ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নির্বাচন বর্জনের আহ্বানে ঢাবিতে মানববন্ধন

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৪
নির্বাচন বর্জনের আহ্বানে ঢাবিতে মানববন্ধন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘প্রহসনমূলক’ ও ‘ডামি’ নির্বাচন। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের বিপরীতে কোনো বিরোধী দল নেই।

সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে কোনো উৎসাহ নেই। তাই আমরা ক্রিয়াশীল সংগঠনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ নির্বাচন বর্জন করছি। ’

শনিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ব্যানারে ‘প্রহসনের নির্বাচন বর্জন কর’ স্লোগানে এ মানববন্ধন আয়োজিত হয়।

মানববন্ধনে কার্টুনিস্ট মেহেদী হকের আঁকা ব্যালট পেপারের একটি প্রতীকী রূপ দেখানো হয়। যেখানে দেখা যায়, ব্যালট বাক্সের ওপর একটি ব্যালট পেপার রাখা। যার সবগুলো প্রতীকই নৌকা।  

মানববন্ধনে ছাত্র নেতারা শিক্ষার্থী, কৃষক ও শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষকে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান। এতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তি, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীসহ ক্রিয়াশীল কয়েকটি সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, বাংলাদেশে আজকে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই প্রতিরোধ। গ্রামেগঞ্জে গেলে দেখা যায়, একটি ভয়ের আবহ তৈরি হয়েছে। বর্তমান নির্বাচনে নৌকার মধ্যে কে ভালো তা বাছাই হচ্ছে। দুজন মিলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, কে শেখ হাসিনার সবচেয়ে কাছের মানুষ। সমাজতান্ত্রিক দল নামে একটি দল আছে, তারা নৌকা মার্কায় নির্বাচন করছে। এই নির্বাচন একটি নাটক। আমরা এর কুশীলব হব না।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, একটি দলই নির্বাচন করছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে যে নির্বাচন হয়েছে, ২০২৪ সালের নির্বাচন তারই পুনরাবৃত্তি। তবে আগামীকালকের নির্বাচনই একমাত্র বিষয় না। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেলিবিলিটি স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নিশরাত তানিশা বলেন,  আমাদের দেশের পরিস্থিতি কারও অজানা নয়। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, অর্থনীতি, রাজনীতি কোনোকিছুর অবস্থাই ভালো নয়। নির্বাচনকে একটি গণতান্ত্রিক লেবেল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। অথচ নির্বাচনে কোনো শক্তিশালী বিরোধী দল নেই। এ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে কোনো উৎসাহ বা আগ্রহ নেই।

ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আরামানুল হক বলেন, নাগরিক হিসেবে আমাদের যে পরিচয়, আমাদের ভোটাধিকার হরণ করে তা বাতিল করা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশ একটি ‘ওয়ান ম্যান, ওয়ান স্টেট’র দিকে যাবে। আমরা রাতে ঘুমালে এখনো দুঃস্বপ্ন দেখি; কখন ছাত্রলীগ হামলা করে। আওয়ামী লীগ আবার নির্বাচিত হলে আমরা ক্যাম্পাসে থাকতে পারব না। এর আগেও যারাই ক্ষমতায় এসেছে, নাগরিক হিসেবে আমাদের অধিকার কেবল সংকুচিত হয়েছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তি ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, ২০০৯ সালের পর আমরা কোনো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখিনি। দুঃখের বিষয়, স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও আমরা ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনো প্রকৃত ব্যবস্থা তৈরি করতে পারিনি। বর্তমান নির্বাচন দিয়ে সরকার যে কলঙ্ক তৈরি করতে চায়, আমরা তাকে লাল কার্ড দেখাই।

কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি দিলীপ রায়, ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি শিমুল কুম্ভকার, বর্তমান ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মাঈন আহমেদ, গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাহিদ ইসলাম, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সদস্য সচিব উমামা ফাতেমা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২৪
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।