ঢাকা: পুঁথিগত বিদ্যা খুব বেশি নেই। কিন্তু নিজের উচ্চ চিন্তাধারা দিয়ে একজন উচ্চ শিক্ষিতকেও ছাপিয়ে যাওয়া যায়।
ভারতের ভোপালের এই ফুচকা বিক্রেতার কাণ্ড দেখে তাই বলা যায়। কন্যাশিশুর জন্ম দিলে যেখানে আজও অনেক পরিবারে নেতিবাচক কথা শুনতে হয় মাকে, অনেক ক্ষেত্রে স্বামীরাও নিজের কন্যাশিশুকে মেনে নিতে পারেন না, শিশুকন্যা হত্যাও যেখানে প্রায়ই ঘটে, সেই দেশে দাঁড়িয়েই নজির গড়ছেন এক ফুচকা বিক্রেতা।
নিজের কন্যাশিশুর জন্ম হওয়ার খুশিতে ভোপালবাসীকে বিনামূল্যে ফুচকা খাইয়েছেন তিনি।
মেয়ে হওয়ার আনন্দে ৫০ হাজারেরও বেশি টাকা খরচ করে এ ফুচকা খাওয়ান তিনি। খবর আনন্দ বাজারের।
অঞ্চল গুপ্ত ভোপালের কোলার এলাকায় ফুচকা বিক্রি করেন। চলতি বছরের ১৭ আগস্ট তার কন্যাশিশুর জন্ম হয়। এটি তার দ্বিতীয় সন্তান। বছর দু’য়েক আগে তার স্ত্রী একটি ছেলে জন্ম দিয়েছিলেন। সে বারেও কন্যাশিশু চেয়েছিলেন অঞ্চল। দ্বিতীয় সন্তান কন্যা হওয়ায় যেন স্বপ্নপূরণ হলো তার।
বাঁধভাঙা খুশিতে প্রথম সন্তানের জন্মদিনের দিনই কন্যা সন্তানের জন্মের আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। তার জন্য আগে থেকেই তার দোকানে আসা ক্রেতাদের বিনামূল্যে ফুচকা খাওয়ানোর দিনক্ষণ জানাতে শুরু করেছিলেন।
ওই বিশেষ দিন বিনামূল্যে ফুচকা খাওয়ানোর কথা ঘোষণা করে একটি বোর্ডও ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
কথা মতো সম্প্রতি বিনামূল্যে ফুচকা খাইয়ে কন্যাশিশুর জন্ম উদযাপন করলেন।
বিনামূল্যে ফুচকা খাওয়ার খবর ঝড়ের গতিতে সারা ভোপালে ছড়িয়ে পড়ায় ওই দিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার দোকানের সামনে রীতিমতো ফুচকাপ্রেমীর লাইন পড়ে গিয়েছিলো।
রাস্তার পাশে যেখানে ফুচকার ঠেলাগাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি, তার পাশেই বসে খাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন অঞ্চল।
কয়েকটি টেবিল পেতে দিয়েছিলেন। প্রতি টেবিলে এক ঝুড়ি করে ফুচকা এবং তেঁতুল জল ও অন্যান্য সামগ্রী রেখে দিয়েছিলেন। সবাইকে পরিবেশন করা তার একার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই যাতে প্রয়োজন মতো ফুচকা টেবিল থেকেই নিয়ে খেয়ে নিতে পারেন অতিথিরা, সেদিকে বিশেষ নজর ছিল তার।
অঞ্চলের দুই ভাই ইঞ্জিনিয়ার। স্ত্রীও স্নাতক। স্ত্রীকেও আত্মনির্ভর হতে শেখাচ্ছেন অঞ্চল। সেলাই মেশিন কিনে দিয়ে স্ত্রীকে স্বনির্ভর করতে তুলতে চান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১
এএটি