ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

সন্ত্রাস বিরোধিতায়ই হাসিনার পাশে বিশ্বনেতারা

মাহমুদ মেনন, হেড অব নিউজ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০২ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৬
সন্ত্রাস বিরোধিতায়ই হাসিনার পাশে বিশ্বনেতারা

‘বাংলাদেশে সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি গড়তে দেবো না। বাংলার মাটি ব্যবহার করে কারো বিরুদ্ধে সন্ত্রাস চালানো যাবে না।

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স। ’

বারবার এমনটাই হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা। হোক সে জাতীয় কোনও আয়োজনে কিংবা কোনও বিশ্বফোরামে।  

এটা তার কেবলই ঘোষণা নয়, তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন, সন্ত্রাসকে নির্মূল করতে পারলেই বিশ্বকে বাসযোগ্য করে রাখা সম্ভব হবে।

তিনি জানেন, বিশ্বভ্রাতৃত্বেরও আজ প্রধান শত্রু এই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ভাবনা, আর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর এই চেতনাই তাকে করেছে বিশ্ব নেতা। আর তাই বিশ্বের শীর্ষ নেতারা এখন হাসিনাকে দেখতে পান তাদেরই কাতারে।

অতি সম্প্রতি জাপানের জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে শেখ হাসিনা গিয়েছিলেন আউটরিচ কর্মসূচিতে অংশ নিতে। সেখানেও তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে কথা বলেছেন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। আর বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে একাট্টা হতে।

মূলতঃ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তার এই দৃঢ় অবস্থানই তাকে জনপ্রিয় করে তুলেছে বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের মাঝে। সন্ত্রাসের বিরোধীতায় শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতাদের সমান অবস্থানে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন।

সঙ্গে সঙ্গে তিনি এ্ও বলছেন, তিনি জানেন, তার বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র চলছে। তাকে হত্যা করার সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার দৃঢ় ঘোষণা ‘আমি মরতে ভয় পাই না। ’

এতে ধীরে ধীরে এই অকুতোভয় মানুষটি সারাবিশ্ব জুড়ে সন্ত্রাস বিরোধী লড়াইয়ে অন্যতম আদর্শিক নেতা হয়ে উঠছেন।    

জি-৭ এর বিশ্বফোরামে আমরা যেমনটা দেখেছি, শেখ হাসিনা এবং তার বাংলাদেশ ছিলো শীর্ষ নেতাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। অন্য কোনও নেতাই এককভাবে এতটা আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারেননি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আর জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনঝো আবেকে আউটরিচের মূল আলোচনায় শেখ হাসিনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তার কথাই শুনতে চেয়েছেন।

বাংলাদেশ উন্নয়নে এখন বিশ্বের কাছে যেমন বিষ্ময়, তেমনি সন্ত্রাস বিরোধী অবস্থানে শেখ হাসিনাও বিশ্বনেতাদের কাছে গুরুত্বের।

সন্ত্রাসের পক্ষে যারা, বিশ্বকে যারা অস্থিতিশীল করে রাখতে চায় তাদেরও চোখ রয়েছে বাংলাদেশের প্রতি। তারা এই দেশটিকে অকার্যকর করে তোলার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তবে এখনও তারা এতে সফল হতে পারেনি। শেখ হাসিনা দৃঢ়চিত্তে ঘোষণা করছেন বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট নামের জঙ্গি দলের কোনও অস্তিত্ব নেই। তাদের তিনি ঢুকতেই দেননি দেশে।

তবে শেখ হাসিনার চেষ্টা যতই সন্ত্রাসকে আর সন্ত্রাসীদের দূরে ঠেলে রাখা, তেমনি দেশে একটি জাতীয় স্বার্থবিরোধী শক্তি রয়েছে যারা ডেকে আনতে চায় সন্ত্রাসকে। যারা দুর্বৃত্তায়নে দেশকে ছেয়ে দিতে চায়। দেশের অন্য একটি রাজনৈতিক দল যখন রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অভাবে আর জনগণের আস্থা হারিয়ে এখন ক্ষমতার বাতবরণ থেকে অনেক দূরে তারাই এই দুর্বৃত্তায়নের মদদদাতা। ঠিক এমনটাই মনে করেন শেখ হাসিনা।   বিএনপি-জামায়াত জোটই আজ রাষ্ট্রবিরোধী এমন বড় ষড়যন্ত্রে সামিল বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস।

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে জোটভুক্ত এই শক্তি বিভিন্নভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। এক সময় আন্দোলনের নামে এরা পেট্রল বোমা মেরে মানুষ পুড়িয়ে মেরে, কিংবা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করে সে চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে ও চরম ধৈর্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা প্রতিহত করেছেন।

এই প্রতিকুলতার সঙ্গে লড়েও একই সাথে দেশের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছেন তিনি। যা ষড়যন্ত্রীদের সহ্য হচ্ছে না। ফলে তারা নতুন নতুন সঙ্কট সৃষ্টি করছে। তারই অংশ হিসেবে এখন চলছে গুপ্ত হত্যা। যার অন্যতম টার্গেট হচ্ছেন- মসজিদের ইমাম, গির্জার ফাদার, বৌদ্ধ ভিক্ষু কিংবা হিন্দু পুরোহিত।

প্রধানমন্ত্রী বারবারই তার বক্তৃতাগুলোতে বলছেন, এই সব হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত। এবং এর একটাই উদ্দেশ্য বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করা। উষ্কানিমূলকভাবে এমন সব মানুষদের হত্যা করা হচ্ছে যাতে উত্তেজনা তৈরি হয়। কিন্তু যারা এগুলো করছে তাদের উদ্দেশ্য বারবারই ব্যহত হচ্ছে, কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দৃঢ়চেতা মনোবল আর সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে এইসব ষড়যন্ত্র বানচাল করে দিচ্ছেন।

আর যারা সন্ত্রাসকে পূঁজি করে রাজনীতিতে ফিরতে চাচ্ছে তারাই বরং আরও পিছিয়ে পড়ছে। কারণ বিশ্ব নেতৃত্বও সন্ত্রাস চায় না। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেই তাদের অবস্থান। আর তাতে তারা বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনাকেই পাশে পাচ্ছে। ফলে তার সঙ্গেই তাদের সখ্য যেমন বাড়ছে, তেমনি দৃঢ় হচ্ছে বিশ্বমঞ্চে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের অবস্থান।

প্রতিবেশী দেশ ভারতের কথাই বলা যায়। মোদি সরকার সন্ত্রাস বিরোধীতার প্রশ্নে শেখ হাসিনার পাশে রয়েছে। আর শেখ হাসিনাও স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন, বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে কারো বিরুদ্ধে সন্ত্রাস করা যাবে না। ভারতও কোনও ভাবেই তার একদিকে পাকিস্তানের মতো সন্ত্রাসীদের আখড়া রেখে অন্যদিকে সন্ত্রাসীদের সক্রিয় হতে দেবে না।
 
কিন্তু তারপরেও রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ে দুর্বৃত্তায়নকে যারা পুঁজি করেছে, যারা নানাভাবে সরকারকে হেয় করে পশ্চিমা বিশ্ব এমনকি প্রতিবেশি দেশেরও সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করেছে তারা আজ ক্রমেই রাজনৈতিক দেউলিয়ায় পরিণত হচ্ছে। একটি অকার্যকর দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিত পাকিস্তানকে তারা মিত্র হিসেবে নিয়ে কূটনৈতিকভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনা সৃষ্টির উষ্কানি দিয়ে যাচ্ছে। চিহ্নিত, দোষী সাব্যস্ত যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির ইস্যুকে তারা কূটনৈতিক সম্পর্কের মাঝে টেনে নিয়ে নানা ধরনের অপচেষ্টা চালিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবারই দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করছেন, ষড়যন্ত্র করে নয়, দেশকে ভালবেসে রাজনীতি করতে হবে। দেশে সন্ত্রাস ডেকে এনে নিজেকে ক্ষমতায় বসানোর স্বপ্ন যারা দেখছেন সন্ত্রাসীদের মতো তাদের বিরুদ্ধেও তার দৃঢ় অবস্থান।

আর নিঃসন্দেহে শেখ হাসিনা তার এই অবস্থানে পাশে পাচ্ছেন বিশ্ব নেতাদের। কারণ তারই এই সন্ত্রাসবিরোধী ভাবনা কেবল দেশের স্বার্থেই নয়, বিশ্বকে সন্ত্রাসমুক্ত রাখতেই তার সন্ত্রাসবিরোধী জিরো টলারেন্সের ঘোষণা। যা আজ বিশ্ববিদিত।

বাংলাদেশ সময় ১৬৪০ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৬
এমএমকে   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।