ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়ানক অগ্নিকুণ্ডলীতে বিএনপির নেতাকর্মীদের নিক্ষেপের হুমকি দিয়েছেন অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই বিপজ্জনক হুমকিতে সারা জাতি স্তম্ভিত। জাতীয় সহিষ্ণুতা ভেঙে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার (৪ নভেম্বর) বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এই কথা জানান।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিষাক্ত মোহরের আছড়ে গণতন্ত্রকামী মানুষকে ছিন্নভিন্ন করতে চাচ্ছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অবরোধ, অগ্নিসন্ত্রাস যারা করবে তারা কেউ যেন পার না পায়। যদি কেউ ধরা পড়ে তাকে ধরে ওই আগুনে ফেলতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর ভয়ানক অগ্নিকুণ্ডলী বিএনপির নেতাকর্মীদের নিক্ষেপের হুমকি, ভয়ংকর সর্বনাশী হুমকি। যারা কারাগারে বন্দি নেতাদের বোমা ছুড়ে মারার মিথ্যা মামলা দিতে পারে তারা শান্তিপূর্ণ অবরোধকারী নিরীহ নেতাকর্মীদের অগ্নিসন্ত্রাসী বানিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলতে পারে। এটা অসম্ভব কিছু না। তাদের দ্বারাই এটা সম্ভব।
তিনি বলেন, মন্ত্রীরা জাতিসংঘ, গণতান্ত্রিক দেশগুলো আহ্বান ও মানবাধিকার সংস্থার আহ্বান আমলে নেওয়া দূরে থাক, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২৮ অক্টোবরে ফুটেজ যেগুলো প্রকাশ পেয়েছে তার প্রতিটাতে দেখা যায়, পুলিশের পাশে লাঠিসোঁটা নিয়ে আওয়ামী লীগের লোকেরা আছে। বিএনপির ডাকা হরতাল-অবরোধে পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগ একযোগে মোকাবিলা করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী ক্যাডাররা একে অপরের পরিপূরক।
বিএনপিকে নেতা শূন্য করতে সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার থামছে না। দেশের জাতীয় সব নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত, ইউনিয়ন পর্যন্ত গ্রেপ্তারের যে হিড়িক চলছে, যে ধারা চলছে, সেটা ভাষায় বলা যাবে না এবং তার সঙ্গে আক্রমণে আক্রান্ত হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনাও কিন্তু থামছে না।
রিজভী তথ্য দেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭৬ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বিভিন্ন মামলায় ৫৭৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এই পর্যন্ত ৭ হাজার ৭১৩ জন, মোট মামলা হয়েছে ৫০৬টির অধিক, মোট আসামি ৩৮ হাজার ৫৬০ জন, মৃত্যু ১০ জন এবং আহত ৫ হাজার ৭৮০ জন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী থাকার যে কী স্বাদ সেই তো তিনি (শেখ হাসিনা) পেয়েছেন। সেই স্বাদের কারণে তিনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে চান না। দরকার হলে আরো যদি রক্ত ঝরাতে হয়, রক্ত ঝরিয়ে হলেও তিনি এক তরফা নির্বাচন করবেন। বিদেশি একটি সংবাদমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনগণই নাকি তার মূল শক্তি। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিজে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিচ্ছেন না কেনো? জনগণ সঙ্গে থাকলে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে ভয় পাচ্ছেন কেনো?
এ প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, কেনো আপনি নির্বাচনের প্রাক্কালে বিএনপিসহ বিরোধী দলের কর্মসূচিতে নৃশংস হামলা চালিয়ে শীর্ষ নেতাদের কারা অন্তরীণ করেছেন? কেনো আপনি দেশব্যাপী বিএনপিসহ তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ব্যাপক ধড়পাকড় করেছেন। নেতাকর্মীদের ধরতে গিয়ে বাসায় না পেয়ে তাদের বাবা, ভাইকে আটক করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২৩
টিএ/এসএএইচ