ঢাকা: সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংকট কাটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। একই সঙ্গে বিএনপিকেও শর্তহীন আলোচনায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ কার্যদিবসে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে মুজিবুল হক চুন্নু এমন আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আজকে যিনি সংসদ নেতা, আপনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, বাংলাদেশে আরও প্রধানমন্ত্রী হবে। আপনার পরিচয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে না, আপনার যে একটা পরিচয় আছে, সেই পরিচয় কারো হবে না। আপনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। সেজন্য আপনার প্রধানমন্ত্রীর পরও একটা দায়িত্ব আছে।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আজকে দেশে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে একটি অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। আজকে যারা নিরপেক্ষ সরকারের জন্য আন্দোলন করছেন, একসময় বলতেন পাগল ও শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ হয় না।
তিনি বলেন, বর্তমান সংবিধানে যেভাবে নির্বাচন হওয়ার কথা, তা হাইকোর্টের রায়ে এসেছে। একটি রাজনৈতিক দল এবং আরও কিছু দল আন্দোলন করছে, তারা কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। সরকারেরও একদফা, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দলেরও একদফা, সরকারের পদত্যাগ। জাতীয় পার্টি কিন্তু কোনো একদফায় বিশ্বাসী না। জাতীয় পার্টি চায় একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।
তিনি আরও বলেন, আপনি (শেখ হাসিনা) শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, আপনি জাতির জনকের কন্যা, সে হিসেবে আপনার অনেক দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আপনি কে কী বলল, কে সমালোচনা করল, এগুলোর ঊর্ধ্বে সবগুলো রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আনতে এক টেবিলে আলোচনার জন্য উদাত্ত কণ্ঠে আহ্বান জানান।
জাপা মহাসচিব আরও বলেন, বিএনপিসহ মাঠে যারা আছেন, তাদের বলব আপনারা আল্লাহর ওয়াস্তে জনগণের দিকে তাকিয়ে শর্ত বাদ দিয়ে টেবিলে এসে আলোচনা করেন, পূর্বশর্ত বাদ দিয়ে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটও করেছিলাম। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো ছিল। তাই আমরা সেই পরিপ্রেক্ষিতে বলব, আজকে এই সংঘাতময় পরিস্থিতি থেকে বের হতে হবে। কয়দিন আগে একজন পুলিশকে অন্যায়ভাবে মারা হয়েছে। এগুলো সহ্য হয় না। এই আন্দোলনের কারণে কয়জন নিরীহ মানুষ মারা গেছে। সেটিও গ্রহণযোগ্য নয়। আগামী রোববার ও সোমবার আবার ধারাবাহিক কর্মসূচি দিয়েছে। মানুষ একটা আতঙ্কের মধ্যে আছে, শঙ্কার মধ্যে আছে। তাই বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ, দুই দলেরই বড় দায়িত্ব মানুষের দিকে তাকিয়ে দফা টফা বাদ দিয়ে, ইগো বাদ দিয়ে এক টেবিলে বসে সংবিধানের মধ্যে থেকে নিরপেক্ষ নির্বাচন কীভাবে সম্ভব তার একটা পথ বের করা। সেই কাজটাতেই প্রধানমন্ত্রী যেন অগ্রণী ভূমিকা নেন, সেটি আমি আমার দলের পক্ষ থেকে আহ্বান জানাই।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২৩
এসকে/ইইউডি/আরেএ