ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

পার্থে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা: একটি পাঠ প্রতিক্রিয়া

পার্থ প্রবাসী বাংলাদেশের একজন নাগরিক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১১
পার্থে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা: একটি পাঠ প্রতিক্রিয়া

অস্ট্রেলিয়ার পার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানানো নিয়ে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে পার্থ থেকে ড. আবুল হাসনাত মিল্টন বাংলানিউজে একটি লেখা পাঠান।

লেখাটি ‘ব্যথিত’ পার্থ শিরোনামে গত ৩০ অক্টোবর প্রকাশিত হয়। সেই লেখারই প্রতিবাদ জানিয়েছেন পার্থ প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক একজন পাঠক।

পার্থ প্রবাসী বাংলাদেশের একজন নাগরিক

অস্ট্রেলিয়া: বাংলানিউজে লেখাটি পড়ে আমরা দারুণ ব্যথিত হয়েছি। বিশ্বাসই হচ্ছিল না। পার্থে পুরো বাঙালি সম্প্রদায়কে নিয়ে একপাক্ষিক ও পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করার সুযোগ নেই। মোদ্দা কথায়, আপনি (ড. আবুল হাসনাত মিল্টন) আমাদের বিব্রত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য আমাদের আয়োজিত অনুষ্ঠান বাতিল করতে আপনি হাইকমিশনারকে (অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত) প্ররোচিত করেছেন, তাকে চাপ দিয়েছেন।

রাজনীতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা পার্থে ক্ষুদ্র সম্প্রদায় হলেও, অত্যন্ত ঐক্যবদ্ধ। নানা ধরনের বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে আমাদের।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য পার্থে একটি অভ্যর্থনার আয়োজন করা হয়। তিনি আওয়ামী লীগের নেতা বলেই এ আয়োজন তা নয়, তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও বটে। পার্থে তিনি আমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছেন, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা এটাকে গুরুত্বপূর্ণ বোধ করি।

সুবিস্তৃত পরিসরে আমরা অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানকে অরাজনৈতিক ও নিরপেক্ষ করার চেষ্টা করি। তবে আপনার অব্যাহত হস্তক্ষেপ, আমাদের সম্প্রদায়কে পুরোপুরি অবজ্ঞা করা এবং হাইকমিশনার ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চাপ দেওয়ার কারণে একবার না, দুবার না অনুষ্ঠানটি এর আগে তিনবার বাতিল করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আপনি বা অন্যরা যে তদবির করেছেন, আমি তার প্রশংসা করি। তিনিও নিশ্চয়ই এতে খুশিই হয়ে থাকবেন। তবে একই সময়ে, আমার প্রশ্ন হচ্ছে, দেশের শাসন ক্ষমতায় অন্য দল যদি ক্ষমতায় থাকত তাহলে আপনি কি একইরকম তদবির করতেন? আমার অনুমান হচ্ছে, ‘না’। আপনারা তা করতেন না। এর অর্থ হচ্ছে, বাংলাদেশের একজন সম্মানিত নাগরিক হিসেবে অভ্যর্থনা অনষ্ঠান করতে চাননি। একটি নির্দিষ্ট দলের অনুসারী হিসেবেই আপনি নিজেকে দেখাতে চেয়েছেন।

এটা ভালো আর আপনাদের এটা করার অধিকারও আছে। তবে আপনি বা অন্যরা আমাদের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানকে ম্লান বা রাজনীতিকীকরণ করতে পারেন না। এ অধিকার আপনাদের নেই।

পার্থে কী হয়েছিল তা আমি আপনাকে পুনরায় মনে করিয়ে দিতে চাই না। তবে এসব কারণেই দেশের ভেতর আমরা একে অপরের সঙ্গে বিবাদে মেতে আছি এবং শান্তিপূর্ণ অবস্থাকে পেছনে ঠেলে দিয়েছি।

দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশ থেকে আমরা অনেক দূরে চলে এলেও ওই সব রাজনীতি/দুর্নীতি থেকে মুক্ত হতে পারিনি।

আপনার কাছে আমার শেষ প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি কী মনে করেন, পার্থে আমাদের কমিউনিটিকে কেবল অপমানিত করে আপনারা সবাই এই লেখার মধ্য দিয়ে তুষ্টি পেয়েছেন? উত্তর হয়ত হবে, ‘না’। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আপনি নিজেকেই অপমানিত করেছেন। কারণ আপনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি উপযুক্ত অভ্যর্থনা দিতে বাধা দিয়েছেন, যা তিনি পাওয়ার যোগ্য।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।