ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

পূজা উদযাপন পরিষদ নেতাকে পেটালেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতারা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৪
পূজা উদযাপন পরিষদ নেতাকে পেটালেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতারা

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে পূজা উদযাপন পরিষদ নেতা মানিক সরকারকে লোহার রড ও শেলাই রেঞ্জ দিয়ে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মারুফ হোসেন সুনাম, পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মামুন ও সবুজ ইসলামসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। তারা সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম সমর্থক বলে পরিচিত।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দিনগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে শাহজাদপুর পৌর এলাকার পুকুরপাড় খান বাড়ীর সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মানিকের সঙ্গে থাকা শ্যালক সাগর কুমার দেবকেও মারধর করা হয়। মানিকের মোটরসাইকেল, মোবাইল ও কাছে থাকা টাকাও ছিনতাই করা হয়েছে।  

মানিক সরকার শাহজাদপুর পৌর এলাকার প্রাণনাথপুর গ্রামের রতন সরকারের ছেলে। তিনি পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তার হাত ও পা ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সাগর কুমার দেবকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।  

শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সবুজ রানা বলেন, রাতে মানিক সরকারের ওপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশে পাঠিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে কারা কী কারণে হামলা চালিয়েছে বিষয়টি আমাদের এখনো কেউ জানায়নি। মানিক সুস্থ হওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। এ বিষয়ে অভিযোগ দিলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।  

এদিকে সৌরভ রাজবংশীসহ আহত মানিক সরকারের স্বজনরা বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন মানিক। তার সঙ্গে অপর একটি মোটরসাইকেলে ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহরলাল হোসেনও ছিলেন। তারা পুকুরপাড় খান বাড়ি এলাকায় পৌঁছলে সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা ১০-১২ জন সন্ত্রাসী মানিকের ওপর হামলা করে। কাউন্সিলর জহরলালকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মানিককে লোহার রড ও শেলাই রেঞ্জ দিয়ে বেধড়ক পেটায় তারা। সঙ্গে থাকা সাগরকেও মারধর করা হয়।  

তারা বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য এমপি চয়ন ইসলামের নির্বাচনের সময় তাকে এক কোটি ৭১ লাখ টাকা দিয়েছিলেন মানিক। এর মধ্যে ৮০ লাখ টাকা নির্বাচনের পরে ফেরত দিলেও বাকি ৯১ লাখ টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন এমপি চয়ন। এ থেকেই এমপির সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এরই জের ধরে এ ঘটনা। এর আগেও মানিকের অফিসে হামলা চালানো হয়েছিল। এবারও এমপির ঘনিষ্ঠ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মারুফ হোসেন সুনাম, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মামুন ও সাবেক পৌর মেয়র নজরুল ইসলামের ছেলে সবুজ ইসলামের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে।  

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মারুফ হোসেন সুনাম বলেন, অভিযোগ দিতে হলে নির্দিষ্ট প্রমাণসহ দিতে হয়।

পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মামুন বলেন, একটা সময় মানিক ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, এখন আর নেই। মারপিটের ঘটনার সঙ্গেও আমি জড়িত নই।

সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম বলেন, আমি ঢাকার বাইরে আছি। বিষয়টি আমি জানি না।  

মানিক সরকারের সঙ্গে অর্থনৈতিক লেনদেনের বিষয়টি বানোয়াট বলে উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ওর মদের দোকানের লাইসেন্স বাতিলে আমি ডিওলেটার দিয়েছি। এ কারণে আমার বিরুদ্ধে এসব কথা বলছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৪
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।