ডাচ পৌরসভা বার্লি-নাসাওয়ের ভেতরে প্রায় ৩০টি বেলজিয়ান ছিটমহলের অবস্থান, যার ভেতরে আবার বার্লি-হর্টোগ অঞলে ২০টির বেশি ডাচ ছিটমহলও রয়েছে। ছিটমহলগুলোর বেশিরভাগ ভবন সীমান্তে অর্ধেক বিভক্ত থাকায় একই ভবনের কিছু ঘর বেলজিয়ামের আর কিছু ঘর নেদারল্যান্ডের।
ফলে প্রায় ৯ হাজার বাসিন্দার অনেকেই ঘর শেয়ার করেন, যারা আদতে দু’টি পৃথক দেশের নাগরিক। যেমন, বার্লি পর্যটন দফতরের চেয়ারম্যান উইলম ভ্যান গৌল ডাচ হলেও তার মা বেলজিয়ান।
নাগরিকদের তিন চতুর্থাংশ ডাচ পাসপোর্টধারী এবং ভূমির বৃহৎ অংশও বার্লি-নাসাও পৌরসভার অন্তর্গত। যদিও মানচিত্রে ছিটমহলগুলো অ্যামিবার মতো দেখতে, যার মূল অংশ আবার নেদারল্যান্ডের কেন্দ্রস্থলের ভেতরে।
এমনকি বার্লি-নাসাউ ও বার্লি-হর্টোগের অনেক অধিবাসীর দ্বৈত নাগরিকত্ব এবং বেলজিয়ান-ডাচ উভয় দেশেরই পাসপোর্ট রয়েছে।
ডাচ উভয় সম্প্রদায়ের প্রাথমিক ভাষা হলেও বেলজিয়ান স্কুলে ফ্রেঞ্চও পড়ানো হয়। ভ্যান গৌল বলেন, ‘বেলজিয়ানদের সঙ্গে এটি উপভাষার মতো এবং ডাচদের সঙ্গে আরও পরিষ্কার ...’।
বেলজিয়ামের পরিকল্পনা আইনে নেদারল্যান্ডের চেয়ে কম বিধি-নিষেধ থাকায় কারণেই দেশটিতে সামনে দরজা থাকার সুস্পষ্ট সুবিধা রয়েছে। বার্লি-হর্টোগের সীমান্তবর্তী অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের বাসিন্দা ডাচ নাগরিক কিস ডে হুনের অ্যাপার্টমেন্টের একটি ডাচ এবং অন্য তিনটি বেলজিয়ান! সীমান্তের উভয় পাশে থাকা তার মূল ভবনটি পুনর্বিন্যস্ত করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সামনের দরজাটি নেদারল্যান্ডে থাকায় তিনি ডাচ টাউন হল থেকে পরিকল্পনার অনুমোদন পেতে পারতেন না। তিনি সন্নিহিত কিন্তু সীমান্তের অন্যপাশে আরও একটি সদর দরজা স্থাপন করে সমস্যাটির সমাধান করেন। তাই এখন ভবনটির সামনের দরজা দু’টি।
নেদারল্যান্ডের দোকান, হোটেল ও ক্যাফের সংখ্যা ৪০ হাজারের বেশি হলেও বেলজিয়ামে মাত্র ৯ হাজারটি। এবং বেলজিয়ামের দোকানগুলো রোববার বন্ধ থাকলেও নেদারল্যান্ডের খোলা থাকে।
‘এটি শহরের উপযুক্ত বলে অবশ্যই পর্যটকদের আমাদের দিকে আকৃষ্ট করে’- বলেন নেদারল্যান্ডের বার্লি পর্যটন দফতরের চেয়ারম্যান উইলম ভ্যান গৌল।
নেদারল্যান্ডে মদ্যপান শুরুর বয়স ১৮ বছর হলেও বেলজিয়ানরা আইনিভাবে ১৬তেই বিয়ার ও ওয়াইন পান করতে পারে। তাই যদি ডাচ বারে একজন কিশোরীকে মদ পরিবেশন না করা হলে তার নাক কেঁপে উঠতে এবং সে রাস্তা পার হয়ে বেলজিয়ান অংশে চলে যেতে পারে।
আবার তিলবুর শহরের বেলজিয়ান অংশের অনেক আতশবাজির দোকান ডাচ কর্তৃপক্ষের বিরক্তির উদ্রেক করে। কারণ, নেদারল্যান্ডে আতশবাজি বিক্রি অবৈধ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
এএসআর
** ছিটমহলে-ঘরে বিভক্ত নেদারল্যান্ড-বেলজিয়াম!