মিশরের গেবেল এল-সিলসিলায় (Gebel el-Silsila) খনন কাজ চালানোর সময় ওই সমাধিগুলো খুঁজে পান প্রত্নবিদেরা। খ্রিস্টপূর্ব ১৪৯৩ সাল থেকে ১৪০১ সালের দিকে ওই অঞ্চলটি ছিল মূল্যবান খনিজের বড় উৎস।
মিশরের পুরাতত্ত্ব বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ সমাধিগুলো আবিষ্কারের ঘোষণা করে। একই স্থানে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্মিত কয়েকটি সমাধিকক্ষও খুঁজে পান তারা।
গবেষকরা জানান, প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর পুরনো সমাধিগুলোর কিছু অংশ পোকামাকড়, বন্যা ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়ে গেলেও, এর বেশিরভাগ অংশই এখনও অক্ষত ও অবিকল আছে।
প্রথম সমাধির শিশুটির দেহ লিনেন কাপড়ে মোড়ানো ছিল। মৃত্যুর সময় এ শিশুটির বয়স ছিল দুই থেকে তিন বছর। একটি কাঠের কফিনের ভেতর শিশুটির দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। কফিনের বেশিরভাগ অংশই ঘুণপোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যায়।
দ্বিতীয় সমাধিতে পাওয়া শিশুটির বয়স হয়েছিল ছয় থেকে নয় বছর। প্রাচীন সৎকারপ্রথা অনুযায়ী এ সমাধিতে বেশ কিছু মূল্যবান সামগ্রী খুঁজে পান গবেষকরা। এর মধ্যে ছিল- দশটি সিরামিকের পাত্র, ব্রোঞ্জের তৈরি একটি ব্রেসলেট ও একটি ক্ষুর। শিশুটির দেহে বেশ কিছু অলংকারও দেখতে পাওয়া যায়।
তৃতীয় সমাধির শিশুটির বয়স ছিল পাঁচ থেকে আট বছর। এ সমাধিতেও বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী ও অলংকার পাওয়া যায়। কিন্তু চতুর্থ সমাধিটি বিস্মিত করে গবেষকদের। এর মধ্যকার শিশুটির বয়স ছিল পাঁচ থেকে আট বছর। কিন্তু এ মৃতদেহটির সৎকারের সময় কোনো রকম আনুষ্ঠানিকতা পালনের আলামত পাওয়া যায় না এতে।
শিশুটির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত নন গবেষকরা। তবে দেহাবশেষ পরীক্ষার পর ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো অসুস্থতার কারণে এর মৃত্যু হয়েছে। দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্নও দেখা গেছে।
সমাধিগুলো পরীক্ষা করে ওই অঞ্চলের মানুষের রীতিনীতি, পেশা, রাজনৈতিক অবস্থান, মৃত্যুর কারণ ইত্যাদি সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন গবেষকরা। তাছাড়া, আরও সমাধির খোঁজে আশেপাশের এলাকায় খননকাজ চালানো হবে।
বাংলাদেশ সময়:০৩০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
এনএইচটি/জেএম