ঢাকা, সোমবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ জুন ২০২৪, ০৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

পাখিসহ আটক শিকারিকে জরিমানা

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২২
পাখিসহ আটক শিকারিকে জরিমানা

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ‘চিহ্নিত পাখি শিকারি’ খাজা মিয়াকে আটক করেছে বনবিভাগ।  

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সকালে উপজেলার জেটি রোডের পশ্চিম ভাড়াউড়া এলাকা থেকে বস্তায় করে পাখি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বনবিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা বিভাগের সদস্যরা তাকে আটক করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সন্দ্বীপ তালুকদার, মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম, র‌্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) মো. মুনিরুজ্জামানসহ বনবিভাগের সদস্যরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জীববৈচিত্র্য রক্ষা বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মিতা ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পাখি শিকার করেন খাজা মিয়া। প্রতিদিনের মতো তিনি হাইল হাওর থেকে পাখি শিকার করে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় তাকে আটক করা হয়। আটকের পর তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে পাখিগুলোকে অবমুক্ত করা হয়েছে। পাখিগুলো হলো- পাতি শরালি, কোড়া, হট-টিটি। পাতি-চ্যাগা নামক পাখিটি বস্তা ভেতর মারা যাওয়ায় তাকে মাটিতে পুতে ফেলা হয়েছে।  

রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, খাজা মিয়া হাইল হাওর এলাকায় পাখি ধরার জাল দিয়ে নানা প্রজাতির পাখি ধরে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধন করছেন। এমন গোপন খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।  

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে একজন চিহ্নিত পাখি শিকারিকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। তবে তার জরিমানার অর্থটা আরও একটু বেশিসহ তাকে কারাভোগের ব্যবস্থা করা হলে আরও ভালো হতো।

বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ এর ৩৮ ধারার (২) এ উল্লেখ রয়েছে কোনো ব্যক্তি তফসিল ১ ও ২ এ উল্লেখিত কোনো পাখি বা পরিযায়ী পাখির দেহের মাংস সংগ্রহ করলে বা ক্রয়বিক্রয় করলে বা পরিবহন করলে তিনি অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন এবং উক্ত অপরাধের জন্য তাকে সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে তাকে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যেতে পারে।  

এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট সন্দ্বীপ তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, পাখি শিকারির মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে মাত্র তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আমরা খোঁজখবর রাখবো পরবর্তীতে তিনি যদি আবারও এ অপরাধ করে তার দণ্ড বাড়িয়ে দেওয়া হবে। অর্থদণ্ড বা কারাভোগের চেয়েও বড় বিষয় হলো লোকটি পাখি শিকার ছেড়ে সুস্থ ও সুন্দর জীবনে ফিরে আসুক।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২২
বিবিবি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।