ঢাকা, শুক্রবার, ২২ ভাদ্র ১৪৩১, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

না.গঞ্জে সংঘর্ষে হতাহতদের পাশে নেই বিএনপি নেতারা!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২২
না.গঞ্জে সংঘর্ষে হতাহতদের পাশে নেই বিএনপি নেতারা! পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে নিহত শাওন (লালবৃত্ত)

নারায়ণগঞ্জ: বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতদের পাশে নেই দলীয় নেতাকর্মীরা। ঘটনার ৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও শীর্ষস্থানীয় কোনো নেতাকে নিহত বা আহতদের পাশে দেখা যায়নি।

এমন অভিযোগ হতাহতদের স্বজনদের। জানা গেছে, নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান হঠাৎ রণক্ষেত্র বনে গেলে নিহত হন দুজন। এ ছাড়া গুলিতে আহত হন মোহনা টিভির জেলা প্রতিনিধি আজমীর ইসলামসহ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার এ ঘটনার পর বড় কোনো নেতা বিএনপির হতাহত সদস্যদের দেখতে যাননি। স্থানীয়রা তো নয়-ই কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ তাদের খোঁজ নেননি।

মণ্ডলপাড়ায় শতাধিক গুলিবিদ্ধ নেতাকর্মী নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‍্যালির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, সোনারগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানসহ নেতাকর্মীদের লাঠিচার্জ ও টিয়ারগ্যাস দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময় তারা আহত হলে নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশও এ সময় গুলি ছোঁড়ে। এ সময়  এতে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক, বিএনপি-ছাত্রদল-যুবদলের শতাধিক গুলিবিদ্ধ ও মারাত্মক আহত হন।

সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে নগরীর ডিআইটি, মন্ডলপাড়া, দেওভোগ, নিতাইগঞ্জ ও ২ নম্বর রেলগেট এলাকায়। এ সময় সরকারি তোলারাম কলেজের ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক খান সুজন ও শাওন (২১) নামে ছাত্রদল নেতা নিহত হন। শাওন ফতুল্লার এনায়েতনগর ইউনিয়নের নবীনগর পূর্ব গোপালনগরের বাসিন্দা ছিলেন। বিএনপির নেতাদের দাবী, শাওন পুলিশের গুলিতে মারা গেছে।

হতাহত নেতাকর্মীদের দেখতে বিএনপির স্থানীয় বা কেন্দ্রীয় নেতারা দেখতে আসেননি কেন জানতে চাইলে তাদের স্বজনরা কোনো উত্তর দিতে পারেননি। কিন্তু তাদের দাবি, দলের জন্য আহত হওয়ার পর নেতাকর্মীদের আসা উচিৎ।

মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানিয়েছেন, সুজন ও শাওন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। এ ছাড়া তাদের দুই শতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যাবিশিস্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধরা হলেন- সস্তাপুর এলাকার হাজী মহব্বতের ছেলে যুবদল নেতা শাহিন (৪০), শহরের টানবাজার এলাকার মহিবুলের ছেলে জাহাঙ্গীর (৩০), টানবাজারের ফারুকের ছেলে রাজু (২৬), সোনারগাঁওয়ের খেদমত আলীর ছেলে শরীফ (২৫), ফতুল্লার কবিরের ছেলে ইউনুস (৪৩), সিদ্ধিরগঞ্জের মতিউর রহমানের ছেলে সাগর (২২), জিমখানার আব্দুল জব্বারের ছেলে আব্দুস সালাম (৬০), মিজমিজির মো. হাফিজ মিয়ার ছেলে মো. আখতার (৫২), দেওভোগ মিলন শেখের ছেলে স্বর্ণ শিল্পী মুন্না (১৮), দেওভোগ দাতা সড়কের শহীদ মিয়ার ছেলে মো. কাদির (২৭), ২ নম্বর রেলগেট আলমাছ পয়েন্টের মো. ইসহাকের ছেলে শরীফুল ইসলাম (১৯), শহীদনগরের মো. জামালের স্ত্রী শাহনাজ (৫০), হোসাইনীনগরের হানিফ গাজীর ছেলে মো. সবুজ (৩৪), দেওভোগ পানির টাংকির নূর মোহাম্মদের ছেলে মোমেন (৫৫), ২ নম্বর রেলগেটের মোজাম্মেল হকের ছেলে শিহাব (২৫), পাইকপাড়ার মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে শামসুল হক (৫০), বেপারীপাড়ার শাহজাহানের স্ত্রী শিল্পী (৪০), জামাইপাড়া এলাকার মো. মিলনের ছেলে মো. ইব্রাহিম (২৫), ২ নম্বর রেলগেট এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে সিদ্ধিরগঞ্জের মুক্তি গার্মেন্টের শ্রমিক তাজুল ইসলাম (৩০), মাসদাইরের আবুল কালামের ছেলে আশরাফুল (৩২), শহরের করিম মার্কেটের ইউএস হোসিয়ারীর শ্রমিক সোয়াদ হোসেন (৩০), উজ্জল ভৌমিক (২৮), মিন্টু (২৮), সজিব (১৮), বন্দর রূপালী এলাকার মো. হাসেমের ছেলে মো. নাসির (৪০), নিতাইগঞ্জের চিত্তরঞ্জনের ছেলে দীপ্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি গৌতম সাহা (৩৩)।

টিয়ার সেলে অসুস্থরা হলেন- শহরের ডিআইটি এলাকায় অবস্থিত মর্গ্যান স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়শা সুলতানা, লামিয়া, আফসানা মীম, মিমিয়া, রোকেয়া, অষ্ট, শ্রেণির শিক্ষার্থী উম্মে হানী, আখি, উম্মে কুলসুমসহ শতাধিক।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২২
এমআরপি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।