ঢাকা: অর্থনৈতিক-সামাজিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের উন্নয়ন দেশের মানুষের জীবনমানে যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে তা আন্তর্জাতিক মূল্যায়নেও উঠে আসছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ নিয়ে প্রভাশালী আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের নিবন্ধসহ মার্কিন প্রেসিডেন্টের চিঠিতেও সেই মূল্যায়নই স্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা।
আওয়ামী লীগের বর্তমান টানা তিন মেয়াদের সরকারের উন্নয়ন ও অর্জন আন্তর্জাতিকভাবে অনেক সময়ই বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন মূল্যায়নে উঠে এসেছে। বিভিন্ন সময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রভাবশাী ব্যক্তি, সংস্থা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে প্রশংসা করা হচ্ছে সংকট মোকাবিলায় নেওয়া পদক্ষেপ ও তার সফল বাস্তবায়নে। এগুলোর পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ব্লুমবার্গের যে মূল্যায়ন সেগুলোকে অত্যান্ত তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবেও দেখছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লিখেছেন, আমরা শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সবচেয়ে বড় অবদানকারি হিসেবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের রক্ষায় বাংলাদেশের প্রদর্শিত অঙ্গীকারকে সাধুবাদ জানাই। গ্লোবাল অ্যাকশনপ্লানের মন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ আয়োজনের জন্য আমরা বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাই। এটি বৈশ্বিক মহামারি শেষ করার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে তুলে ধরেছেন।
মিয়ানমার থেকে আসা ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার প্রসংশা করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন লিখেছেন, আপনি সহানুভূতি ও উদারতার মাধ্যমে বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি জে ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের জনগণকে উষ্ণ অভিনন্দ জানিয়ে বলেন, আপনারা যখন ৫৩তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছেন, তখন বাংলাদেশের গর্ব করার অনেক কারণ রয়েছে। দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি, ক্রমবর্ধমান সুশিক্ষিত কর্মশক্তি এবং একটি গতিশীল যুব জনসংখ্যার সঙ্গে বাংলাদেশ দ্রুত একটি আঞ্চলিক নেতা হয়ে উঠছে।
এদিকে এর পরপই বিশ্বখ্যাত অর্থনীতি বিষয়ক সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গ এক নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে লিখেছে, তিনি (শেখ হাসিনা) টানা চতুর্থ মেয়াদে জয়ী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থ মেয়াদে সম্ভাব্য জয়ী হওয়ার কারণ এটা নয় যে তার অনেক প্রতিপক্ষ কারাগারে আছেন বা আইনি ফাঁদে পড়েছেন। বরং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তার সাফল্যের কারণেই এটা ব্যাপকভাবে প্রত্যাশিত।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, অর্থনৈতিক-সমাজিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নে শেখ হাসিনার সরকার যে সফলতা দেখিয়েছে এবং দেখিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব নেতৃত্ব এবং বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় এই সংবাদ সংস্থার বক্তব্যে সে মূল্যায়ন প্রকাশ পেয়েছে। গত ১৪ বছরে সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নের সুফল তো রয়েছেই, পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে করোনা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে যে বিশ্ব মন্দা তার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার বিষয়টি বিশ্বের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।
গত তিন বছর ধরে ধারাবাহিক সংকটে মধ্য দিয়ে চলছে বিশ্ব অর্থনেতিক পরিস্থিতি। দুই বছর চলেছে বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাবে অর্থনৈতিক স্থবিরতা। করোনার কারণে সৃষ্টি অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই শুরু হয় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে খাদ্যের ওপরও।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, দুই বছর কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারে বিশাল সফলতা রয়েছে। বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে মানুষের জীবন রক্ষা ও জীবিকাকে সচল রেখে বিপর্যয় এড়াতে সক্ষম হয়েছে। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগিতা দিয়ে সরকার ব্যবসা-বাণিজ্যকে গতিশীল রাখার মাধ্যমে অর্থনেতিক বিপর্যয় ঠেকাতে পেরেছে। এর পরই গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে বিশ্বব্যাপী চলছে অর্থনৈতিক মন্দা, খাদ্য সংকট। এই পরিস্থিতিতেও সরকারের আগাম বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব এড়ানো সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের যে উন্নয়ন অগ্রগতি তা শেখ হাসিনা সরকারের এই পদক্ষেপ এবং সফল বাস্তবায়নেই ফল। যা আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান থেকে মূল্যায়ন হচ্ছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, মানুষের জন্য যেটা করতে হবে শেখ হাসিনা সেটা করে যাচ্ছেন। সেই বাস্তবতারই স্বীকৃতি যেটা তারা (নিবন্ধ ও বিবৃতি) দিয়েছেন। মানুষের যে মৌলিক বিষয়গুলো অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা সেগুলোর নিশ্চয়তা শেখ হাসিনা দিচ্ছেন। গণতান্ত্রিকভাবে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় আনার ফলেই এটা হয়েছে। রাজনীতি যে মানুষের জন্য সেটা শেখ হাসিনা কথায় না কাজে দেখিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বের ফলে অর্থনৈতিক, সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন অগ্রগতি বিশ্ববাসীর কাছে আজ দৃশ্যমান। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রার বিশ্ব নেতৃত্ব মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রশংসা করছেন। শেখ হাসিনার বিকল্প কোনো নেতৃত্ব নেই, তাই তাকেই আবারও ক্ষমতায় আসার উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছেন তারা।
বাংলাদেশে সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২৩
এসকে/এমএমজেড