ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

প্রেরণার বাতিঘর বাংলানিউজ

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৬
প্রেরণার বাতিঘর বাংলানিউজ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: শৈশব থেকেই সাংবাদিকতা আমাকে ভীষণ টানতো। নাড়াতো মন-মগজের অলিগলি।

স্বল্প সময়ের সাংবাদিকতা জীবনে দেশের প্রথম সারির বেশ কয়েকটি দৈনিকে কাজ করারও অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। ফাস্ট মিডিয়া হিসেবে এক সময় পরিচিত টিভি সাংবাদিকতাতেও নিজের ক্যারিযার গড়ার স্বপ্ন ছিল।

কিন্তু মফস্বলে ‘সিন্ডিকেট জার্নালিজম’ বারবার আমার সাংবাদিকতা জীবনে প্রতিবন্ধকতার অদৃশ্য দেয়াল তৈরি করেছে। সাহস দিতেন বাবা। দু:সময়ের ঘূর্ণিপাকে আমার জীবনের পরম বন্ধু আশাবাদী মানুষ বাবা শামসুল আলম খান স্মরণ করিযে দিতেন-‘থেমে গেলে চলবে না। এগুতে হবে। সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। ’
 
পদে পদে হোঁচট খেতে খেতেই সেই সিন্ডিকেটের কালো হাতের অদৃশ্য কারসাজির দেয়াল ভেঙে স্রোতস্বিনী ব্রহ্মপুত্রের মতো ছুটেছি। ওই বিশেষ সিন্ডিকেটকে কুপোকাত করার চেয়ে এক সময় মুগ্ধতাই কাজ করতো বেশি। অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়েই অবশেষে ‘নিউ মিডিয়া’ বাংলানিউজে থিতু হয়েছি।

আর আমার ওপর আস্থা রেখে এ সুযোগ দিয়েছেন আলমগীর হোসেন।

তার আশীর্বাদেই ময়মনসিংহের গন্ডি পেরিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতেও বাংলানিউজের একজন রিপোর্টার হিসেবে পাঠকের অনুভূতি ও প্রত্যাশা তুলে ধরার বিরল সুযোগ পেয়েছি।

আমার মনে প্রেরণার দীপশিখা এখনো জ্বালিয়ে রেখেছেন বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেনই।

অনলাইন সাংবাদিকতা কী, দৈনিক পত্রিকা ও টেলিভিশন সাংবাদিকতার সঙ্গে নতুন এ মাধ্যমটির পার্থক্য, মিল-অমিল সম্পর্কিত নুন্যতম জ্ঞানও ছিল না আমার। কিন্তু বাংলানিউজে সংবাদ কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে ঠিকই রঙিন স্বপ্নে বিভোর হলো মন।  

আমি তখন দুখু মিয়ার নামাঙ্কিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বিজ্ঞাপনটি ছাপার দিনেই বাবার সম্পাদনায় প্রকাশিত আমাদের স্থানীয় দৈনিকের অফিসে এলেন সাংবাদিক শেখ মহিউদ্দিন।

বাবা’র সহকর্মী এ সিনিয়র সাংবাদিক চাচাই আমাকে আর বাবাকে নিয়ে গেলেন বাংলানিউজ অফিসে। সরাসরি হাজির হলাম আধুনিক, চিন্তাশীল ও বিজ্ঞানমনস্ক একজন মানুষের সামনে। মিনিট কয়েক আলাপে আমার মেধা ও মননের নিয়ন্ত্রণ চলে গেলো তার হাতে।

পরতে পরতে দু:খগাঁথা, দৈন্য আর অপ্রাপ্তির সব হিসাব চুকিয়ে সেইদিন থেকেই শুরু হলো আমার অনলাইন সাংবাদিকতার পথচলা।

তারপর ছ’বছর ধরে সে পথেই চলছি। সময়ের পরিক্রমায় এ বাংলানিউজই এখন আমার ‘লাইফ লাইন’।

শুরু থেকেই দেখে আসছি, মফস্বলের পাঠকের আবেগ, অনুভূতি, প্রত্যাশা, অভিযোগ-সব কিছুই অকপটে তুলে ধরে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলানিউজ।

প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজনীতিক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী নেতাদের কাছেও আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে আমার এ প্রাণের নিউজপোর্টাল।

আমার মতো আরো অনেকেরই সাংবাদিকতা জীবনের বাতিঘর হয়ে ‌আছে বাংলানিউজ।

‘টিকে থাকুন, ক্যারিয়ার গড়ার জন্য অনলাইন সাংবাদিকতাই সেরা। ’ আমার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সম্প্রতি এমন মন্তব্য করেছিলেন এক টিভি সাংবাদিক। বাস্তবে হয়েছেও তাই।

তথ্য প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষতার যুগে সংবাদ আর বিনোদনসহ সব খবরের ক্ষেত্রেই বিপ্লব ঘটিয়েছে বাংলানিউজ। দৃঢ়, বলিষ্ঠ পায়ে সারা দেশের মতো ময়মনসিংহেও পৌছে গেছে শক্ত ভূমিতে। আমার হৃদয়গ্রোথিত আবেগ আর ভালোবাসার এ প্রতিষ্ঠানের জয়জয়কারে আমি আপ্লুত।

জয়তু বাংলানিউজ। শতায়ু হোক বাংলানিউজ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৬
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।