ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

মুক্তমত

বঙ্গবন্ধু কন্যাকে চট্টগ্রামে স্বাগতম

তপন চক্রবর্তী, ডেপুটি এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২২
বঙ্গবন্ধু কন্যাকে চট্টগ্রামে স্বাগতম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চতুর্থবারের মতো দায়িত্ব পালন করছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তাঁর শাসনামলে যুগান্তকারী অনেক অর্জন বাংলাদেশের।

এর ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে সক্ষম রাষ্ট্রের মূর্ত প্রতীক হিসেবে।

বিজয়ের মাসে আগামী ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার জনসভা অনুষ্ঠিত হবে নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে। এই জনসভার পরপরই ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রী জনসভা করবেন। এর আগেও বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি ও বিপ্লব তীর্থ চট্টগ্রাম থেকেই নেত্রী নির্বাচনী রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। এসময় চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন নিজের কাঁধে। সে কথা রেখেছেন তিনি। এবারও চট্টগ্রামের জনসভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রাজনৈতিক নির্দেশনা দেবেন বলে আশা করছেন দলীয় নেতারা।

শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের অর্জন অনেক। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি, একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ সম্পন্ন করা, সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি এবং সমুদ্রে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করে ব্লু ইকোনমির নতুন দিগন্ত উন্মোচন, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন ও ছিটমহল বিনিময়, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মহাকাশ জয়, সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ- এতসব অর্জন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলেই হয়েছে।

অর্জনের তালিকায় আরও আছে- কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, মহাসড়কগুলো চার লেনে উন্নীত করা, এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীতকরণ, দারিদ্র্যের হার হ্রাস, যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন, সাক্ষরতার হার ৭৫.৬০ শতাংশে উন্নীত করা।

বছরের প্রথম দিনে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই পৌঁছে দেওয়া, মাদ্রাসা শিক্ষাকে মূলধারার শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করা ও স্বীকৃতি দান, মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ, নারী নীতি প্রণয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, ফাইভ-জি মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহার চালুসহ অসংখ্য ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

উন্নয়নের মহাসড়কে ধাবমান বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে দিবে সরকারের গৃহীত মেগা প্রকল্পগুলো। চট্টগ্রাম ঘিরে যেসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে তা সময়মতো শেষ হলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে এই অঞ্চলে যুগান্তকারী পরিবর্তন হবে যা এসডিজি অর্জন ও ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সহায়ক হবে।  

প্রধানমন্ত্রী যেসব মেগা প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন সেগুলো বাস্তবায়নে অর্থের সংস্থানও করে দিয়েছেন। কক্সবাজারের দোহাজারী-ঘুমধুম রেললাইন স্থাপন প্রকল্প, মীরসরাই, আনোয়ারা ও মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল, এলএনজি টার্মিনাল, কোরিয়ান ইপিজেড, আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, বে-টার্মিনাল, গভীর সমুদ্রবন্দর, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ অনেক বৃহৎ প্রকল্প উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এসব প্রকল্প পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম সারাদেশের মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব পাবে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বরাদ্দ হয়েছে ৭০ কোটি টাকা।

বঙ্গবন্ধুর কৃষি ও পল্লী উন্নয়নের নীতির পথ ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ খাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও পর্যাপ্ত আর্থিক বরাদ্দের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কৃষিবান্ধব নীতি ও সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণের কারণে জীবিকা কৃষি ক্রমান্বয়ে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর হচ্ছে। ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ নামে দেশের সকল গ্রামে নাগরিক সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে। সারাদেশে ১০০টি সড়ক সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৮৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতুগুলো উদ্বোধনের পর যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ১০০টি সেতুর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগেই রয়েছে ৪৫টি। পার্বত্য চট্টগ্রামে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগ- একটি বাড়ি একটি খামার (বর্তমানে আমার বাড়ি আমার খামার), আশ্রয়ণ, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, কমিউনিটি ক্লিনিক, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, বিনিয়োগ বিকাশ এবং পরিবেশ সুরক্ষা বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান ও আয় বৃদ্ধির কার্যক্রম। ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এমডিজি) সাফল্যের পর ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে দেশ। এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হওয়ায় দেশের চিত্র বদলে গেছে।

বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছেন। শেখ হাসিনা দেশকে বদলে দিয়েছেন। বিশ্ব এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২২
টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।