ঢাকা, রবিবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ জুন ২০২৪, ২২ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

ওএমএসের চাল-আটা কিনতে দীর্ঘ লাইন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২২
ওএমএসের চাল-আটা কিনতে দীর্ঘ লাইন

ঢাকা: বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেস্বর) বেলা তখন প্রায় ১১টা। রাজধানীর আজিমপুরের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আবাসনের সামনে তিন শতাধিক নারী-পুরুষ জড়ো হয়েছেন।

সবাই খাদ্য অধিদপ্তরের ওপেন মার্কেট সেলের (ওএমএস) ট্রাকের পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন। ওএমএসের চাল ও আটা কিনতে এ দৃশ্য ছিল আজিমপুর ছাপড়া মসজিদ এলাকায়।

ট্রাকের সামনে নারীদের লাইনটিই ছিল বেশি দীর্ঘ। সেই লাইনে প্রায় ১৮০ জন নারী পণ্য কেনার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। পাশেই আরেকটি লাইনে পুরুষের সংখ্যা ছিল দেড় শতাধিক। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক নারী-পুরুষ জানান, তাদের কেউ কেউ সকাল সাতটা–আটটা থেকে ওএমএসের পণ্যের জন্য অপেক্ষা করছেন। নির্ধারিত ওই স্থানে ট্রাক পৌঁছায় সকাল সাড়ে নয়টার পর। বেলা পৌনে ১১টায় মন্ত্রী গিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধনের পর আনুষ্ঠানিক বিক্রি শুরু হয়।

সেখান থেকে চাল ও আটা কেনেন আজিমপুরের রনি মার্কেট কাঠপট্টি এলাকার বাসিন্দা নাজমা আক্তার। তিনি বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। বাংলানিউজকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে সাতটার দিকে প্রথমে আজিমপুর কবরস্থানের সামনে গিয়ে ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। পরে কাউন্সিলরের লোকজন জানান, ট্রাক আসবে এখানে (ছাপড়া মসজিদের সামনে)। তাই এখানে চলে আসি। ’

নাজমা আক্তার পণ্য কেনার সুযোগ পান বেলা সাড়ে ১১টার পর। তিনি ৫ কেজি চাল ১৫০ টাকা আর ২ কেজির প্যাকেট আটা ৪৩ টাকায় কেনেন। এতে তার খরচ হয় ১৯৩ টাকা।

নাজমা আরও বলেন, বাজার থেকে ৫ কেজি চাল আর ২ কেজি আটা কিনতে কমপক্ষে ৩০০ টাকা লাগত। কিন্তু এখান থেকে কেনার ফলে ১৮০ টাকার মতো সাশ্রয় হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি মোটা চাল ৫৪-৫৫ টাকা এবং খোলা আটা প্রতি কেজি ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। আর প্যাকেট আটা ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

দেখা গেল, ট্রাকের সামনে এসে কোনো লাইন কিংবা শৃঙ্খলা আর নেই। সবাই নিজেদের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি বিক্রেতার দিকে বাড়িয়ে দিচ্ছেন। সবার উদ্দেশ্য আগে পণ্য কেনা। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে নারী-পুরুষ অনেককে ঘেমে ভিজে যেতে দেখা গেছে। নারীদের লাইনে বিশৃঙ্খলা ছিল বেশি।

রাবেয়া খাতুন নামে এক নারী চাল ও আটা কিনে বলেন, ‘রবি ও মঙ্গলবার—দুইদিন লাইনে দাঁড়িয়েও কিনতে পারিনি। আজকে সকাল সাতটা থেকে এখানে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। ’

প্রায় পৌনে পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষার পর পণ্য কিনতে পেরেছেন বলেও জানান এই নারী।

বেলা পৌনে ১১টার দিকে সেখানে গিয়ে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, দেশে ওএমএসের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ২০ লাখ টন চাল মজুত আছে। প্রতি মাসে তিন লাখ টন চাল বিতরণ করা হবে।

সামনে সরকার আরও কিছু চাল ও গম আমদানি করবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষ সাশ্রয়ী মূল্যে চাল কিনতে পারবেন। কোনো অসাধু ব্যবসায়ীকে চাল নিয়ে চালবাজি করতে দেওয়া হবে না। কাউকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হবে না। চালের বাজার নিয়মিত তদারক করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মহানগরে ৫০টি কেন্দ্রে ট্রাক সেলের মাধ্যমে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৩ দশমিক ৫ মেট্রিক টন বা ৩ হাজার ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকা মহানগরের আরও ১৪৭টি দোকানে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। এসব দোকানে বরাদ্দ রয়েছে ২ মেট্রিক টন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২২
এইচএমএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।