ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

সামগ্রিক সংকট নিরসনে নতুন করে ভাবতে হবে: চরমোনাই পীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪
সামগ্রিক সংকট নিরসনে নতুন করে ভাবতে হবে: চরমোনাই পীর

ঢাকা: দেশে বর্তমানে ফ্যাসিস্ট শাসন চলছে অভিযোগ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাসমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। সামগ্রিক সংকট নিরসনে নতুন করে ভাবতে হবে।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘জাতীয় বহুমুখী সংকট উদঘাটন ও নিরসনকল্পে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, সামগ্রিক সংকট নিরসনে নতুন করে ভাবতে হবে। সবকিছুকে পুনরায় মূল্যায়ন করতে হবে। মতাদর্শিক অবস্থান থেকে ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষভাবে রাজনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, আমাদের কর্মকাণ্ড, কৌশল, নীতি ও পন্থা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এমন অবস্থায় সমাধান হতে পারে বাংলার হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য সমর্থিত মানবতার মুক্তির পথ কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাসমুক্ত, সুখি-সমৃদ্ধ কল্যাণ রাষ্ট্রই সব শ্রেণি পেশা ও ধর্মের মানুষের রাজনৈতিক, নাগরিক ও ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করতে পারে। সময়ের একান্ত প্রয়োজন কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।

দেশের গণতন্ত্র আজ নির্বাসিত না, সমাহিত উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা সরকারের উচ্ছিষ্টভোগী তারা আমাদের সঙ্গে আসবে না।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের মনের ঐক্য হয়ে গেছে। কিন্তু জনগণের সামনে আমরা ঐক্যটা দৃশ্যমান করতে পারছি না। জনগণ আমাদের আহ্বানে সাড়াও দিচ্ছে। সরকারকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ দেখি না।  

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংকটের কেন্দ্রে রয়েছে নির্বাচন নিয়ে নয়-ছয় করার বিষয়। পৃথিবীর অনেক দেশেই নির্বাচন নিয়ে নয়-ছয় হলেও বাংলাদেশের মতন এমন নয়-ছয় কখনো হয়নি।

তিনি আরও বলেন, তাই আমাদের একটি নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে, সবাই এক হয়ে আন্দোলন করার মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকার বিদায় হবে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর লোকজন যেমন নিরস্ত্র হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন..এই সরকারের বিদায় খুব খারাপভাবে হবে।

জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, এই দেশ এবং জাতিকে বাঁচানোর জন্য সবার ঐক্য প্রয়োজন। আজ থেকে এক মাস আগে নির্বাচনের নামে যে প্রহসন হয়েছিল তা আমরা সবাই দেখেছি। কিন্তু এই সরকারের বিন্দু মাত্র কোনো অনুশোচনা নেই। এদেশের হাজারো বিরোধী দলের নেতা জেলখানায় আটক। যদিও তাদের মনে বিন্দুমাত্র হতাশা নেই। আমি মনে করি বিগত দিনের আন্দোলন কোনোভাবে ব্যার্থ হয়নি। আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে সরকারের এই স্বৈরশাসনের দাতভাঙ্গা জবাব দেব।

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পেতে হলে বিদ্রোহ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, পুরো দেশটাই ইবলিশ শয়তানের হাতে পড়ে গেছে। এখন দেশটাকে কীভাবে রক্ষা করতে হবে সে বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। এখানে আমাদের সঠিক কর্মসূচি নিতে হবে। দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ আমাদের সমর্থন জানিয়েছে। তাই এখন এমন এক কর্মসূচি পালন করতে হবে, যার মাধ্যমে এই সরকারের হায়েনার থাবা থেকে দেশকে রক্ষা করা যায়।

এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, আজকে বাংলাদেশকে একটা কল্যাণকর রাষ্ট্রে পরিণত করা আমাদের দায়িত্ব।

এলডিপির সহ-সভাপতি নেয়ামুল বশির বলেন, আমরা আজ দিশেহারা, আমাদের কাছে গণতন্ত্র, সুশাসন, ন্যায়বিচার কিছুই নেই। সব হারিয়ে আমরা আজ নিঃস্ব।  

এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আমাদের যে রাষ্ট্র, বিচার ব্যবস্থা, সংবিধান আছে সেখানে ধর্ষণ, টাকা পাচারকে কোথাও বৈধতা দেয়নি। বর্তমান সংবিধান দিয়েই আমরা একটা কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি।  

গণ অধিকার পরিষদের একাংশের যুগ্ম সদস্য সচিব ফারুক হাসান বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসন আজকে বাংলাদেশকে অক্টোপাসের মতো আঁকড়ে ধরেছে। অনেকে মনে করেন, ভারতকে তেল না দিয়ে ক্ষমতায় আসা যাবে না।  

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব অধ্যাপক আহমদ আবদুল কাদের, যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাকিব মুহাম্মাদ নাসরুল্লাহ, শিক্ষাবিদ প্রফেসর ইয়াকুব আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি খলিলুর রহমান মাদানী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২৪
ইএসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।