ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

‘এবার দিনে ভোট ডাকাতির আয়োজন করেছে আ. লীগ’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২৩
‘এবার দিনে ভোট ডাকাতির আয়োজন করেছে আ. লীগ’ বক্তব্য রাখছেন জোনায়েদ সাকি।

খুলনা: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, এবার রাতে নয়, দিনের বেলায় ভোট ডাকাতির আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ। এই কারণে তারা আরপিও সংশোধন করেছে।

যাতে ভোট ডাকাতি জায়েজ হয়। এদিকে আন্দোলন-সংগ্রাম দমন করতে অত্যাবশকীয় পরিষেবা আইন ও ডিজিটাল থেকে সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ নানা ধরনের আইনি পরিবর্তন তারা করছেন এবং করতে থাকবেন।  

গণসংহতি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠার লড়াই-সংগ্রামের ২১ বছর এবং রাজনৈতিক দলের আট বছর উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা কমিটি ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংগ্রাম ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ৩১ দফা কর্মসূচি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি প্রধান আলোচক হিসেবে এ কথা বলেন।

শনিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে নগরের শীববাড়ী মোড়ের অদূরে মো. শহীদুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা কমিটির আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল এবং সঞ্চালনা করেন জেলা সদস্য আল আমিন শেখ।

সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির খুলনা মহানগর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, মহানগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা সদস্য সচিব কামরুজ্জামান টুকু, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. অলিয়ার রহমান শেখ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) খুলনা মহানগর সভাপতি খান লোকমান হাকিম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শেখ আবদুল হালিম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন সাতক্ষীরা জেলা সংগঠক এস এম আলফাত হোসেন, খালিশপুর-দৌলতপুর জুটমিল যৌথ কারখানা কমিটির সভাপতি ও সিবিএ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মনির হোসেন মনি, নওয়াপড়া পৌরসভার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসেদ আলম শমসের, দৌলতপুর জুটমিল কারখানা কমিটির সভাপিত নূর মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক মো. মোফাজ্জেল হোসেন, প্লাটিনাম জুটমিলের শ্রমিকনেতা মো. নূরুল ইসলাম, ক্রিসেন্ট জুটমিলের শ্রমিকনেতা মোশারেফ হোসেন, শ্রমিকনেতা শামসুজ্জোহা ডিয়ার, সামস সারফিন সামন প্রমুখ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্য খুলনা মহানগর সদস্য সচিব কাজী মোতাহার রহমান বাবু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির খুলনা জেলা সম্পাদক কে এম আলীদাদ।

জোনায়েদ সাকি বলেন, আজকে মানুষকে মাঠে নামতে হবে। বাংলাদেশের কঠিন সময়ে আপনারা যদি বিভ্রান্ত হন, তাহলে আপনারা সময়ের যে দাবি, সেখান থেকে বহুদূরে সরবেন। এ দেশের ধ্বংসের জন্য আপনারাও দায়ী থাকবেন। কাজেই আমরা জনগণকে বলবো, আপনারা রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিন। আমরা বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে নেই। আমরা বাংলাদেশের মানুষের দিকে তাকিয়ে আছি। দেশের মানুষ দেশের আগামী ভবিষ্যৎ তৈরি করবে।

তিনি বলেন, সরকার নাকি সভা ও সমাবেশে কোনো বাধা দেয় না, তারা নাকি এদেশে আইনশৃঙ্খলা খুব বজায় রেখেছে, তারা নাকি একটি সুষ্ঠু ভোট করবে। এসব কাজের পরে সারা দুনিয়ায় তারা যখন মাথা হেইট করে, দেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসে, তখন আবার আওয়ামী লীগ আবদার করে, আমরা কেন তাদের পক্ষ নিচ্ছি না, দেশের পক্ষ নিচ্ছি না। আমেরিকা কিংবা অন্যরা বাংলাদেশকে নানাভাবে চাপ দিয়ে তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে যাচ্ছে।

গণসংহতি আন্দোলনের এ নেতা বলেন, দেশের মানুষের ভোটের অধিকার, সভা-সমাবেশের অধিকার কেড়ে নিয়ে এখন যখন বিশ্বের কাছে মাথা হেইট করেছেন, তখন এসে বলেন, সবাই মিলে সরকারকে সমর্থন করতে। আপনাদের এসব ভণ্ডামি দেশের মানুষ পরিষ্কার করে দিয়েছে। আপনাদের এসব ভণ্ডামি মানুষ আর নেবে না।

মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক ও পরিচালককে 'ফরমায়েশি' সাজা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবকিছু নিপীড়নমূলক হলেও মানুষের শেষ ভরসা থাকে আদালত। এ সরকার পুরো আদালতকে রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের হাতিয়ার করে রেখেছে।

জোনায়েদ সাকি বলেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার নাগরিকদের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে বলা হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর বাহাত্তর সালের সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান শাসন ব্যবস্থা একটা ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থায় রূপ নিয়েছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রীকে সার্বিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটা পরিবর্তন করে আমরা ৩১ দফা কর্মসূচিতে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রস্তাব বলছি।

এ ব্যবস্থার পরিবর্তন না হলে নির্বাচন হয়তো অনুষ্ঠিত হবে, কিন্তু মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না বলে মন্তব্য করেন এ রাজনৈতিক নেতা।

মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ গড়তে বিদ্যমান 'ফ্যাসিজমের' বিরুদ্ধে সব বিরোধী রাজনৈতিকদলকে সম্মিলিতভাবে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির মহানগর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রকাশিত রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ৩১ দফা বিএনপি বা গণসংহতি আন্দোলনের দফা নয়। এটি সমগ্র বাংলাদেশের জনগণেরই ৩১ দফা। এই দফা বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামো বদলের দফা, রাষ্ট্র মেরামতের দফা। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র মেরামতের জন্য জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বাধীন গণসংহতি আন্দোলন কঠিন এক সংগ্রাম করে যাচ্ছে। আমাদের সম্মিলিততভাবে এই সংগ্রাম আরও শাণিত, আরও ধারালো করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২৩
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।