ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

গণতন্ত্র, নিরাপত্তা ও সমতার দাবিতে নারী সংহতির অবস্থান কর্মসূচি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৩
গণতন্ত্র, নিরাপত্তা ও সমতার দাবিতে নারী সংহতির অবস্থান কর্মসূচি

ঢাকা: আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গণতন্ত্র, নিরাপত্তা ও সমতার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে মশাল মিছিল করেছে নারী সংহতি।

বুধবার (৮ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত এ কর্মসূচি শুরু হয় সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ঘটনায় নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নীরবতা পালনের মাধ্যমে।

নারী সংহতির সভাপতি শ্যামলী শীলের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন সহ-সাধারণ সম্পাদক রেবেকা নীলা এবং দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক নাসরিন সুমি।  

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন- নৃবিজ্ঞানী ও গবেষক রেহনুমা আহমেদ, গবেষক ও সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সংগঠক বীথি ঘোষ, কথা সাহিত্যিক ও মানবাধিকার কর্মী জহরত আরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, শিক্ষক শিল্পী বড়ুয়া বাপ্পী এবং ছাত্র ফেডারেশনের মহানগর শাখার নেতা রূপক কুমার রায় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা উমামা ফাতেমাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা ও সদস্যরা।

বিভিন্ন ক্যাম্পাসে যে যৌন সন্ত্রাসের দৌরাত্ম্য দেখা যাচ্ছে তার প্রতিকার করতে ব্যর্থ হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিৎ বলে দাবি করেন নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ। তিনি আরও বলেন, নারীর যে ভোটাধিকারের দাবি থেকে নারী আন্দোলনের সূত্রপাত হলেও আজ বাংলাদেশে নারী-পুরুষ কারো ভোটাধিকার নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্ট তথাকথিত ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের অত্যাচারে নারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠলেও কর্তৃপক্ষ বরাবরের মতো দায় এড়িয়ে উল্টো নিপীড়িতদের ওপরই দোষ চাপাচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সংঘবদ্ধ প্রতিরোধের বিকল্প নেই বলে মত ব্যক্ত করেন ছাত্র ফেডারেশনর ঢাকা মহানগরের দপ্তর সম্পাদক নুসরাত হক।  

নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে নারী সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে, অন্য কেউ তাদের অধিকার এনে দেবে না বলে মত ব্যক্ত করেন সাহিত্যিক জহরত আরা।  

কবি সখিনা কাইয়ুম অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে স্বরচিত নারীবাদী কবিতা আবৃতি করেন। সংহতি জানিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সংগঠক প্রাপ্তি তাপসী।

নারী সংহতির সংগঠক সুমনা লুৎফন্নাহার বলেন, কুমিল্লায় তনু হত্যাকাণ্ড, মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত হত্যা এবং ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মুনিয়া হত্যাসহ অধিকাংশ ক্ষেত্রে যৌন প্রতিহিংসার শিকার নারীরা কোনো বিচার পাচ্ছেন না।  

রাষ্ট্রের উদাসীনতার পাশাপাশি সমাজের বৃহত্তর অংশের নারীর অধিকার বিষয়ে সংবেদনশীলতা না থাকাই এ পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে তিনি দাবি করেন।  

একদিকে- রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গণতান্ত্রিক চর্চার পরিবেশ বিনষ্ট করতে থাকার কারণে নারী মুক্তির বৃহত্তর আন্দোলন বেগবান হচ্ছে না, অন্যদিকে- রাজনীতিতে নারীর কার্যকর অংশগ্রহণ না থাকায় রাষ্ট্রের গণতন্ত্র-বিরোধী আচরণের বিরুদ্ধে কার্যকর রাজনৈতিক প্রতিরোধও গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা চন্দ।

সভাপতির বক্তব্যে শ্যামলী শীল বলেন, সমাজে ও রাষ্ট্রে গণতন্ত্র, নারীর নিরাপত্তা এবং নারী-পুরুষ সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য জাতি-ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী নির্বিশেষে সকল নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনে যুক্ত করাই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল আহ্বান হওয়া উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৩
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।