খুলনা: শেখ হাসিনা শেষ পর্যন্ত গণভবনের চেয়ার সুপার গ্লু দিয়ে আটকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলামের নেতা শায়খুল হাদীস (রহ:) স্মৃতি পাঠাগারের প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা মানুষ খুন, গুম, অত্যাচারের স্টিম রোলার চালানো, মানুষের ইজ্জত-আব্রুর ওপর হামলাসহ এমন কোনো কাজ নেই যা তিনি করেননি।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাতে খুলনা মহানগরীর সার্কিট হাউজ ময়দানে অনুষ্ঠিত ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। শায়খুল হাদীস (রহ:) স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে এ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
মাহফিলে মামুনুল হক বলেন, কী দোষ ছিল আল্লাহর নবীর পক্ষে কথা বলার জন্য ২০১৩ সালে পাখির মত গুলি করে আমাদের শতাধিক নেতাকর্মীকে মেরে ফেলেছে। শুধু তাই না ২০২১ সালে মোদির বাংলাদেশ আগমনে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম বিধায় হাটহাজারী থেকে ঢাকা পর্যন্ত আমাদের নেতা কর্মীদেরকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমাদের অপরাধ ছিল আমরা আল্লাহর নবীর হেফাজতের কথা বলতে গিয়েছিলাম। এই কারণে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। একজন সাধারণ আসামি যে সব সুবিধাগুলো পায় তার কিছুই আমাদের দেয়নি। বরং আমাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, মনে রাখতে হবে আমাদের দেশ নয় মাসের স্বাধীন হয়নি এর স্বাধীনতার ইতিহাস দীর্ঘ দিনের। প্রথম শুরু হয়েছে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গের দাদাদের বিরুদ্ধে। তারপরে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে আমাদের এই আন্দোলন। তারপরে আমাদের এই স্বাধীনতা জুলাই আগস্টে আন্দোলনের বিজয়কে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলা হয়। আমি শুধু বলবো স্বাধীনতা অর্জন করা যতটা সহজ স্বাধীনতা রক্ষা করা তার চেয়ে আরও দ্বিগুণ কঠিন।
হেফাজতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমি বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই শেখ হাসিনার সরকার যেভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে হিন্দুত্ববাদ হিসেবে তৈরি করেছিল আপনারা আবার নতুন করে দেশে নাস্তিকবাদ শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করবেন না। তাহলে এ দেশের আলেম সমাজ বসে থাকবে না। আবার আন্দোলনে নামবো। লংমার্চ করব। আর সাবধান করে বলতে চাই আমার সেন্টমার্টিন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের প্রতিটা মাটির কণা অক্ষত রাখার জন্য বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলাম সবসময় তৈরি থাকে।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্যে করে মামুনুল হক বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বলতে চাই আপনি তওবা করুন শাপলা চত্বরে হেফাজতের যে সব মানুষগুলোকে মেরেছেন তাদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চান। এই জুলাই আগস্টে যে ছাত্র জনতা মারা গিয়েছে তাদের কাছে ক্ষমা চান। আমরা ইসলামি বিপ্লব কায়েম করব। প্রয়োজনে এক সমুদ্র রক্ত দেব তারপরও আমরা ইসলামের বিপ্লব কায়েম করবো ইনশাআল্লাহ।
মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন শায়খুল হাদীস (রহ:) স্মৃতি পাঠাগারের উপদেষ্টা মাওলানা রফিকুর রহমান। ওয়াজ মাহফিলে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন- শায়খুল হাদীস (রহ:) স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি মাওলানা সাঈদুল রহমান। বাদ আসর আলোচনা করেন আল মানার মহিলা মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা সাদিকুর রহমান।
বাদ মাগরিব আলোচনা করেন বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস ফুলতলার মুফতী মাসুম বিল্লাহ রহমানী, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস বাগেরহাটের মুফতী রমিজ উদ্দীন। বাদ এশা আলোচনা করেন শায়খুল হাদীস (রহ:) স্মৃতি পাঠাগারের সহ-সভাপতি মুফতী ওলিউল্লাহ মাহমুদ।
মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মাওলানা মুজিবুর রহমান, মাওলানা মুশতাক আহমাদ, মাওলানা মুশতাক আহমাদ, মাওলানা আসআদুল্লাহ, মাওলানা বেলায়েত হোসেন, মাওলানা মুহসিন উদ্দীন, মাওলানা মনিরুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ০১০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৪
এমআরএম/এসএম