সংস্কৃতি শব্দটির অর্থের সীমানা আসলে কতদূর? সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির প্রকৃত অর্থ একেবারে নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন বৈকি। এর অর্থ যেন সমুদ্রের মতই গভীর।
সংস্কৃতির পরিধি বিশাল; যা ব্যাখ্যা করা প্রায় অসম্ভব। তবে সাধারণভাবে বলা যেতেই পারে যে, মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবনচর্চা ও চর্যার সমন্বিত রূপই হলো সংস্কৃতি। সংস্কৃতির প্রধান উপকরণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মানুষের জীবনযাপনের ধরণ, ঐতিহ্য, আচার-আচরণ, বিশ্বাস-অবিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা, নীতি-নৈতিকতা। আরেকটু সহজ করে বলতে গেলে, একটি জাতির জাতিগত বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সংস্কৃতি।
গুণীজনেরা বলেন, সংস্কৃতি নদীর মতো। নদীর যেমন গতিপথ বদলানো স্বভাব, সংস্কৃতিও তাই। সংস্কৃতির আসলে আদি ও অকৃত্রিম বলে কিছু নেই। সময়ের সাথে সাথে সংস্কৃতিও বদলায়। সংস্কৃতির চর্চা সংস্কৃতিকে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করে। এটি একটি শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এবং একটি জীবনযাত্রার পথ উজ্জীবিত করে যা মানবিক সম্পর্ক, পরিবেশ, এবং আত্মপরিচয়ের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর করে তোলে।
তাই, প্রাথমিক পর্যায় থেকেই প্রতিটি স্কুলে একটি করে সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র গড়ে তোলা সময়ের দাবী এবং তা হওয়া উচিত শিক্ষার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্মার্ট উন্নত দেশ গঠনে সর্বোপরি চাই শিক্ষিত জাতি; যে জাতি নিজ সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এজন্য প্রাথমিক পর্যায়েই দরকার ছাত্র-শিক্ষক ফোরাম যেখানে নির্দিষ্ট পরিসরে চলবে সংস্কৃতি বিষয়ক আলোচনা, দরকার নিয়মিত ওয়ার্কশপ।
প্রাথমিক শিক্ষকদের হাত ধরেই আসবে পরিবর্তন। সংস্কৃতি বিষয়ক পাঠের জন্য আমাদের থাকবে কর্মপরিকল্পনা, পাঠ্যক্রম ও পুস্তিকাসহ উপকরণ। শিক্ষার সঙ্গে সংস্কৃতির পাঠ যুক্ত হলে মানুষ পাবে তার মনের অন্ধকারচ্ছন্ন জাল ছিন্ন করার মতো আলোর বর্ষা।
একটি জাতিকে আলোকিত করার জন্য সংস্কৃতির প্রতি আরও গভীর সংযোগ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। সাংস্কৃতিক চর্চা সামগ্রিকভাবে আমাদেরকে উন্নতির পথে নিয়ে যায়। তাই প্রাথমিক পর্যায় থেকেই প্রতিটি স্কুলে এই সংস্কৃতি চর্চার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে আমরা একটি সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হই।
লেখক: উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক