ঢাকা, রবিবার, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

আশ্রয়ণের ঘরে নারীর অর্ধগলিত মরদেহ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২২
আশ্রয়ণের ঘরে নারীর অর্ধগলিত মরদেহ

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি তালাবদ্ধ ঘর থেকে আসমা আক্তার (৩০) নামে এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।  

শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ উপজেলার হাজিমারা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

আসমা তার স্বামী খোকন গাজীর (৪০) সঙ্গে ওই ঘরে বসবাস করতেন। তবে খোকনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পারিবারিক বিরোধের জেরে আসমাকে হত্যা করে খোকন মরদেহ রেখে ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে গেছে বলে ধারণা পুলিশ ও স্থানীয়দের।  

মৃত আসমা উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাচিয়া গ্রামের ওসমান দর্জির মেয়ে এবং খোকন গাজীর দ্বিতীয় স্ত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, শনিবার সকালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালাবদ্ধ একটি ঘর থেকে দুর্গন্ধ পায় পাশের বাসিন্দারা। পরে তারা স্থানীয় হাজিমারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে দরজা খুলে একটি মরদেহ দেখতে পায়। দুপুরের দিকে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।  

তারা আরও জানায়, সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ঘরটি স্থানীয় জাকির নামে এক ব্যক্তির। তার ঘরে মাসিক ৫০০ টাকায় ভাড়া থাকতো আসমা-খোকন দম্পতি। তাদের মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্রায় ঝগড়া হতো। সর্বশেষ গত ১৭ আগস্ট আসমা বেগম ও তার স্বামী খোকন গাজীর মধ্যে ঝগড়া লাগে। পরে খোকন ঘরের দরজা তালাবদ্ধ করে চলে যায়।  

আসমার মা অজুফা বেগম ও বোন পেয়ারা বেগম বলেন, আসমার স্বামী খোকন গাজীর বাড়ি বরিশাল জেলায়। কিন্তু সে নারায়ণগঞ্জে বসবাস করতো। খোকন গাজির সঙ্গে আসমার পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রায় দুই বছর আগে বিয়ে হয়। আসমা খোকনের দ্বিতীয় স্ত্রী এবং খোকনের সঙ্গে বিয়ের আগে আসমারও আরেকটি বিয়ে হয়। ওই সংসারে তার এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। পরিবারের অমতে আগের সংসারের স্বামী-সন্তানদের রেখে সে খোকনকে বিয়ে করে।  

তারা আরও জানায়, প্রায় দুই মাস আগে খোকনকে নিয়ে আসমা নারায়ণগঞ্জ থেকে তার পৈত্রিক বাড়িতে আসে। পরে মাস খানেক আগে জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে হাজিমারা আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকা একটি কক্ষ ভাড়া নেয় তারা। সে ঘরে তারা থাকতো এবং খোকন এ এলাকায় শ্রমিকের কাজ করতো। শনিবার ভাড়া বাসায় আসমার অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া যায়। তার স্বামী খোকন পলাতক রয়েছে।  

হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. শওকত বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘরে ঢুকে আসমার মরদেহ পাওয়া গেছে। মরদেহটি খাটে শোয়ানো ছিল। তার স্বামী পলাতক রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি একটি হত্যাকাণ্ড বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।  

তিনি জানান, মৃতদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে, গত ১৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দুপুরে একই উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দেবিপুর গ্রামের একটি সুপারি বাগান থেকে লায়লা নুর নিপু (২৫) নামে এক গৃহবধূর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের। দুইদিনের ব্যবধানে পুলিশ দুই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে। তারা দুইজনই হত্যাকাণ্ডের শিকার।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।