নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা হবে।

তিনি বলেন, তবে, অতীতে আমরা যেটি দেখেছি যে, এ ধরনের প্রকল্প টার্গেটেড মানুষের কাছে সেভাবে পৌঁছায় না। অর্থাৎ, যাদের জন্য করা তারা তেমন সুফল পান না। কাজেই এ বিষয়টিতে সতর্ক থাকতে হবে। যাতে করে, নিম্নবিত্তরাই কেবল এ প্রকল্পের সুবিধাভোগী হয়।

জাবির এই অধ্যাপক বলেন, আরেকটি বিষয় যুক্ত করতে চাই, যদি ভূমি সরকার তথা রাজউকের নিজস্ব হয়, তবে আবাসন প্রকল্পে ব্যয় কম হবে। কাজেই, খেয়াল রাখতে হবে ভূমি অধিগ্রহণ করতে যেয়ে যাতে সেটা নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে না চলে যায়। তারা যাতে এফোর্ট করতে পারে।

আরেকটি জিনিস, যেটা আপনি খেয়াল করলে দেখবেন, নিম্ন আয়ের মানুষগুলো সাধারণত সেসব এলাকায় থাকেন, যেখান থেকে তার যাতায়াত সুবিধা হয়। কাজেই, অধিগ্রহণ হোক বা নিজস্ব ভূমি হোক, যাতে তাদের যাতায়াত সুবিধাটা থাকে।

প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রিকশাচালক জয়নাল হোসেন বলেন, এরকম হলে তো খুবই ভাল হয়। আমি প্রায় ১৫ বছর ধরে ঢাকায় থাকি। সাধারণত ২-৩ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া দিয়ে থাকি আমরা। তবে, নোংরা পরিবেশে খুব কষ্ট করে থাকি। এরকম হলে খুব ভাল হবে।

এদিকে রাজউক চেয়ারম্যান আরও বলেন, আগামীতে রাজধানীর যানজট ও মানুষের চাপ নিরসনে এয়ারপোর্ট, ৩০০ ফিট ও মাদানি এভিনিউ দিয়ে ৩টি সড়ক করার পরিকল্পনা আছে। যে সড়কগুলো এসে পূর্বাচলে মিলবে।

তবে, আবাসনের এই প্রকল্প আলোর মুখ দেখলে নিম্ন আয়ের মানুষরা যেমন সুফলভোগী হবেন; তেমনি তাদের জন্য নিরাপদ আবাসনের ব্যাবস্থা হলে তথা সুরক্ষিত জীবন-যাপন নিশ্চিত করা গেলে মাদকের সংক্রমণ বা অন্যান্য অপরাধও কমে আসবে, এমনটিই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, ২৩ জুলাই, ২০২২
এমকেেএমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।