ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সারাদেশে সরকার পতনের আন্দোলন দানা বেঁধে উঠেছে: সাকি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৭ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
সারাদেশে সরকার পতনের আন্দোলন দানা বেঁধে উঠেছে: সাকি

বরিশাল: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, সারাদেশে সরকার পতনের আন্দোলন দানা বেঁধে উঠেছে। বিরোধী দলগুলো আন্দোলন করছে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য।

সংবিধান সংস্কার ও শাসন ব্যবস্থা বদলের কার্যকর আন্দোলন গড়ে উঠতে শুরু করেছে।  

তিনি বলেন, এ গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামকে সরকার ভয় পাচ্ছে। জনগণের সভা, সমাবেশ করার সাংবিধানিক অধিকারকে আওয়ামী লীগ প্রতিহত করার হুমকি দিচ্ছে। তারা রাজপথে গুন্ডা বাহিনী দিয়ে ফ্যাসিবাদী কায়দায় আন্দোলন দমন করতে চায়। আওয়ামী লীগ এখন রাজনৈতিক দল হিসেবে সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে গেছে। এখন তারা মিথ্যা প্রচারণাসহ নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে সরাসরি পুলিশ ও গুন্ডা বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে জনগণের ওপর সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাতে চায়। এগুলো হচ্ছে পতনের আগ মুহূর্তের লম্ফঝম্প। এ লম্ফঝম্প বেশি দিন টিকবে না। জনগণ যখন রাজপথ দখলে নেবে এ স্বৈরাচারী শক্তি পালাতে বাধ্য হবে। আমাদের সেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে।

শনিবার (২৭ মে) বিকেলে বরিশাল নগরের অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে ভয়মুক্ত ও পরিবেশবান্ধব বরিশাল গড়ার প্রত্যয় নিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের ১ম বরিশাল জেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এ স্বৈরাচারী সরকার দেশের ১৪ কোটি মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য পরিণত করেছে। ক্ষমতাকে জমিদারি বানিয়ে এমন লুটপাট করেছে যাতে মানুষের জীবনে আজ নাভিশ্বাস উঠেছে। প্রতিদিন মানুষের পকেট কাটা যাচ্ছে। কোনো কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এসবের ওপর সরকারের ন্যূনতম কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকার নিজেই সিন্ডিকেট করে মানুষের পকেট কেটে ক্ষমতা ছাড়ার আগে পালিয়ে যাওয়ার জন্য কীভাবে বিদেশে টাকা পাচার করা যায় সেই প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। কাজেই এদের হাতে মানুষের জীবন নিরাপদ নয়। এরা দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ফেলছে। তারা নিজের গদি টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। আমরা সেটা হতে দেব না। আমরা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলে এ সরকারের পতন ও শাসন ব্যবস্থার বদল ঘটিয়ে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করবো। গণমানুষের পক্ষের দল হিসেবে আমরা সাধারণ মানুষের বাঁচার অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ঘটাবো।

গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল জেলা কমিটির আহ্বায়ক দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলুর সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আমজাদ হোসেন।

বরিশাল জেলা সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য সচিব সাকিবুল ইসলাম সাফিনের সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য দেন- গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ও চট্টগ্রাম জেলার সমন্বয়কারী হাসান মারুফ রুমি, কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও বাংলাদেশ বহুমুখী শ্রমজীবী ও হকার সমিতির সভাপতি বাচ্চু ভূঁইয়া, বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আলম, ১ম বরিশাল জেলা সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক আরিফুর রহমান মিরাজ, গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল সদর উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব ইয়াসমিন সুলতানা, কড়াপুর ইউনিয়ন কমিটির আহ্বায়ক নূরজাহান বেগম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি জাবের মোহাম্মদ, সহ-সভাপতি হাছিব আহমেদ।

সভাপতির বক্তব্য দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু বলেন, সারাদেশে পরিচ্ছন্ন-পরিবেশবান্ধব নগরী হিসেবে বরিশালের সুনাম ছিল। কিন্তু বিগত এক দশকে বরিশালের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও রাজনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। সমগ্র দক্ষিণ অঞ্চলের রাজনীতি এক পরিবারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। গত কয়েক বছরে নগরীতে ট্যাক্সের নামে নানা কায়দায় জনগণের পকেট কাটা হয়েছে। বিনিময়ে নাগরিক সেবা বাড়েনি মোটেও। বরিশাল নগরী আজ চাঁদাবাজির নগরীতে পরিণত হয়েছে। নগরীর অধিকাংশ সড়কের বেহাল দশা। খালগুলো দখল হয়ে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে বরিশাল পানিতে তলিয়ে যায়। বরিশালের পরিবহন খাত সম্পূর্ণ সিন্ডিকেটের হাতে বন্দি। তাই এসব পরিস্থিতি থেকে জনগণ আজ মুক্তি চায়। জনগণ প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না। দেশে কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে সর্বত্র জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আমরা জনগণের পক্ষের শক্তি হয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা দীর্ঘদিন বরিশালে বিভিন্ন শ্রমজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের অধিকার আদায়ে লড়াই করে যাচ্ছি। আগামীতে আমরা আরও বৃহৎ পরিসরে গণমানুষের অধিকার আদায়ে লড়াই করে গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো।

উল্লেখ্য, দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলুকে সমন্বয়কারী ও আরিফুর রহমান মিরাজকে নির্বাহী সমন্বয়কারী করে ৪টি পদ খালি রেখে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট বরিশাল জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৭ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
এমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।