যখন দেখি প্রায় ৩০টি দেশের ছাত্র-ছাত্রী আমার প্রতিষ্ঠিত পিপল এন টেকে পড়ছে- বাংলাদেশি হিসেবে গর্বে বুক আমার ভরে যায়। স্বাধীন না হলে বাংলাদেশকে এভাবে তুলে ধরার সুযোগ নিশ্চয়ই থাকতো না।
দেশের গার্মেন্টস শিল্প আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঈর্ষণীয় অবদান রাখছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ ও বেকারত্ব দূরীকরণে বাংলাদেশ আজ উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। আমাদের দেশের তরুণ-তরুণীরা দেশে বসেই অবসরে অনেক বড় বড় লিডিং কোম্পানির জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশের সফটওয়্যার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাজারজাতকরণে সরকার বিশেষ ভূমিকা রাখছে। ২০২১ সালের মধ্যে এ সফটওয়্যার খাতে ৫ মিলিয়ন ডলার অর্জনে সক্ষম সরকার। গার্মেন্টস, কৃষি ও রেমিটেন্সের উপর ভর করে দেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি কেড়েছে। প্রযুক্তিকে চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশের আসনে স্থান লাভ করতে চায়। পৃথিবীর প্রথম সিটিজেন রোবট সোফিয়ার বাংলাদেশ ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৭’ এ আগমন প্রমাণ করে, আমরা প্রযুক্তিতে কতোটা আগ্রহী। তার চেয়ে আনন্দের বিষয়- সোফিয়ার আগমনের পূর্বে বাংলাদেশের শিক্ষানবিশরা বানিয়েছিল কয়েকটি রোবট। আর এটা সত্যিই বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জনগণের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।
বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৪৬ বছর অতিক্রম করছে। নারীর ক্ষমতায়ন সত্যিই উল্লেখ্যযোগ্য। প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, স্পিকারসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে বাংলাদেশে নারীরা নেতৃত্ব দিচ্ছে, যেখানে কিনা যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ স্বাধীনতার ২৪১ বছর পরও নারীর ক্ষমতায়ন ও নেতৃত্বে দ্বিধাবোধ করছে। এই প্রাপ্তি সমগ্র বাঙালি জাতির জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।
এখন আসি কি আমাদের প্রত্যাশা। প্রত্যাশা প্রত্যেকের বরাবরই বেশি। এটা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। কোনো কিছু করে থেমে না থেকে আরো ভালো কিছু করার চেষ্টা করা। মানুষ সবসময়ই চায় সফল থেকে সফলতার অবস্থানের দিকে এগুতে। যে বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ির নিশ্চিত বাক্যের স্বীকৃতি পেয়েছিল এবং কিছুদিন আগেও ‘ডিজাস্টার বাংলাদেশ’ হিসেবে যাকে গুগলে খোঁজা হতো, তা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে সার্চ ইঞ্জিনে খোঁজা হচ্ছে। যেদিন আর বেশি দূরে নয়, যে দিন রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশকে অনুকরণ করা হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রমিক পাঠিয়ে দক্ষ প্রযুক্তিবিদ পাঠানো, দেশে প্রতিটি নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্য বিমা নিশ্চিত করা, নারীদের উপযুক্ত কর্মস্থান ও কর্মস্থলে উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা, দেশপ্রেমিক, চরিত্রবান, সুশিক্ষিত ও কর্মদক্ষ নাগরিক গড়ে তোলা, সর্বপরি নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। - এগুলো প্রত্যাশারই অংশ বিশেষ।
সব চেয়ে বেশি প্রত্যাশা হলো, দেশের নেতৃত্বের জায়গাটা যাতে যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। প্রবীণদের মতো নবীন রাজনীতিবিদও আমাদের প্রত্যাশা। এতে বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে উন্নত দেশের মুকুট পরে বিশ্ব নেতৃত্বে স্থান করে নেবে এবং সেই বাংলাদেশে থাকবে না দারিদ্র, দুর্নীতি, দুষণ, বেকারত্ব ও অস্থিতশীলতার ছিটে ফোঁটা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭
আরআইএস/জেডএম