ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে হাঁটু সমান কাদা! 

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২
সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে হাঁটু সমান কাদা! 

ফরিদপুর: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের রুদ্রবানা গ্রামের চরপাড়ার প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। সামান্য বৃষ্টি হলেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায় এ রাস্তাটি।

বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান কাঁদা-পানির সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পানি ও মাটি মিশে কাদায় একাকার হয়ে যায় পুরো রাস্তা। এতে বিপাকে পড়েন ওই এলাকার শত শত মানুষ। এত বছরেও কাঁচা রাস্তাটিতে ইটের ছোঁয়া না লাগায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।  

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার রুদ্রবানা গ্রামের ‘চরপাড়া তিন রাস্তার মোড় থেকে হাদী ছিলামতের বাড়ি পর্যন্ত’ প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিকল্প কোনো পথের ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু সমান কাদা মাড়িয়েই চলাচল করতে হয় স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, বৃদ্ধসহ অন্যান্য সবার। সারা বছরের প্রায় ৫/৬ মাস ভোগান্তির শিকার হতে হয় গ্রামবাসীদের।  

বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হয় তাদের। এই এলাকার মানুষের আতঙ্ক ও ভয়ের আরেক নাম বৃষ্টি। বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জমে হাঁটু সমান কাদা। কাদার জন্য গ্রামের এ রাস্তায় কোনো অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, ভ্যান-রিকশা ঢোকে না। মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলে তো দূরে থাক, খালি পায়ে হেঁটে চলাচল করাও দায়। বৃষ্টির দিনে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্সও এখানে ঢুকতে পারে না। অনেক সময় কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে কাঁধে করে কর্দমাক্ত রাস্তা পার করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইমরান হোসাইন, মো. ইউনুস আলী, মো. আকরাম শরীফ বলেন, আমাদের দুঃখ-কষ্ট, দুর্ভোগের কথা কেউ শুনে না। আমাদের ভোগান্তির কথা বলে বোঝানো যাবে না, নিজ চোখে দেখতে হবে। আমরা ঠিকমতো হাটবাজারে যেতে পারি না। কৃষিপণ্য সময় মতো বিক্রি করতে পারি না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা কষ্ট করে স্কুল-কলেজে যায়। বিশেষ করে বৃষ্টি-কাদার দিনে জুতা স্যান্ডেল হাতে নিয়ে দুই কিলোমিটার কাদা মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়। আর কত কাল এ কষ্ট করতে হবে কে জানে।

ওই গ্রামের মো. আব্দুল গাফফার মোল্লা, মো. বাবুল হোসেন বলেন, এলাকায় প্রচুর কৃষি ফসল উৎপাদন হয়। কিন্তু রাস্তার বেহাল দশার কারণে কৃষকরা সময়মতো পণ্য বাজারজাত করতে পারেন না। ফলে সফলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয়। সামান্য বৃষ্টি হতে না হতেই রাস্তার পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে কি করে চলাচল করব আমরা কিছুই বুঝে পারি না। শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এখানে বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী আছে তাদের এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে যেতে হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোনো ফল হয়নি। তাদের কাছে অনুরোধ আমাদের এই রাস্তার দিকে একটু নজর দেওয়ার জন্য।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. বাবর আলী বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে কাঁচা। তারপর আবার নতুন মাটি দেওয়াতে বৃষ্টির কারণে কাদা হয়ে গেছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানানো হয়েছে। আশাকরি খু্ব তাড়াতাড়ি এর একটা সমাধান হবে।

বানা ইউনিয়ন (ইউপি) পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশিদ শরীফের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগর চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।  

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান বলেন, সরেজমিনে গিয়ে রাস্তাটি পরিদর্শন করে আশু সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।