ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

চলন্ত মোটরসাইকেল হঠাৎ টেনে ধরলো পুলিশ, ভিডিও ভাইরাল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০২২
চলন্ত মোটরসাইকেল হঠাৎ টেনে ধরলো পুলিশ, ভিডিও ভাইরাল

রাজশাহী: রাজশাহীতে চলন্ত মোটরসাইকেল হঠাৎ টেনে ধরে পুলিশ। এতে ওই মোটরসাইকেলে থাকা দম্পতি রাস্তায় পড়ে যান।

আহত হওয়ায় তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।  

ঘটনাটি কয়েক দিন আগের হলেও সেই ভিডিও মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

গত শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড় সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ওই মোটরসাইকেলে থাকা চালকের নাম শরিফুল ইসলাম (৩৫)। পেছনে ছিলেন তার স্ত্রী রশিদা বেগম (৩২)। পড়ে গিয়ে মাথা ও কোমরে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন তিনি। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ মোটরসাইকলটি জব্দ করলেও পরে কাগজপত্র দেখে তা ছেড়ে দিয়েছে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়- মহানগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ের জনাকীর্ণ রাস্তা দিয়ে ওই দম্পতি মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন। সামনে থাকা দুজন পুলিশ সদস্য হঠাৎই মোটরসাইকেলটি টেনে ধরেন। এতে তারা দুজনেই পড়ে যান।

শরিফুল ইসলাম জানান, তাদের কাছে ওইদিন কাগজপত্র সবই ছিল কিন্তু সিঅ্যান্ডবির মোড় পয়েন্টে ট্রাফিক সার্জেন্ট যে তাদেরকে থামতে বলেছেন তারা সেটি খেয়াল করেননি। যে কারণে তারা চলে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎ দুই পুলিশ সদস্য মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা তার স্ত্রীর হাত টেনে ধরেন। এ ঘটনায় পড়ে গিয়ে তার স্ত্রী এবং তিনি আহত হন। এর মধ্যে তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নেন এবং ওই দিনই তার স্ত্রীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসা না পেয়ে তিনি তাকে বাসায় নিয়ে আসেন। বর্তমানে বাইরেই তার চিকিৎসা করাচ্ছেন। এরই মধ্যে তার স্ত্রীর চিকিৎসায় প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে শরিফুল ইসলাম বলেন, পরদিন শনিবার তাদের মহানগর ট্রাফিক কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল। সেখানে কাগজপত্র দেখে তার জব্দকৃত মোটরসাইকেল ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই সময় সেখানে ঘটনার দিন কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট সাবিহা ও রাজপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক আল-মামুনও ছিলেন। ট্রাফিকের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের দুইজনকে এই ঘটনার জন্য চিকিৎসা খরচ দেওয়ার কথা বলে দেন। তারাও সমস্ত চিকিৎসার টাকা দিতে রাজি হন। কিন্তু পরে ওই দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা আর তাদেরকে কোনো খরচ দেননি। তিনি পেশায় অটো রিকশাচালক। তাই এই ঘটনায় স্ত্রীকে নিয়ে এখন চরম অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন বলে জানান।

যদিও তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগ- ওই রাস্তার আগের পয়েন্টেই তাদের মোটরসাইকেল থামাতে সংকেত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা না থেমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। যে কারণে কিছু দূরে থাকা অপর দুই পুলিশ সদস্য তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করলে তারা পড়ে যান।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার অনির্বাণ চাকমা বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঅ্যান্ডবি মোড়ে কয়েকজন ফোর্স নিয়ে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র যাচাই করছিলেন আরএমপির ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট সাবিহা আক্তার। এ সময় শরিফুল ইসলামকে থামার সংকেত দেওয়া হয়। কিন্তু চলে যাচ্ছিলেন শরিফুল। এ সময় সার্জেন্ট সাবিহা তার সঙ্গে থাকা রাজপাড়া থানার দুজন কনস্টেবলকে শরিফুলকে ধরার জন্য বলেন। তখনই একজন কনস্টেবল থামানোর চেষ্টা করলে তারা পড়ে আহত হন।  

এ সময় শরিফুল সাবিহার সঙ্গে কথাকাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। শরিফুল ক্ষুব্ধ হয়ে কাগজপত্র না দেখানোয় মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়। পরে আহত দম্পতি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে যান। ঘটনা জানতে পেরে তারা হাসপাতালে দেখতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শরিফুল জানিয়েছেন যে তারা চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। পরে তাদেরকে ডেকে তাৎক্ষণিক একটি সমাধান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তারা সেই দিনের ঘটনাটি বর্তমানে তদন্ত করে দেখছেন বলেও জানান- এই পুলিশ কর্মকর্তা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০২২
এসএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।