ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

অনুবাদের ক্ষেত্রে ভাষা নিয়ে যত বিড়ম্বনা চারুকলা-কারুকলায় হয় না: অধ্যাপক মোহীত

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
অনুবাদের ক্ষেত্রে ভাষা নিয়ে যত বিড়ম্বনা চারুকলা-কারুকলায় হয় না: অধ্যাপক মোহীত

ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক মোহীত উল আলম বলেছেন, অনুবাদের ক্ষেত্রে ভাষা নিয়ে যত বিড়ম্বনা হয়, চারুকলা ও কারুকলায় তা হয় না। এ বিড়ম্বনা নিয়েই অনুবাদকদের কাজ চালিয়ে যেতে হয় নিজের ভাষা, সংস্কৃতি ও সমাজকে সমৃদ্ধ করার জন্য।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউটে গ্যালারি হলে আয়োজিত ‘উজান বইযাত্রা’য় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক মোহীত উল আলম বলেন, জীবনের সবক্ষেত্রে সবসময় আমরা কিন্তু অনুবাদ করছি। আমরা যা দেখছি, যেসব অভিজ্ঞতা হয়, প্রকৃতি দেখছি, মানুষ দেখছি, এগুলো যখন আমরা ভাবে প্রকাশ করি, কথোপকথনে বলি, গল্পে বলি, তখন কিন্তু আমরা অনুবাদই করছি, অনেক সময় তা আমরা আক্ষরিক অর্থে বলছি বা রূপক অর্থে বলছি, কিন্তু এগুলো আমরা অনুবাদই করছি।

প্রকাশনা সংস্থা উজানের অনুবাদ বই কোরিয়ার গল্প ও কোরিয়ার কবিতা নিয়ে উজান বইযাত্রার এ আয়োজনে তিনি বলেন, কোরিয়ার সাহিত্য যে বাংলাভাষায় এভাবে উপস্থিত করা হয়েছে সেজন্য তাদের ধন্যবাদ। প্রথম দিকের কাজ হিসেবে যা হয়েছে তা আগামীতে আরও সফলভাবে উপস্থাপিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ উপাচার্য।

আলোচনায় বিশিষ্ট অনুবাদক ও প্রাবন্ধিক আলম খোরশেদ বই দুটির অনুবাদ ও সম্পাদনার কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরে আগামী সংস্করণে তা সংশোধন করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। বইযাত্রার এ ধারণা আন্তর্জাতিক অঙ্গণে প্রচলিত থাকলেও বাংলাদেশে এই ধরনের আয়োজনের জন্য প্রকাশনা সংস্থা উজানকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

কবি ও প্রাবন্ধিক সেলিনা শেলী উজানের অনুবাদের বই দুটির মাধ্যমে বাংলাভাষার মানুষের কোরিয়ার সাহিত্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানার সুযোগ হলো বলে জানান। কোরিয়ার সাহিত্যে নারীদের যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তার সাথে বাংলাদেশের নারীদের অবস্থা ও বঞ্চনার নানা দিকের মিল দেখা যায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বই দুটির আলোচনা করতে গিয়ে বাংলাভাষা ও বাংলাদেশে অনুবাদের সংকট ও সম্ভাবনার নানা দিক তুলে ধরেন বিশিষ্ট অনুবাদক ও ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষক জি এইচ হাবীব। তিনি মূল ভাষা থেকে বাংলাভাষায় অনুবাদের চর্চা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে জোরালো ও সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

উজান বইযাত্রা ও বইমেলার এই আয়োজনে আলোচনার পাশাপাশি ছিল স্বরচিত কবিতা পাঠ এবং কোরিয়ার কবিতার আবৃত্তি। চট্টগ্রামের কবিদের মধ্যে স্বরচিত কবিতা পড়েন কবি নাজিমুদ্দীন শ্যামল, আকতারী ইসলাম ও রিমঝিম আহমেদ।

কোরিয়ার কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী রাশেদ হাসান ও সজল চৌধুরী। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কবি মনিরুল মনির। বাংলাভাষায় কোরিয়ার সাহিত্যেও উল্লেখযোগ্য অনুবাদ কোরিয়ার গল্প ও কোরিয়ার কবিতা বই নিয়ে প্রকাশনা সংস্থা উজানের দ্বিতীয় পর্বের এই পরিভ্রমণে উপস্থিত ছিলেন বন্দরনগরী চট্টগ্রামের শিল্পসাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রিয়জন ও চেনামুখগুলো।

উজান বইযাত্রা ও বইমেলার ধারবাহিক আয়োজন এর আগে অনুষ্ঠিত হয়েছে ময়মনসিংহে। আগামী ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার একই ধরনের আয়োজন থাকছে ঢাকায় সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।