ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

পাঠকের মন্তব্য ও কিছু কথা..

মাহমুদ মেনন, আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১১
পাঠকের মন্তব্য ও কিছু কথা..

‘মিথস্ক্রিয়া’ যোগাযোগের একটি তাত্ত্বিক ও কঠিন শব্দ। ইংরেজিতে যেটি ইন্টার‌্যাকশন এবং সহজেই বোধগম্য।

সংবাদমাধ্যমের জন্য এই মিথস্ক্রিয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক যা তথ্য প্রদান ও গ্রহণকারীর মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক যোগাযোগ নিশ্চিত করে। আর তত্ত্বে বলা হয়েছে মিথস্ক্রিয়া হলেই যোগাযোগেরই ফলপ্রসূতা নিশ্চিত করা যায়। অতিসম্প্রতি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এর পক্ষ থেকে এই মিথস্ক্রিয়ার একটি ধারা চালু করা হয়েছে। তা হচ্ছে অনলাইনে যে কোনো সংবাদের ওপর পাঠকের মন্তব্য করার সুযোগ। প্রক্রিয়াটি চালু করার পরপরই পাঠকের হাজারো প্রতিক্রিয়া আসছে।

অনলাইনে কোনো প্রতিবেদন বা মন্তব্য কলামে পাঠকের মতামত নেওয়ার পদ্ধতি কোনোভাবেই নতুন নয়। কিন্তু তার পরেও একটি মাল্টিমিডিয়া অনলাইন নিউজপোর্টাল হিসেবে বাংলানিউজকে যাত্রা শুরুর ১৩ মাস পরে এ কাজটি কেন শুরু করতে হলো তার উত্তর একটাই... অন্তত চিন্তা ও বিশ্বাসে নিরপেক্ষ দুইজন সম্পাদক নিয়োগ না করে কাজটি শুরু করা সম্ভব হচ্ছিলো না।

অনলাইন যোগাযোগে বাংলাদেশের ইতিহাস স্বল্প সময়ের হলেও এরই মধ্যে নিশ্চিত হওয়া গেছে যাদের এই মাধ্যমটিতে অ্যাকসেস আছে তাদের কেউ কেউ এই সুযোগটির চ’ড়ান্ত অপব্যবহার করছেন। একটি শ্রেণী রয়েছে যারা কিছু একটা স্বার্থ মাথায় রেখেই আধুনিকতম এই যোগাযোগ মাধ্যমটি ব্যবহার করেন এবং সুক্ষ্মাতি সুক্ষ্ম সুযোগেও তারা তাদের মতাদর্শ অতিবড় দক্ষতায় ইনজেক্ট করে দেন। আর একটি গ্রুপ, যাদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি, তারা মন্তব্যের নামে কিছু অশ্লীল বক্তব্য লিখে দেন, (বাংলাদেশের অনলাইনে অশ্লীলতার ছড়াছড়ি আছে সে নিয়ে আজ কিছু লিখতে চাই না, সুযোগ হলে অন্য কোনো লেখায় তুলো ধরার চেষ্টা করবো...) যা কোনোভাবেই একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশযোগ্য নয়।

প্রিয় পাঠক অবশেষে নিয়মিত সম্পাদনার সুযোগ নিশ্চিত করেই বাংলানিউজ তার অনলাইন মতামতের প্রক্রিয়াটি চালু করেছে এবং এক কথায় বলা চলে ব্যাপক সাড়াও পাওয়া গেছে।

বিশাল এই গৌড়চন্দ্রিকার পর মূল প্রসঙ্গটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। যারা অনলাইনে বাংলানিউজের বিভিন্ন রচনায় মন্তব্য করছেন তাদের প্রথমেই একটি অনুরোধ করতে চাই... প্লিজ অশ্লীল কথা লিখবেন না।

আপনি হয়তো খুবই সুন্দর এবং গ্রহণযোগ্য একটি মন্তব্য করেছেন কিন্তু সেটি প্রকাশ করা যায়না... কারণ তার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন এক-দুটি অশ্লীল শব্দ।

দেশে ও দেশের বাইরে বাংলানিউজের লাখো-কোটি পাঠক। তাদের অনেকেই এসব লেখায় আগ্রহভরে মন্তব্য করছেন। তাই যারা এগুলোকে পর্যবেক্ষণ করে পোস্ট দিচ্ছেন তারা মোটামুটি দিনরাত জুড়ে খাটছেন। কিন্তু এরপরও অনেক মন্তব্য পোস্ট করা সম্ভব হচ্ছে না কারণ ওই অশ্লীলতা।

কিছু লেখা পোস্ট দেওয়া সম্ভব হয় না, কারণ লেখাগুলো অনেক বেশি আক্রমণাত্মক।   ব্যক্তিগত আক্রমণটাই বেশি। আবার থাকে রাজনৈতিক মতাদর্শভিত্তিক আক্রমণ।

পাঠককে একটি বিষয় সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এমন একটি নিউজপোর্টাল যার কোনো রাজনৈতিক ঝোঁক নেই। সরকার কিংবা বিরোধী দল কোনো পক্ষের দিকেই ঝুকে নেই বাংলানিউজ। একটি মুক্ত ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা চর্চার প্রচেষ্টা চলে এখানে। বাংলানিউজ কোনো খবর নিশ্চিত করে জেনেছে আর তা প্রকাশ করেনি এমনটা কখনোই হয়নি।

যারা মন্তব্য কলামগুলোর ব্যাপারে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে মতামতে নানা কিছু লিখেছেন তাদের জন্য বলছি... একজন লেখক হয়তো একটি লেখায় বিরোধী দলের কিংবা জামায়াত শিবিরের সমালোচনা করলেন আবার তিনিই হয়তো অন্য একটি লেখায় ঠিক সরকারেরই কঠোর সমালোচনা করেছেন। এধরনের নিবন্ধে এমনটাই হয়। তাই যারা বাংলানিউজের একজন কন্ট্রিবিউটিং এডিটরকে আওয়ামী ঘরানার বলছেন তারা তার অন্য কিছু লেখা পড়ে দেখবেন, মনে হবে তিনি আওয়ামী লীগ বিরোধী। উদাহরণ হিসেবে ‘আদরের আবুল’ বা ‘ছাত্রলীগের মুফতি শহিদুল’ এর কথা বলা যায়।

আসলে ঘটনা বা পরিস্থিতি কোনো দক্ষ লেখকের কলমকে চালিত করে, তা কোন দলের প্রতি সাফাই হলো কিংবা কোন দলের বিরুদ্ধে গেলো সেটি ধর্তব্যে থাকে না।    

রাজনৈতিক মতাদর্শ সকলেরই রয়েছে। কিন্তু কারো লেখা যদি সেই মতাদর্শ বিরোধী হয় তাহলেই অধৈর্য হয়ে ওই লেখার বিরুদ্ধে বিষোদগার করা কোনো কাজের কথা নয়। এ অবস্থায় আপনি নিজেও হাতে তুলে নিতে পারেন কলম। সূত্রপাত করতে পারেন গঠনমূলক কোনো আলোচনা বা সমালোচনার। এক্ষেত্রে শুধু একটি কথাই মনে রাখতে হবে... বাংলানিউজ কখনোই কোনো দলের পক্ষে প্রচার বা কোনো দলের বিপক্ষে প্রচারণার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহৃত হবে না।

দেশের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি নিয়ে আমাদের সকলেরই উদ্বেগ রয়েছে। একটি বিষয় আমরা সবাই চাই তা হচ্ছে.. একটি সুন্দর, সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আর একটি বিষয়... মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বাংলানিউজ।  

বিশাল পাঠক গোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে সেই পথে বাংলানিউজ যদি এতটুকু অবদান রাখতে পারে সেটাই হবে সবচেয়ে আনন্দের।

বাংলাদেশ সময় ১৮৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।