ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

যেতেই যখন হবে, সময়মতো ঘরে যান: গয়েশ্বর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২২
যেতেই যখন হবে, সময়মতো ঘরে যান: গয়েশ্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বক্তব্য দিচ্ছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বিএনপি আন্দোলন যতটুকুই করুক না কেন আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) যেতে হবে। আন্দোলন না করলেও আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) যেতে হবে।

আপনার (প্রধানমন্ত্রী) যাওয়ার ব্যাপারে বিকল্প কোনো পথ খোলা রাখেননি। সুতরাং, যেতেই যখন হবে, সময় মতো ঘরে যান। এখনও সময় আছে। জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বলেন, যা হয়েছে হয়েছে। ফরগিভ অ্যান্ড ফরগেট মি। আমাকে ক্ষমা করেন, আমি আর এ হেন কাজ করিবো না। আমি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের স্বার্থে সরকার থেকে সরে দাঁড়াবো। রাষ্ট্রপতিকে বলবো জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করেন। দেশের বিশিষ্টজনদের দ্বারা সরকার গঠন করতে সহযোগিতা করবো। তাহলে হয়তো আপনার (প্রধানমন্ত্রী) অনেক কলঙ্ক চাপা পড়বে। জনগণের দেশ জনগণকে ফেরত দেন।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কিমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, জেটাব সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ফখরুল আলমসহ সব রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

জনগণ বর্তমান সরকারকে স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দিয়ে বসে আছেন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, বিদেশিরা আর কত স্যাংশন দেবে? জনগণই স্যাংশন দিয়ে বসে আছেন। জনগণের স্যাংশন মোকাবিলা করা কঠিন। এটা কেউ পারেনি।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জনগণ যখন তার অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হয়, সক্রিয় হয়, সাহসী হয়, আর বুক পেতে দেয় গুলি খাওয়ার জন্য, সে জনগণকে কখনও থামিয়ে রাখা যায় না। এ শিক্ষাটা আপনাদের (সরকার) হওয়া উচিত।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে বহু লুট করেছেন, বহু মায়ের বুক খালি করেছেন, অনেক গুম করেছেন। বাকি সময়টা নিরাপদে শান্তিতে বেঁচে থাকুন। জনগণের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিন।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলোতে টাকা নেই, রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকা নেই। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) রিজার্ভের টাকা আপনি গিলে খাননি। রিজার্ভের টাকাগুলি আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সংঘবদ্ধ লুটেরা গোষ্ঠি দিয়ে লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছেন। তাদের সামনে বুক টান করে বলতে পারবেন, আমার চাটার দলেরা খায়? আপনি বলতে পারবেন না। কারণ দরবেশদের সংঘবদ্ধ দল চিৎকার করে বলবে, নেত্রী আমরা খেয়েছি, আপনাকেও দিয়েছি। সুতরাং এর দায় থেকে আপনি মুক্তি পাবেন না।

প্রধানমন্ত্রীকে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের জন্য জাতিকে সহযোগিতা করুন। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) যদি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ পুনরুজ্জীবিত করেন, তাহলে আর আমাদের (বিএনপি) আপনার পতনের আন্দোলন করার দরকার নেই। আর যদি না করেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকা, পিছনে হটার সুযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, আমরা হিটলার, চেঙ্গিস খানসহ পৃথিবীর বহু নৃশংস স্বৈরাচারের গল্প শুনেছি। এ সরকারের পতন বা পদত্যাগের পর তাদের উপর যে নিষ্ঠুরতার ইতিহাস লেখা হবে, তখন আর কেউ চেঙ্গিস খান, হিটলারের গল্প বলবে না। সবকিছুর সীমা আছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জনগণের দাবি জনগণ আদায় করার জন্য কোনো রাজনৈতিক দলের ডাকে যখন উপস্থিত হয়, তখন সেটা নিজ দায়িত্বে জনগণ সফল করে। বিএনপির ১০টি সমাবেশে তাই হয়েছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএসপিপির সভাপতি ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও বিএসপিপির সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া, বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি হারুন অর রশিদ ও অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (অ্যাব) সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজু।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২২
এসসি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।