ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

সিসিক নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত আরিফুল হকের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, মে ১, ২০২৩
সিসিক নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত আরিফুল হকের

সিলেট: অনেকটা ‘নাটকীয় সমাবেশে’ প্রকাশ্যে ক্ষোভ ঝাড়লেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। মেয়র পদে হ্যাটট্রিক মিশনে নামা নিয়ে এতদিন নিশ্চুপ ছিলেন তিনি।

এবার ক্ষোভ প্রশমিত করলেন মে দিবসে। সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে আবারও প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত ছিল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এ সদস্যের বক্তব্যে।  

সোমবার (১ মে) দুপুরে নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে মে দিবসের র‌্যালি পরবর্তী সমাবেশে নেতাকর্মীদের নিয়ে হঠাৎ জনসম্মুখে আসেন তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে বহিরাগত আখ্যা দিয়ে মেয়র পদে ক্ষমতাসীন দলের বঞ্চিতদের ইঙ্গিতও ছিল তার কথায়।   

আরিফুল হক বলেন, অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। তবে সিলেটের প্রেক্ষাপটে আমরা (বিএনপি) নির্বাচনে যাব। কেন আমরা সিলেট সিটি করপোরেশনে অংশগ্রহণ করব সে বিষয়ে আগামী ২০ মে রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশ করে এর ব্যাখ্যা দেবেন তিনি।

মহান মে দিবস উপলক্ষে সিলেটে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের র‍্যালি শেষে দুপুরে নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করে দলটি।  

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরিফুল হক বলেন, সিলেটের মানুষের জেগে ওঠার প্রমাণ রয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধে। এখানের মানুষ জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ মাটিতে শুয়ে আছেন হযরত শাহজালাল (র.)সহ ৩৬০ আউলিয়া। এ মাটির বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নেবে, মহান রাব্বুল আলামিন তাদের ছাড়বেন না। অতীতেও কেউ পার পায়নি, ভবিষ্যতেও পার পাবে না।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রশাসনে বদলির বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে যারা বদলি হয়ে আসছেন। তাদের বায়োডাটা আমাদের কাছে চলে এসেছে। তারা স্কুল জীবন থেকে কে কোন সংগঠন করতেন। তারা নীল নকশা নিয়ে এখানে এসেছেন। আজকে দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে, সিলেটের সব রাজনৈতিক দলের কাছে, সব মানুষের কাছে এমন অবস্থা সামনে এসেছে, যেন সিলেটে কোনো মানুষ নেই, নেতৃত্ব নেই। বাইরে থেকে নেতৃত্ব আনা হয়েছে আমাদের ছবক দেওয়ার জন্য। আমরা এটা পরিহার করি।

আরিফুল হক বলেন, সিলেটের মানুষ তথা এ মাটির সন্তানরা নেতৃত্ব দিতে পারবে। বাইরে থেকে কেউ এসে নেতৃত্ব দিয়ে আমাদের তাদের দাস বানাতে পারবে না। আমরা কারো দাস বনতে চাই না। আমাদের রক্তচক্ষু দেখিয়ে লাভ হবে না। কর্তৃপক্ষ যারাই থাকেন না কেন আমরা বলতে চাই, মানুষ ফুসে ওঠেছে, আমাদের মা-বোনরাও প্রতিবাদ করতে নেমে আসবেন।

তিনি বলেন, যারা সিলেটে দীর্ঘদিন থেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের বাদ দিয়ে বাইরে থেকে এনে বিভিন্ন নেতাদের দিয়ে নেতৃত্ব দেবেন, আমরা কী রাজপথে দস্তখত দিয়েছি? আমাদের কী আপনাদের প্রজাতন্ত্র আইনের মতো ব্যবহার করবেন- তা হতে পারে না।

আরিফুল হক বলেন, সিলেটের মানুষ জেগে ওঠেছে। গত ১০টি বছর আমি জনসেবা করেছি। এ নগরের মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন, সহযোগিতা করেছেন, তাদের কাছে আমি চিরঋণী। আমার উচিত মুরব্বি ও যুবকদের সামনে রেখে আমি আমার অবস্থান পরিষ্কার করা। ইনশাহআল্লাহ আগামী ২০ মে ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করব।

মেয়র আরিফ বলেন, আমার রাজনৈতিক দল বিএনপি এদেশের জনগণের অধিকার আদায় ও ভোটের অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে। আপনার ভোট আপনি দেবেন, যাকে খুশি তাকে দেবেন। নীল নকশার নির্বাচন মানি না, মানবেন না।

তবে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিলেও মেয়রের আপত্তি ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণে। ইভিএম দিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে অনির্বাচিত করার সুযোগ রয়েছে মনে করেন তিনি। একইসঙ্গে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত সরকারের প্রহসন বলেও উল্লেখ তিনি করেছেন।

তার মতে, ইভিএম তাদের মেকানিজমের অন্যতম একটা বিষয়। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলেও সে ভোট অন্য প্রার্থীর হয়ে যাবে।  

আরিফুল হক চৌধুরী অভিযোগ করেন, সিলেটের দীর্ঘদিনের সম্প্রীতি নষ্ট করতে প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল করা হচ্ছে। আধ্যাত্মিক নগরে এমন অপচেষ্টা আপামর জনগণ রুখে দেবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, মে ০১, ২০২৩
এনইউ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।