ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালককে শোকজ দিল উপজেলা আ. লীগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালককে শোকজ দিল  উপজেলা আ. লীগ

নাটোর: নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক মো. লুৎফুল হাবিব রুবেলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।  

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ওহিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. জান্নাতুল ফেরদৌসের সই করা নোটিশটি দেওয়া হয়।

লুৎফুল হাবীব রুবেল উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক।

কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল নাটোর জেলা নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. দেলোয়ার হোসেন পাশার মনোনয়নপত্র জমাদানে বাধা, মারপিট ও অপহরণের ঘটনায় লুৎফুল হাবীবের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, যা দলীয় আচরণবিধি পরিপন্থীর শামিল।

এ পরিস্থিতিতে কেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, সেই জবাব আগামী তিন দিনের মধ্যে সইকারীদের কাছে লিখিতভাবে জানানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে জানানো হয়।

সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ওহিদুর রহমান বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করে বাংলানিউজকে বলেন, রুবেলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সন্তোষজনক এবং দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জবাব দিতে না পারলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

তিনি আরও বলেন, দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত, কোন এমপি-মন্ত্রীর স্বজনরা প্রার্থী থাকতে পারবেন না। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শনিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে। ওই সভা থেকে মো. লুৎফুল হাবীব রুবেলকে দলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি পরবর্তী সাংগঠনিক সিদ্ধান্তও নেওয়া হবে।

গত ১৫ এপ্রিল মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন মনোনয়নপত্র দাখিল করায় নাটোর জেলা নির্বাচন অফিসের ভেতর থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে জোরপূর্বক অপহরণ করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। নির্যাতনের পর আরেকটি মাইক্রোবাসে বাড়ির সামনে তাকে ফেলে যাওয়া হয়।  

পুলিশ দেলোয়ার হোসেনকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তাকে রামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন। তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।

ওই ঘটনায় দেলোয়ার হোসেনের ভাই থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে একজন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই জবানবন্দিতে তিনি জানান, আওয়ামী লীগ নেতা ও নির্বাচনের প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের পক্ষ হয়ে তারা ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবীব রুবেলের মনোনয়নপত্র বাতিলে ১৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে লিখিত আবেদন করেন দেলোয়ার হোসেনের পুত্র মুনয়েম হোসেন।  
মুনয়েম তার পিতাকে অপহরণ ও নির্যাতনের জন্য সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী লুৎফুল হাবীবকে দায়ী করে তার প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন জানান।

১৮ এপ্রিল দুপুরে নির্বাচন কমিশন সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবীবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায়। কমিশনের উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমানের সই করা ওই নোটিশে তাকে ২২ এপ্রিল বিকেলে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সশরীরে উপস্থিত হয়ে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল, ১৯, ২০২৪
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।