ঢাকা: বিদেশি নাগরিকদের পরিচয় ব্যবহার করে ভুয়া পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া একটি প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। গ্রেফতার প্রতারকরা হলেন—ফয়সাল শেখ (৩০) ও রাজ মোহাম্মদ শেখ (৩১)।
সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানী হাতিরঝিল থানাধীন মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৯২ লাখ টাকা, ৫৯টি মোবাইল ফোন, ১টি পকেট রাউটার ও ২টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, হাতিরঝিল থানাধীন মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় কতিপয় প্রতারক সদস্য বিদেশিদের পরিচয় চুরি করে পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে আসছে, যা বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত নয়। গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে এক পর্যায়ে প্রতারকদের গ্রেফতার করে।
প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে হারুন-অর-রশিদ বলেন, গ্রেফতার আসামিরা পারস্পরিক যোগসাজশে ভুয়া লিংক ব্যবহার করে বিদেশিদের তথ্য চুরি করতেন। এরপর সেই তথ্য ব্যবহার করে পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে আসছিলেন। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার যে আয় করেন তা সহজে ডলার থেকে টাকায় রূপান্তর করতে পারেন না। তারা তখন গ্রেফতার আসামিদের মাধ্যমে সস্তায় ডলার পেপাল অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেন।
গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান আরও বলেন, গ্রেফতার আসামিরা পেপাল অ্যাকাউন্টের ডলার জুয়াড়িদের কাছে সস্তায় বিক্রি করে দেন। ১১২ টাকার ডলার ৮৫ টাকায় কিনে জুয়াড়িরা জুয়ায় ডলার বিনিয়োগ করছেন। এতে করে ফ্রিল্যান্সাররা যেমন ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না, তেমনি বাংলাদেশ সরকারও রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে হারুন-অর-রশিদ বলেন, বিদেশি আইডেন্টিটি চুরি করে তা ব্যবহার তো অবৈধ। পেপাল বাংলাদেশে ব্যবহারও অবৈধ। গ্রেফতার ফয়সাল শেখ ৫৯টি মোবাইল ব্যবহার করেন। একেক মোবাইলে একেক লেনদেন হতো, যা একরকম ডিজিটাল হুন্ডি।
তিনি বলেন, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় একটি মামলা হয়েছে। তাদের আমরা রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠাবো। তাদের মতো আরও কারা বাংলাদেশে বসে বিদেশি আইডেন্টিটি চুরি করে পেপাল অ্যাকাউন্ট ব্যবহারে ডিজিটাল হুন্ডির ব্যবসা করছেন, তা জানার চেষ্টা করা হবে। কিছু নাম ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি। আমরা সবাইকে আইনের আওতায় আনবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২২
এসজেএ/এমজেএফ