ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

এসকোবার থেকে এল চ্যাপো, মাদক মাফিয়াদের খরচের হাত যেমন

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২২
এসকোবার থেকে এল চ্যাপো, মাদক মাফিয়াদের খরচের হাত যেমন

দুনিয়াজুড়ে মাদকের কারবার করে অনেকে বেশ প্রতিপত্তি অর্জন করেছেন। তাদের অনেকে আবার নানাভাবে নামও কামিয়েছেন।

যেমন তাদের আয়, তেমনি ব্যয়। অনেকে অদ্ভুত শখের পেছনে টাকা ঢালতেন। চলুন পাঠক জেনে আসা যাক নামকরা সাত মাদক মাফিয়ার খরচের হাত সম্পর্কে।

০১. আমাদো ক্যারিল্লো ফুয়েন্তেস

এই মাদক মাফিয়া ছিলেন ম্যাক্সিকোর জুয়ারেজ কারটেল সংগঠনের নেতা। তার ২৭টি ব্যক্তিগত জেট বিমান ছিল। তিনি পরিচিত ছিলেন লর্ড অব দ্য স্কাইস বা আকাশের প্রভু নামে।  
ফুয়েন্তেস ৭২৭এস বোয়িং সিরিজের উড়োজাহাজ বহর পর্যন্ত কিনেছিলেন। এসব উড়োজাহাজ যুক্তরাষ্ট্রে কোকেন ব্যবহারে ব্যবহৃত হতো।  

০২. ইসমায়েল 'এল মায়ো' জাম্বাদা

জাম্বাদা সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্র সিনালোয়া কার্টেলের বর্তমান সদস্য।  

এই মাদক মাফিয়া ঘুষে তিনি অনেক বিনিয়োগ করেছেন। অসংখ্য ফ্রন্টের মাধ্যমে তিনি মানি লন্ডারিং করেছেন।  

আয়ের অর্থ দিয়ে জাম্বাদা একটি কিন্ডারগার্টেন, গবাদপশুর খামার ও একটি অ্যাকুয়াটিক পার্কের মালিক বনে গেছেন। তার সান্তা মনিকা ব্র্যান্ডের দুধ মেক্সিকোর সিনালোয়া রাজ্যের সর্বত্র বিক্রি হয়।  

০৩. ম্যানুয়েল নরিয়েগা

মাদক কারবারের অর্থ নরিয়েগা ঢেলেছেন একজন একনায়ক হয়ে উঠতে। মাদক পাচারের মাধ্যমে তিনি যেন ভাগ্যকেই বদলে ফেলে সৌভাগ্যে রূপান্তর করেছেন এবং বিপুল অর্থ অর্জন করেছেন।

এসব তিনি করেছেন পানামা ইন্টেলিজেন্সের প্রধান হওয়ার পর। পরে তিনি সরকার উৎখাত করেন। বিদ্রোহীদের সশস্ত্র করতে তিনি অর্থ খরচ করতেন। ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি পানামা শাসন করেন। পরে যুক্তরাষ্ট্র তাকে সরিয়ে দেয়।  

০৪. গ্রিসেল্ডা ব্ল্যাঙ্কো

ব্ল্যাঙ্কো পরিচিত ছিলেন ব্ল্যাক উইডো বা কোকেন গডমাদার নামে। কলম্বিয়ার কুখ্যাত মাদক চক্র মেদেলিন কার্টেলের সহযোগী ছিলেন। বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি খরচ করেছেন বিখ্যাত নারীদের কাছ থেকে মূল্যবান বস্তু সংগ্রহে।   

এই মাদক মাফিয়া ইভা পেরোনের মুক্তা পর্যন্ত সংগ্রহ করেছিলেন। ইংল্যান্ডের রানির ব্যবহার করা চায়ের কাপের সেটও তার সংগ্রহে ছিল।  

০৫. পাবলো এসকোবার 

এই মাফিয়া নিজের জন্য ৬৩ মিলিয়ন ডলার খরচ করে একটি বাগানবাড়ি তৈরি করেছিলেন। কলম্বিয়ায় পুয়ের্তো ত্রিউনফোতে হ্যাসিয়েন্দা নাপোলিস নামের ওই বাড়ির আয়তন সাত হাজার একর।  

এসকোবারের বাগানবাড়ির মধ্যে ছিল ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানা। এতে ছলে হাতি, জিরাফ ও জলহস্তী। এ ছাড়া একটি ফুটবলমাঠ ও ষাঁড়ের লড়াইয়ের স্থানও এর মধ্যে ছিল।  

বাগানবাড়িটিতে কৃত্রিম একটি হ্রদ, টেনিস কোর্ট এবং একটি ডাইনোসোরের মূর্তিও ছিল। এই সম্পত্তিতে এসকোবারের একটি ব্যক্তিগত এয়ারস্ট্রিপও ছিল। তার বহরে ১৪২টি উড়োজাহাজ, ২০টি হেলিকপ্টার, ৩২টি নৌকা ও দুইটি সাবমেরিন ছিল।

০৬. এল চ্যাপো 

এল চ্যাপো গুজম্যান ছিলেন মাদকচক্র সিনালোয়া কার্টেলের প্রধান। বিপুল অর্থ তিনি কামিয়েছেন এই কারবার থেকে।

খেতে গিয়ে পুরো রেস্টুরেন্ট দখল করে নিতেন এল চ্যাপো। তিনি বাইরে খেতে পছন্দ করতেন। তবে কেউ দেখুক তা পছন্দ করতেন না।  

রেস্টুরেন্টে তিনি যেতেন ছোট একটি বাহিনী নিয়ে। রেস্টুরেন্টে গিয়ে সবার ফোন তিনি নিয়ে নিতেন। তার খাওয়ার সময় কেউ বাইরে যেতে পারতেন না। তার খাওয়া শেষ হলেই শুধুমাত্র যাওয়ার অনুমতি ছিল। পরে তিনি সবার বিল পরিশোধের পাশাপাশি ফোনগুলোও দিয়ে দিতেন।

০৭. নিকি বার্নেস

নিকি বার্নেস ১৯৭০ এর দশকে হারলেমের হেরোইন ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। ১৯৭৭ সালে তিনি নিউইয়র্ক টাইমসের প্রচ্ছদে জায়গা পেয়েছিলেন। তিনি চাননি তার মুখের ছবি ব্যবহার করা হোক।  

বার্নেসের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট কার্টার। পরে তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। তার কাছে ছিল ২০০টি স্যুট, ১০০ জোড়া জুতা, ৫০টি ফুল লেন্থ লেদার কোট।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২২
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।