ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সরকার নির্ধারিত ভাড়া মানছে না কেউ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০২২
সরকার নির্ধারিত ভাড়া মানছে না কেউ

ঢাকা: মহানগর এলাকায় প্রতি কিলোমিটারে ৩৫ পয়সা বাড়িয়ে ২.৫০ টাকা ও দূরপাল্লার বাসে প্রতি কিলোমিটারে ৪০ পয়সা হারে ভাড়া বাড়িয়ে ২.২০ টাকা করার কথা থাকলেও রাজধানীতে সেটি মানছেন না পরিবহন শ্রমিকরা। আর দূরপাল্লার বাসে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সমন্বয়কৃত বাড়তি ভাড়া চোখে পড়েনি।

রোববার (৭ অগাস্ট) সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, দূরপাল্লার অধিকাংশ বাস এখনো আগের ভাড়াতেই যাত্রী পরিবহন করছে। তবে, সূত্র জানিয়েছে দুয়েক দিনের মধ্যেই বাড়তি ভাড়া সমন্বয় করে নতুন হারে (২২ শতাংশ বৃদ্ধি) ভাড়া নির্ধারণ করা হতে পারে।

জানতে চাইলে চাঁদপুরগামী আল-আরাফাহ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার রাশেদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা-চাঁদপুর রুটে এখন যে ভাড়া, সেটিও কিঞ্চিৎ বাড়তিই মনে করি। কর্তৃপক্ষ এখনো নতুন ভাড়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমরা এরকম কোনো নির্দেশনা পাইনি। ফলে, আমরা চাই সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত যাত্রীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করুক।

ঢাকা-কুমিল্লা রুটের এশিয়া লাইনের কাউন্টার মাস্টার মুজাহিদ বাংলানিউজকে বলেন, আজ-কালের মধ্যে ভাড়া সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আসলে সে অনুযায়ী নতুন ভাড়া নির্ধারিত হবে।

তবে, দূরপাল্লার বাসে সমন্বয় না করা হলেও, মহানগরীর পরিবহনগুলোর পোয়াবারো হয়েছে। নতুন হিসেবে (১৬.২৭ শতাংশ) ভাড়া বৃদ্ধির কথা থাকলেও যাত্রী পরিবহনে বিশৃঙ্খলার চূড়ান্ত উদাহরণ এসব পরিবহনে ভাড়া নিয়ে চলছে চূড়ান্ত নৈরাজ্য।
 
নিয়মানুযায়ী সমন্বয়কৃত তালিকা না ঝুলালেও মনমত বাড়তি ভাড়া দাবি করছেন শ্রমকিরা। তারা বলছেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন। সমন্বয়কৃত ভাড়াই নিচ্ছেন। আজকালের মধ্যেই তালিকাও ঝুলাবেন। কিন্তু, হিসেব বলছে ভিন্ন কথা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গাজীপুর থেকে সদরঘাট অভিমুখী গুলিস্তান পরিবহনে মহাখালী থেকে পল্টন পর্যন্ত ভাড়া ২০ টাকা হলেও, বর্তমানে শ্রমিকরা ৩০ টাকা দাবি করছেন। যা ৩৫ পয়সা কিলোমিটার হিসেবের চেয়ে অনেক বেশি।

অন্যদিকে, বলাকা পরিবহনের বাসগুলোতে সায়েদাবাদ থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্ধারিত ভাড়া ১৫ টাকা হলেও সেখানে ২০-২৫ টাকা ভাড়া দাবি করা হচ্ছে। খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা গেছে অন্যান্য রুটেও মোটামুটি একই অবস্থা।

জানতে চাইলে শাহাদাত হোসেন নামে একজন বাংলানিউজকে বলেন, এসব নতুন কিছু না ভাই। প্রত্যেকবার তেলের দাম বাড়লেই চালক-হেলপাররা এরকম উল্টোপাল্টা ভাড়া দাবি করেন। বাধ্য হয়ে আমরাও দিই। কারণ, অন্যকিছু তো এফোর্ট করতে পারব না।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এই আশঙ্কাই করছিলাম। সরকার ভাড়া বাড়াতে পারে, কিন্তু সেটি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আমরা, ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছি। আদতে, ভাড়ার হিসেবের ফাঁক-ফোঁকর জনগণকে বুঝতে দেওয়া হয় না। ফলে, মালিকপক্ষ ও শ্রমিকরা মিলে সে ফায়দা লুটে নেয়।

এদিকে, বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি মনিটরিং করবে বিআরটিএ। রোববার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে বিআরটিএ'র ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।

তবে, যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলছেন, ৮ জনের মনিটরিংয়ের বিষয়টি প্রতিকী। ঢাকার মত শহরে ১০ হাজার বাস এই জনবল দিয়ে মনিটরিং কোনো ভাবেই সম্ভব নয়।

>>> আরও পড়ুন: সিটিতে ৩৫, দূরপাল্লায় কিলোমিটারে ৪০ পয়সা ভাড়া বাড়লো

বাংলাদেশ সময়: ১০০৮ ঘণ্টা, ৭ অগাস্ট, ২০২২
এমকে/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।