ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সিগারেটের আগুন ও সুঁই দিয়ে কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
সিগারেটের আগুন ও সুঁই দিয়ে কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে চুরির মিথ্যা অপবাধে জাকির হোসেন (১৪) নামে এক কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তাকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে শরীরে সিগারেটের আগুনের চ্যাকা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া শিশুটির হাতের আঙুলে সুঁই ঢুকিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। ঘটনার ৪ দিনেও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসতে দেওয়া হয়নি শিশুটিকে।  

ভুক্তভোগী কিশোর জাকির সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের মধ্য চররমনী মোহন গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে।  

এ ঘটনায় কিশোরের বাবা আলমগীর বাদি হয়ে ৬ জনকে আসামি করে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী (সদর) আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

আদালতের বিচারক তারেক আজিজ মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর থানাকে নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী মঞ্জুর আহমেদ তিতু।  

তিনি বলেন, গত ২৬ অক্টোবর জাকিরের বাবা আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আসামিরা হলেন- সদর উপজেলার চররমনী ইউনিয়নের চর রমনী গ্রামের মৃত আবদুর রশিদের ছেলে গোরফান ও তার ছেলে দেলোয়ার হোসেন, বাদশা মিয়ার ছেলে মনির হোসেন, আবুল কালাম ফরাজির ছেলে মনির, কালাম ভূঁইয়ার ছেলে মাকছুদ আলম ও মৃত মজিবুল হকের ছেলে শাহ আলম।  

মামলা সূত্রে জানা যায়, জাকিরের বাবা আলমগীরের সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে আসামিদের পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধের জেরে গত ১৮ অক্টোবর সকালে ডেকে নিয়ে অভিযুক্ত শাহ আলমের ঘরে শিশু জাকিরকে চেয়ারের সঙ্গে হাত-পা বেধে বেধড়ক মারধর করে দেলোয়ার, গোরফান, মনির হোসেন, মনির, মাকছুদ ও শাহ আলম। এসময় অভিযুক্ত দেলোয়ার ও তার বাবা গোরফান শিশু জাকিরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্লাস দিয়ে টেনে সিগারেটের আগুনে ক্ষত-বিক্ষত করে বর্বর নির্যাতন চালায়। এছাড়া তার হাতের আঙ্গুলে সুঁই ঢুকিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় তার চোখে মরিচের গুড়া দিয়ে সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়।

পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ঘটনাস্থল থেকে জাকিরকে উদ্ধার করলেও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনতে পারেনি পরিবারের লোকজন। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে এবং নির্যাতনের আলামত নষ্ট করতে তাকে চিকিৎসার জন্য বাড়ি থেকে হাসপাতালে আনতে দেয়নি অভিযুক্তরা।  

পরে ঘটনার ৫দিনের মাথায় জাকির গোপনে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়।

জাকিরের বাবা আলমগীর হোসেন জানান, নির্যাতনের পর চিকিৎসা ছাড়াই ৪ দিন বাড়িতে অরুদ্ধ করে রেখেছিল তারা। এখন মামলা করায় আমাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এমনকি আমার ছেলের হাতের মোবাইল ফোনটিও নিয়ে গেছে আসামিরা।  

এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের মন্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।  

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ) মোহাম্মদ মোসলেহ্ উদ্দিন জানান, আদালত থেকে মামলাটি তদন্তের জন্য থানায় দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সঠিক তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০০২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।