এটি সন্তানদের জন্য মনস্তাত্ত্বিক ক্ষতির অন্যতম কারণ বলে বিবেচিত হলেও রোধের উপায় জানা নেই বাবা-মায়েদের। আবার ক্ষুদে ব্যবহারকারীদের তা থেকে বিরত রাখাও যাচ্ছে না।
এ জটিলতা নিরসনে এগিয়ে এসেছে খোদ ফেসবুক কর্তৃপক্ষই। তাদের দীর্ঘ পরিকল্পনার ফসল হিসেবে এবার বৈধভাবেই ক্ষতিমুক্ত অ্যাকাউন্ট পরিচালনার সুযোগ পাচ্ছে ছোটরা। তবে সেজন্য অবশ্যই বাবা-মায়ের অনুমতি থাকতে হবে।
শিশু ব্যবহারকারীদের জন্য তাই সোমবার (০৪ ডিসেম্বর) ‘ম্যাসেঞ্জার কিডস্’ অ্যাপস্ চালু করেছে ফেসবুক। প্রথমেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপলের আইওএস অপারেটিং সিস্টেমে পাওয়া যাচ্ছে অ্যাপস্টি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির পরিকল্পিত প্রথম নেটওয়ার্কটি এমনভাবে তৈরি, যা ব্যবহারের আগে বাবা-মায়ের অনুমোদনের দরকার হবে।
যদি একজন শিশু ফেসবুকে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে এটি একটি নতুন অ্যাকাউন্ট অকারেই হবে। কিন্তু ম্যাসেজিং অ্যাপস্টির সরল-শর্তাবদ্ধ সংস্করণে সংরক্ষিত ছোটদের তথ্য বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহৃত হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কোম্পানিটি।
ফেসবুক জানিয়েছে, যদি দু’জন ছেলে/মেয়ে ম্যাসেঞ্জার অ্যাপস্টির মাধ্যমে বন্ধু হতে চায়, তবে সে বন্ধুত্বকে প্রত্যেক সন্তানের বাবা-মায়ের দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে। নিরাপত্তা একবার নিশ্চিত হয়ে গেলে বন্ধুরা লাইভ ভিডিও চ্যাট করতে এবং একে অন্যকে ছবি ও পাঠ্য পাঠাতে পারবে।
‘সেখানে বাচ্চাদের উপযুক্ত এবং বিশেষভাবে নির্বাচিত জিআইএফ, ফ্রেম, স্টিকার, মাস্ক ও অঙ্কন সরঞ্জামের লাইব্রেরি থাকবে, যেগুলো সুসজ্জিতভাবে তাদের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করতে দেবে’- বলেন ম্যাসেঞ্জার কিডসের প্রোডাক্ট ম্যানেজার ল্যাওন চেং।
অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রাপ্তবয়স্করা অ্যাপস্টির মাধ্যমে শিশুদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারবেন। যদিও তারা সাধারণ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমেও সন্তানদের বার্তাগুলো পাবেন।
ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার শিশুটির নাম, বার্তাগুলোর ভাষ্য এবং অ্যাপ্লিকেশানটি কিভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে- এর সাধারণ তথ্য ও সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে। তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে সেই তথ্য শেয়ার করবে, যার মধ্যে শিশু অধিকার ও অনলাইন গোপনীয়তা রক্ষা এবং তথ্য সুরক্ষার নীতিগুলো অবশ্যই প্রতিপালিত হবে।
প্রোডাক্ট ম্যানেজার ল্যাওন চেং বলেন, ‘বাবা-মায়েরা ক্রমাগতভাবে তাদের সন্তানদেরকে ট্যাবলেট ও স্মার্টফোন ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছেন। কিন্তু বাচ্চারা কিভাবে সেগুলো ব্যবহার করে এবং কোন অ্যাপ্লিকেশানগুলো উপযুক্ত, তা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন ও উদ্বেগের বিষয় থাকে’।
‘তাই যখন আমরা বাবা-মায়ের সঙ্গে গবেষণা ও কথোপকথনের সময় সরাসরি বাবা-মায়েদের কাছ থেকে সরাসরি অ্যাপসের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে শুনেছি। আমরা জানতাম যে, যারা এটির ব্যবহার করবে, তাদের পাশাপাশি অভিভাবকদের জন্যও এটির বিকাশ করতে হবে। সেইসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের জন্যও, যারা আমাদের চিন্তা-ভাবনাকে সহায়তা করতে পারেন’।
মা-বাবাদের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী জেমস স্টেইয়ার বলেন, ‘আপনাদের বিভিন্ন উদ্বেগ দূর করতে সাবধানতার সঙ্গে ফেসবুকের ব্লগপোস্টটির নকশা করা হয়েছে এবং বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন শিশু সুরক্ষা সংস্থাগুলোর মতামতও নেওয়া হয়েছে। যেহেতু বাচ্চারা সামাজিক নেটওয়ার্কগুলো ব্যবহার করছে, তাই আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে, এটি নিরাপদ ও নিয়মিত নিরীক্ষণ করা হয়’।
‘১৩ বছরের কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের অ্যাপ্লিকেশনটি তাই একটি চমৎকার ধারণা, যেখানে তাদেরকে নিশ্চিন্তে সাইন-আপ করতে দিতে পারেন’।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৭
এএসআর