ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

রক্ষীবাহিনীর অজানা কথা

বঙ্গবন্ধু যেতেই গুলি বন্ধ করল বিডিআর

নঈম নিজাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২১
বঙ্গবন্ধু যেতেই গুলি বন্ধ করল বিডিআর

বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরতেই শুরু হয়ে গেল ষড়যন্ত্র। দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীরা নেমে গেল মাঠে।

প্রথম আঘাতটা এলো রক্ষীবাহিনী গঠন করতে গিয়ে। রক্ষীবাহিনী ছিল প্যারা মিলিশিয়া বাহিনী। গঠনের সিদ্ধান্ত হয় বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার আগেই। ইতিহাসের পাতায় চোখ বুলালে দেখা যায়, ১৯৭১ সালের ২২ ডিসেম্বর তখনকার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রবাস থেকে ঢাকায় ফেরেন।   ২৩ ডিসেম্বর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গঠন করা হয় ১১ সদস্যের জাতীয় মিলিশিয়া বোর্ড। এতে এক নম্বর সদস্য ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। মণি সিংহ, অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদও সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিলেন এ এইচ এম কামরুজ্জামান, মনোরঞ্জন ধর, গাজী গোলাম মোস্তফা, রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া, আবদুর রাজ্জাক ও ক্যাপ্টেন সুজাত আলী। এ ব্যাপারে সরকারকে সহায়তা করতে কর্নেল ওসমানীর নেতৃত্বে সেনা কর্মকর্তাদের একটি টিম গঠন করা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, যারা পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন তাদের সবাইকে জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীতে নেওয়া হবে। পরে সবাই যার যার পেশায় ফেরত যাবেন।

’৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ফিরে আসেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১২ জানুয়ারি তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নিয়ে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধাদের দেশ গঠনের কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন। এ সিদ্ধান্তের অন্যতম অংশ ছিল জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের। মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আত্মার বন্ধন। এই বন্ধনকে দৃঢ় করতে ২৪ জানুয়ারি প্রেসনোট জারি হয় জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের। একই দিন বঙ্গবন্ধু টাঙ্গাইল যান। মুক্তিযুদ্ধের বিশাল সংগঠক, গেরিলা যুদ্ধের নায়ক কাদের সিদ্দিকী এক স্টেডিয়াম অস্ত্র সমর্পণ করেন বঙ্গবন্ধুর পায়ের সামনে। বঙ্গবন্ধু তাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সেই সমাবেশে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি তোমাদের তিন বছর কিছু দিতে পারব না। আরও তিন বছর যুদ্ধ চললে তোমরা কী করতে না? মুক্তিযোদ্ধারা একসঙ্গে বলে উঠলেন, অবশ্যই করতাম। এরপর বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘তা হলে মনে কর যুদ্ধ চলছে। তিন বছর যুদ্ধ চলবে। সেই যুদ্ধ দেশ গড়ার যুদ্ধ। এ যুদ্ধে অস্ত্র হবে লাঙ্গল আর কোদাল। ’ মুক্তিযোদ্ধাদের ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে বঙ্গবন্ধু টাঙ্গাইল থেকে ঢাকা ফিরলেন। ভাবলেন, দেশটাকে নিয়ে শুরু করলেন নতুন স্বাপ্নিক যাত্রা। যে স্বপ্নের কথা দেশে ফিরে বলেছিলেন, সবাইকে নিয়ে দেশটাকে সুইজারল্যান্ডের মতো গড়ে তুলতে চাই।

বঙ্গবন্ধুকে সেই তিন বছর কী দিয়েছিল বাঙালি? ঘরে বাইরে সংকট প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়ে গেল। প্রেসনোট জারির পর থেকে মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। জাতীয় মিলিশিয়ার প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় মেজর নুরুজ্জামানকে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারদের একজন। দুজন বেসামরিক বড় মুক্তিযোদ্ধাকে উপপ্রধান করলেন বঙ্গবন্ধু। একজন টাঙ্গাইলের আনোয়ারুল আলম শহীদ, আরেকজন মাদারীপুরের সরোয়ার মোল্লা। দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। প্রধানের পদমর্যাদা পরিচালক। উপ-প্রধানদের মর্যাদা উপ-পরিচালক। তাদের বলা হয় দ্রুততম সময়ে কাজ শুরু করার জন্য।

মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের শুরুতেই অনেক বিপত্তি শুরু হয়। সদ্য স্বাধীন দেশে সংকটের শেষ ছিল না। সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল বিলুপ্ত ঘোষিত ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে যৌথভাবে মিলিশিয়া বাহিনী হবে। তাদের কাজ হবে সীমান্ত পাহারা ও অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে সহায়তা করা। সেভাবেই শুরু হয়ে যায় কাজ। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার মেজর নুরুজ্জামান বীরউত্তম কাজ শুরু করেন। সঙ্গে সরোয়ার মোল্লা ও আনোয়ারুল আলম শহীদ। প্রধান কার্যালয় করা হয় পিলখানা। মিলিশিয়া বাহিনীতে যোগ দিতে সারা দেশ থেকে মুক্তিযোদ্ধারা জড়ো হতে থাকেন। ইপিআর সদস্যরা তো আছেনই। ইপিআর সদস্যদের সঙ্গে দুটি গ্রুপ ছিল। এক গ্রুপে ছিল সাধারণ সদস্য, যারা মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। তবে তাদের প্রায় সবাই ছিলেন সাধারণ সিপাহি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের কারণে তখন গর্বিত ও প্রশংসিত ভূমিকায়। অন্যদিকে ছিল নন-কমিশন্ড অফিসার, যারা যুদ্ধে অংশ নেননি। তারা পাকিস্তানের হয়ে কাজ করেছেন একাত্তরে। উভয় পক্ষের মধ্যে ছিল মানসিক দূরত্ব। মুক্তিযোদ্ধা সাধারণ সিপাহিরা বিষয়টি জানান জাতীয় মিলিশিয়ার পরিচালক মেজর নুরুজ্জামানকে। তিনি সবকিছু খতিয়ে দেখতে একটি যাচাই-বাছাই স্ক্রিনিং কমিটি গঠন করেন। এতে আনোয়ারুল আলম শহীদকে প্রধান করা হয়। সঙ্গে রাখা হয় সেনাবাহিনীর সুবেদার হাফিজ উদ্দিন ও ইপিআরের নায়েব সুবেদার আহসান উল্লাহকে। একই ধরনের কমিটি মুক্তিযুদ্ধের পর সেনাবাহিনীতেও করা হয়েছিল। এ কমিটি কাজ শুরুর আগেই নানারকম গুজব ছড়িয়ে পড়ে ইপিআর সদস্যদের মধ্যে। গুজবের ডালপালা বাড়তে থাকে। এক ধরনের উত্তেজনা ছড়িয়ে দেওয়া হয় মিলিশিয়া বাহিনী গঠন প্রক্রিয়ার আগেই। পাকিস্তান থেকে যারা ফিরেছিলেন তারাই এমন কান্ড ঘটিয়েছিলেন ঠান্ডামাথায়।

কর্নেল (অব.) সরোয়ার মোল্লার সঙ্গে সেই সময়ের ঘটনাবলি নিয়ে কথা হয়। তিনি বলেন, মাত্র প্রজ্ঞাপন হয়েছে। কাজই শুরু করতে পারিনি। এর মধ্যে এক দিন খবর পেলাম আমাদের প্রধান মেজর নুরুজ্জামানকে মারধর করছে ইপিআরের জিসিও, এনসিওরা। তারা সবাই নন-কমিশন্ড অফিসার। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের পক্ষে ছিলেন। ইপিআর ছাড়েননি। খোঁজ নিলাম আনোয়ারুল আলম শহীদ কোথায় আছেন। জানলাম গোলমাল শুনে তিনিও নুরুজ্জামানের কাছে গেছেন। দুজনের ওপর হামলা হয়েছে। দুজনকে মারধর করা হচ্ছে। আমার সঙ্গে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। তারা সারা দেশ থেকে জড়ো হয়েছেন মিলিশিয়া বাহিনীতে যোগ দিতে। তাদের সঙ্গে অস্ত্র ছিল। এই সময় গুলির আওয়াজ শুনলাম। বুঝলাম এখনই তৎপর না হলে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার নুরুজ্জামানকে বাঁচানো যাবে না। দৌড়ে গেলাম সবাইকে নিয়ে। গিয়ে দেখলাম চারদিকে যুদ্ধ ভাব। বিচ্ছিন্নভাবে গোলাগুলি হচ্ছে। একদল লোক আঘাত করছে পরিচালক নুরুজ্জামান ও শহীদকে। কোনোমতে তাদের দুজনকে উদ্ধার করলাম। নিয়ে এলাম ইপিআরের ভিতরে নিরাপদ স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের বলয়ে। কিন্তু ততক্ষণে ইপিআরের অমুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র নিয়ে নিয়েছে। তারা গুলি শুরু করল। খুঁজতে থাকল মুক্তিযোদ্ধাদের। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা অবস্থানে। রক্তাক্ত মেজর নুরুজ্জামান ও আনোয়ারুল আলম শহীদকে হাসপাতালে নেওয়া দরকার। কিন্তু বের হওয়ার পথ নেই। গুলির জবাবে মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা অবস্থান নেন। মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা অবস্থান না নিলে আমরা কেউ বাঁচতাম না। গোলাগুলির শব্দে ঢাকা শহর কেঁপে উঠতে থাকে। এভাবে গোলাগুলিতে ঢাকাবাসী আতঙ্কিত হয়। বিশেষ করে ধানমন্ডি এবং আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে বেশি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা তখন এখনকার মতো এত বড় শহর ছিল না। ছোট্ট শহর। চারদিকে খবর ছড়িয়ে পড়তে থাকে। সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা নুরুজ্জামানের ওপর হামলার খবর পৌঁছে যায় ক্যান্টনমেন্টে। সশস্ত্র বাহিনী প্রধান আতাউল গনি ওসমানী ৪৬ ব্রিগেডের অধিনায়ক কে এম শফিউল্লাহসহ সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে চলে আসেন পিলখানার গেটে। মুহুর্মুহু গুলির শব্দে তারা ভিতরে প্রবেশ করতে পারছিলেন না। তারা এসেছেন নুরুজ্জামানসহ আমাদের উদ্ধার করতে। সরোয়ার মোল্লার কাছে জানতে চাই তারা পরিবেশ পাননি না সাহস পাননি? জবাবে তিনি বললেন, দুটোই হতে পারে। তারা বাইরে অপেক্ষা করছেন এ খবর ভিতর থেকে আমরা পাই। কিন্তু গুলির ভিতরে আমাদের পক্ষে বাইরে আসার মতো অবস্থা ছিল না। খবরটা বঙ্গবন্ধুর কাছে চলে যায়। তিনি বললেন, পিলখানা যাব। তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা এবং উপস্থিত সবাই না করলেন। সবাই বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তার কথা ভাবছিলেন। বঙ্গবন্ধু গাড়ি তৈরি করতে বললেন। দ্রুততম সময়ে গাড়িতে উঠলেন। গাড়ি পিলখানার গেটে এলো। বঙ্গবন্ধু এসে দেখলেন, সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে ওসমানী বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধুকে সবাই অনুরোধ করলেন ভিতরে প্রবেশ না করতে। তিনি কারও কথা শুনলেন না। ধানমন্ডির দিক থেকে সোজা প্রবেশ করলেন পিলখানায়। তিনি খবর নিলেন নুরুজ্জামান কোন দিকে আছে। সেদিকে চলতে থাকলেন। বঙ্গবন্ধু পিলখানা প্রবেশের খবরে মুহূর্তে পরিস্থিতি বদলে যায়। সরোয়ার মোল্লা বললেন, আকাশছোঁয়া ইমেজ তখন বঙ্গবন্ধুর। তিনি জাতির পিতা। গুলির মাঝখানে তিনি আসতেই সবাই অস্ত্র ফেলে সটকে পড়তে থাকে। তিনি কোনো কিছুর তোয়াক্কা করলেন না। গুলি থেমে গেল মুহূর্তে। বঙ্গবন্ধু উদ্ধার করলেন রক্তাক্ত পড়ে থাকা মেজর নুরুজ্জামান ও আনোয়ারুল আলম শহীদকে। তিনি সরোয়ার মোল্লা ও আহত দুজনের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে সব শুনলেন। আহত দুই কর্মকর্তাকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠালেন চিকিৎসার জন্য। গম্ভীর মুখে বের হলেন পিলখানা থেকে। বঙ্গবন্ধু এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিলখানায় প্রবেশ করবেন কেউ ভাবতে পারেনি। সরোয়ার মোল্লা বলেন, এমনকি আমরাও কল্পনা করতে পারিনি। হিমালয় সমান উচ্চতার সাহসী মানুষটি এভাবে প্রথম গোলাগুলি মোকাবিলা করেন দেশে ফিরে এসে।

সরোয়ার মোল্লা বলেন, এ ঘটনার পর বঙ্গবন্ধু বুঝলেন ইপিআরের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা ছাত্র, যুবকদের মিলবে না। মানসিকভাবে সবাই আলাদা অবস্থানে। তিনি তখন দুটো বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। সীমান্ত পাহারার জন্য ইপিআর সদস্যদের নিয়ে তিনি গঠন করলেন বাংলাদেশ রাইফেলস বা বিডিআর। যার পরবর্তিত নাম বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ বা বিজিবি। আর মুক্তিযুদ্ধফেরত ছাত্র, যুবকদের নিয়ে অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গঠন করলেন জাতীয় রক্ষীবাহিনী জেআরবি। মন্ত্রিসভার পরের বৈঠকে এ সিদ্ধান্তগুলো পাস হয়। বাংলাদেশ রাইফেলসের প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান লে. কর্নেল সি আর দত্ত। আর রক্ষীবাহিনীর পরিচালক পদে মেজর নুরুজ্জামান, উপ-পরিচালক পদে সরোয়ার মোল্লা ও আনোয়ারুল আলম শহীদ। কাজ শুরু করার পর প্রশিক্ষণ ও কাঠামো তৈরি করতে সেনাবাহিনীর মেজর আবুল হাসান খানকে উপ-পরিচালক পদে আনা হয়। একই সঙ্গে যুক্ত করা হয় বেশ কয়েকজন সুবেদার ও হাবিলদার পর্যায়ের নন-কমিশন্ড কর্মকর্তাকে। শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণের জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল। সবাইকে নিয়েই শুরু হয় রক্ষীবাহিনীর যাত্রা। সরোয়ার মোল্লা বলেন, সেই সময়ে অনেক কষ্ট করেছি আমরা। রক্ষীবাহিনী নিয়ে আওয়ামী বিরোধী অনেকে অপপ্রচার করেন। কিন্তু সেই সময়ের বাস্তবতা একবারও কেউ ভাবেন না।

সদ্য স্বাধীন দেশ। পুলিশসহ কোনো বাহিনী গঠন হয়নি। আমাদের টিমের প্রায় সবাই মুুক্তিযোদ্ধা। দেশ গঠনের কর্মস্পৃহা তাদের মাঝে। চুরি, ডাকাতি, চরমপন্থিদের তৎপরতা, দাঙ্গা-হাঙ্গামা বন্ধে শক্ত অবস্থান দরকার ছিল। আমরা ঝাঁপিয়ে পড়লাম সবকিছু স্বাভাবিক করতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সদ্য স্বাধীন দেশে কাজ শুরু করল রক্ষীবাহিনী।   কিন্তু ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। সরোয়ার মোল্লা বলেন, রক্ষীবাহিনীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে বঙ্গবন্ধুকে বিব্রত করতে তৎপরতা বাড়ল নতুনভাবে। গণকণ্ঠ, হককথা, হলিডেতে রক্ষীবাহিনীর বিরুদ্ধে খবর প্রকাশ হতো নিয়মিত। পক্ষে বলার কেউ ছিল না। বিপক্ষের পুস্তিকা-লিফলেট চলে যেত ঘরে ঘরে। পাল্টা জবাব সরকারি দল দিতে পারেনি।

লেখক: সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২১
এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।