ঢাকা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বিপ্লবের নাম করে ১৯৭৫ সালে হত্যা করলো। ১৯৭৭ সালে জাপানি বিমান ছিনতাই হলো, পরে প্রচার করলো ক্যু হয়েছে।
সোমবার (৭ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গ আয়োজিত ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’র আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমি মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফের অধীনে ২ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেছি ঢাকা জেলার পশ্চিমাংশে। আমাদের তখন (একাত্তরে) মেলাঘর ক্যাম্পে কান্নার রোল পড়েছিল যে খালেদ মোশাররফ মারা গিয়েছেন। কিন্তু না, সেদিন তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ দেননি। প্রাণ দিলেন ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর।
সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে, ৭৭ সালের ২ অক্টোবর ক্যু ঘটিয়ে হত্যা করেছে। জিয়াউর রহমান কেন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করলো, ৭ নভেম্বরে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করলো। কারণ জিয়া পাকিস্তানের পক্ষ থেকে অনুপ্রবেশকারী। আমাদের ভেতরে থেকে পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে কাজ করেছেন। জিয়া কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন, কোন যুদ্ধের গৌরবগাঁথা পাওয়া যায়? যায় না। ’
৭৫ সালের হত্যাকাণ্ড নিয়ে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ৭৫ সালের ঘটনায় ট্রথ কমিশন করতে হবে, সত্য উদঘাটিত করতে হবে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে তাদের রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। এ দল নিষিদ্ধ করতে হবে। এ শক্তিকে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, খুনি জিয়া একাত্তরে পশ্চিম বাংলায় গিয়েছিলেন পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে। যুদ্ধের সময় তাকে সেক্টর কমান্ডারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরে কোনো বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে খুনি জিয়ার নামে সড়ক ছিল যখন কর্তৃপক্ষ জানতে পারে তিনি ঠাণ্ডা মাথার খুনি তখন তার নাম বাদ দেওয়া হয়। জিয়ার তথাকথিত কবরও সংসদ ভবন এলাকা থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।
সভায় বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি ও ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গের সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক বলেন, আপনাদের পরিবারকে হয়তো ফিরিয়ে দিতে পারবো না। কিন্তু সেসব হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর ও ৭৭ সালের ২ অক্টোবর শহীদ পরিবারের সন্তানদের পক্ষে সভায় আরও বক্তব্য দেন মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম- এর কন্যা মাহজাবিন খালেদ, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীর বিক্রমের কন্যা নাহিদ ইজাহার খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সার্জেন্ট সাঈদুর রহমানের সন্তান কামরুজ্জামান মিয়া লেলিন, শহীদ সার্জেন্ট দেলোয়ার হোসেনের সন্তান নুরে আলম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২২
এনবি/আরআইএস