ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর তিন দেশ সফরের মূল কারণে দেশের মানুষকে বাঁচানো। তা ছাড়া দেশে যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে তাদের নিজ দেশে ফেরানো।
সোমবার (১ মে) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগ আয়োজিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন সফর সম্পর্কে বিএনপির নেতিবাচক প্রচারণার সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যারা এই সফরের বিরুদ্ধে বলে তাদেরকে কিছু বলার নেই। তারা হিংসার আগুনে জ্বলে। শেখ হাসিনার এবারের সফর বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এ সফর বাংলাদেশকে আত্মশক্তিতে বলীয়ান করেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা বিদেশ সফরে আছেন। প্রথমে জাপানে গিয়েছেন, এখন ওয়াশিংটন আছেন। এরপরে তিনি ব্রিটেনে প্রিন্স চার্লসের অনুষ্ঠানে যাবেন। শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করতে যাননি। তিনি গিয়েছেন দেশের উচ্চতা আরও বাড়াতে। এ সফরের গুরুত্ব যারা বোঝে না, তারাই বঙ্গবন্ধুর কন্যার এ সফর নিয়ে কটাক্ষ করছে। বিএনপি শেখ হাসিনার উপরে হিংসার জ্বালায় মরে। বাংলাদেশে আজকে যারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে কষ্ট পাচ্ছে, সেই সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে শেখ হাসিনা বিদেশে গেছেন। কক্সবাজারে যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আমাদের জন্যে বাঁধা, তাদের এ দেশ থেকে ফেরাতে বন্দোবস্ত করতে গেছেন।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতু থেকে সরে গিয়ে তারা যে ভুল করেছে সেটা স্বীকার করে বিশ্বব্যাংকের প্রধান ঋণ দিতে চেয়েছেন। বাংলাদেশে ৫০০ মিলিয়ন ডলার আসার কথা বিশ্বব্যাংক থেকে। অন্যদিকে বাজেট সহায়তার জন্য জাপানও ৩০ বিলিয়ন ইয়েন দেবে বলেও ওবায়দুল কাদের জানান।
বিএনপি রাজনীতিতে পরাজিত। এখন তাদের টার্গেট অর্থনীতি। নব কৌশলে তারা অর্থনীতিতে আগুন জ্বালাতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সরকারের এ মন্ত্রী। তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলনে পরাজিত। নির্বাচনে এলে দেখা যাবে কত ধানে কত চাল। সিটি নির্বাচনেও দেখবেন ঘোমটা পরা প্রার্থী। বাইরে দেখাবে তাদের প্রার্থী নেই, তলে তলে থাকবে তারেক জিয়ার প্রার্থী।
বিএনপির আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলন মানুষ বুঝে গেছে। এসব ভুয়া, ২৭ দফা ভুয়া। যারা গণ আন্দোলনই করতে পারেনি তারা গণঅভ্যুত্থান কীভাবে করবে। বিএনপি পথহারা পথিকের মতো দিশেহারা।
মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সম্পাদক বলেন, লুটপাটের হাওয়া ভবন, মাগুরা মার্লা নির্বাচন, প্রহসনের নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ ফিরে যাবে না। এদেশের মানুষ অর্থ পাচারকারীর কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবে না।
জনগণের সঙ্গে ভালো আচারণ করতে এ সময় দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের। তাদের সতর্ক করে আওয়ামী লীগ সম্পাদক বলেন, মানুষের সাথে ভালো আচরণ করতে হবে। তারা তাৎক্ষণিকভাবে হয়তো কিছু বলবে না। তবে ভালো আচরণ না করলে এদেশের জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দেবে। শেখ হাসিনা কাউকে রেহাই দেবেন না। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা না থাকলে নমিনেশন দেবেন না।
জনপ্রিয়তা নেই এমন কাউকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেবে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অর্থ পাচারকারী লুণ্ঠনকারী, বির্তকিত লোকের আওয়ামী লীগে স্থান নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের পতাকা সমুন্নত রাখা হবে। এজন্য সকলে নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। এখন থেকেই মাঠে থাকতে হবে নেতাকর্মীদের।
শ্রমিক লীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শ্রমিক লীগ ঐক্যবদ্ধ। এই ঐক্যে যেন চিড় না ধরে। এই ঐক্যকে আরও দৃঢ় করতে হবে। বিএনপি হিংসার আগুনে জ্বলছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের জ্বালায় ভুগছে। বাংলার মানুষ ভালো আছে এটাতে মির্জা ফখরুলের ভালো লাগে না। বিএনপি এটা সইতে পারে না। ৫২ দল, ১২ দল, ১৪ দল, একবার শুনি ২৭ দফা, মানববন্ধন, এরপরে গোলাপবাগে গরুর হাঁটে গিয়ে হোঁচট খেয়ে আর দাঁড়াতে পারেনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন। মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, মে ১, ২০২৩
এনবি/এমজে