ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

বাগেরহাট-৩: জনপ্রিয়তায় এগিয়ে হাবিবুন নাহার

মাহবুবুর রহমান মুন্না ও এস এস শোহান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
বাগেরহাট-৩: জনপ্রিয়তায় এগিয়ে হাবিবুন নাহার

রামপাল-মোংলা ঘুরে: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রামপাল-মোংলা উপজেলা নিয়ে গঠিত বাগেরহাট-৩ আসনে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।

তারা হলেন আওয়ামী লীগের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার (নৌকা), জাতীয় পার্টির মো. মনিরুজ্জামান মনি (লাঙ্গল), জাসদের শেখ নুরুজ্জামান মাসুম (মশাল), বাংলাদেশ ন্যাশনাল মুভমেন্টের (বিএনএম) সুব্রত মণ্ডল (নোঙ্গর), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মফিজুল ইসলাম গাজী (ডাব), তৃণমূল বিএনপির ম্যানুয়েল সরকার (সোনালী আঁশ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইদ্রিস আলী ইজারাদার (ঈগল)।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সরেজমিনে তৃণমূলের একাধিক নেতা ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোটের যুদ্ধে জনপ্রিয়তার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। করোনাকালীন সময়ে নিজ অর্থায়নে মানুষকে সহায়তা দেওয়া, সব সময়ে জনগণের পাশে থেকে সহায়তা করা, এলাকার শীতার্ত মানুষদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, অসহায় ও দরিদ্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া, কন্যাদায়গ্রস্ত বাবার মেয়ের বিয়েতে অর্থ সহায়তা দেওয়া, গরিব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের আর্থিক সহায়তা, চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা, খাবার বিতরণ, মসজিদ মাদরাসা ও এতিমখানার উন্নয়নে সহায়তা করা, মানবিক এবং সামাজিক নানা কল্যাণকর কাজের জন্য এলাকার জনগণের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছেন তিনি।

সাধারণ মানুষ বলছে, ১৯৯৬ সালে এ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি তালুকদার আব্দুল খালেক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর স্বামীর ছেড়ে দেওয়া একই আসনে তিন বারের নির্বাচিত এমপি হাবিবুন নাহার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। হাবিবুন নাহার এলাকার উন্নয়নে পরীক্ষিত নেত্রী। স্বামী-স্ত্রী দুইজন মিলে সুদীর্ঘ বছর যে পরিমাণ উন্নয়ন করেছেন, তা অন্য কোনো সরকারের আমলে হয়নি। এ কারণে আমরা আবারও তাকেই নির্বাচিত করতে চাই। জনকল্যাণকর কাজের কারণে তার জনপ্রিয়তা সব প্রার্থীর শীর্ষে। আমরা আশা করছি, এ অঞ্চলের মানুষ এলাকার উন্নয়নের কথা চিন্তা করে আবারও তাকেই নৌকা প্রতীকে বিজয়ী করবেন।

রামপাল উপজেলার বড় সন্যাসী গ্রামের হামিদা বেগম বলেন, খালেক তালুকদার ও হাবিবুন নাহার এলাকায় অনেক, কলেজ, মাদারাসা, রাস্তাঘাট নির্মাণ করেছেন। তাদের জন্য এলাকায় কোনো চাঁদাবাজ নেই। এজন্যই আমরা তাকে ভোট দেব।

মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার মুজিবুর রহমান বলেন, রামপাল মোংলায় ছবির মত উন্নয়ন হয়েছে খালেক পরিবারের হাত ধরে। এই অঞ্চলে আওয়ামী লীগকে সংঘটিত করার ক্ষেত্রে তালুকদার আব্দুল খালেকের অবদান অনেক। সব মিলিয়ে মানুষ হাবিবুন নাহারকেই ভোট দেবে।

মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়ন ঠোটারডাঙ্গা গ্রামের মো. ইসরাফিল হাওলাদার বলেন, মোংলা রামপালে যাওয়া-আসার জন্য তেমন কোনো রাস্তা ছিল না, শুধু সাঁকো ছিল। এখন এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে খালেক-হাবিবুন নাহারের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। সর্বোপরি এলাকার মানুষ তাদের ভালোবাসে।

এদিকে, নৌকার প্রার্থী উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি যাচ্ছেন মানুষের কাছে। ভোটারদের উদ্দেশে নানান প্রতিশ্রুতিসহ বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরছেন।

বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় পায়ে হেঁটে জনসংযোগ করার সময় বাড়ির নারী ভোটারসহ শিশুদের পরম মমতায় মাথায়-গালে হাত দিয়ে আদরের পরশ বুলিয়ে বুকে টেনে নিয়ে নিজের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট চাইছেন।

নৌকার প্রার্থী হাবিবুন নাহার বাংলানিউজকে বলেন, যখন তালুকদার আব্দুল খালেক বাগেরহাট-৩ এর এমপি ছিলেন তখন তিনি এ এলাকার উন্নয়ন করেছেন। তারপর যখন থেকে আমি এমপি হয়েছি আমি উন্নয়ন করেছি। নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়াটা এক ধরনের অন্যায়। জয়ী হলে যখন যেটা করা প্রয়োজন তখন সেটা করব।

নিজেদের জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী হাবিবুন নাহার।

উল্লেখ্য, ১৯৫৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বাগেরহাট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন হাবিবুন নাহার। শিক্ষা জীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। পরে তালুকদার আব্দুল খালেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

২০০৮ সালে প্রথম বাগেরহাট-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন হাবিবুন নাহার। সর্বশেষ তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে আবারও নৌকা প্রতীক দিয়ে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। এরপর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। পরে সফলভাবে সেই দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০১৩ সালে এ আসনে এমপি নির্বাচিত হন তালুকদার আব্দুল খালেক। তালুকদার আব্দুল খালেক খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন করায় তার ছেড়ে যাওয়া এ আসনটিতে ২০০৮, ২০১৮ সালের উপ-নির্বাচন ও ২০১৮ এর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাবিবুন নাহার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৮ সালে এমপি পদ থেকে পদত্যাগ করে খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করে মেয়র হন তালুকদার আব্দুল খালেক। এরপর ২০২৩ সালেও তৃতীয়বারের মতো নগর পিতার আসনে বসেন তিনি।

এরআগে, ২০০৮ সালেও তিনি খুলনার মেয়র ছিলেন। বাগেরহাট-০৩ (মংলা-রামপাল) আসনের সফল রাজনৈতিক দম্পতি খালেক-হাবিবুন নাহার ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
এমআরএম/এসএসএস/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।