ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকারবিরোধী আন্দোলন প্রতিহত করতে প্রস্তুত আ.লীগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৩
সরকারবিরোধী আন্দোলন প্রতিহত করতে প্রস্তুত আ.লীগ

ঢাকা: দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে বিএনপি লাগাতার আন্দোলনের কর্মসূচি দিচ্ছে বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। তবে আন্দোলনের নামে যে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগ ও সরকার প্রস্তুত বলে জানান তারা।

আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আগামী ১৯ ও ২০ মে এবং ২৬ ও ২৭ মে ঢাকা মহানগরসহ জেলায় জেলায় জনসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

বিএনপির কর্মসূচি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে যে আন্দোলন করছে, তা কখনো সফল হবে না। আদালতের রায়ে বাতিল হয়ে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে কথা বিএনপি বলছে, তাতে জনগণের কোনো সমর্থন নেই। এ কারণেই বিএনপি দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলনের কথা বলে আসলেও তাতে জনগণ সাড়া দেয়নি এবং আন্দোলনে জনসমর্থন পায়নি। এরপরও বিএনপি আন্দোলনের কথা বলছে এবং সরকারের পতন ঘটানোর ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি দিচ্ছে। আন্দোলনের নামে এসব কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির পথ খুঁজছে। এ কারণেই দলটির এসব কর্মসূচি বলেও আওয়ামী লীগের ওই নেতারা জানান।

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে বিএনপি। দাবি মেনে না নিলে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানোর ঘোষণা দিয়েছে দলটি। তবে আওয়ামী লীগ বরাবরই বলে আসছে উচ্চ আদালতে বাতিল হয়ে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর ফিরিয়ে আনা হবে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের সময় নির্বাচিত অর্থাৎ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারই বহাল থাকবে। এ অবস্থায় বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও নির্বাচন সংবিধান নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধাকরা বার বার জানিয়ে আসছেন। এই পরিস্থিতিতেও আগামী ১৯ ও ২০ মে এবং ২৬ ও ২৭ মে চার দিনের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি।

তবে সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির এই আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির কর্মসূচির দিন আওয়ামী লীগও কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকছে। শান্তি সমাবেশের নামে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো কর্মসূচি দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের মাঠে রাখছে। আগামীতেও বিএনপির কর্মসূচির দিন আওয়ামী লীগ মাঠে থাকবে বলেও দলটির নেতারা জানান।

তারা বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অশান্ত এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকার ও আওয়ামী লীগকে বেকায়দায় ফেলতে চায়। এ কারণেই যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ মাঠে আছে, আগামীতেও থাকবে। পাশাপাশি সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির কোনো চেষ্টা হলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, বর্তমানে বিএনপি যেভাবে কর্মসূচি পালন করছে, সেটা কোনো সমস্যা না। কিন্তু এই অবস্থায় থাকবে এ নিশ্চয়তা নেই। অতীতের মতো সহিংসতা, নাশকতার পথ বেছে নিতে পারে সরকারের এমন আশঙ্কা রয়েছে। তবে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হলে আওযামী লীগের কর্মীদেরও পাল্টা অ্যাকশনে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।

গত ১৩ মে যুবলীগের শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের বক্তব্যেও এটা স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে যদি বিএনপি নৈরাজ্য সৃষ্টি করে তাহলে ছাড় দেওয়া হবে না। সরকার আছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ব্যবস্থা নেবে। আর রাজনৈতিকভাবেও আওয়ামী লীগ জবাব দেবে।

এদিকে বিএনপির কর্মসূচি ও আওয়ামী লীগের অবস্থান বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি একটা রাজনৈতিক দল হিসেবে কর্মসূচি দিতেই পারে, সেটা কোনো সমস্যা না। তবে আন্দোলনের নামে তারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করতে পারে, এ জন্য আমরা সতর্ক আছি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে আছে, আগামী দিনেও থাকবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা প্রতিহত করবো। সরকার আছে, সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী আছে, তারাও ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৩
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।