ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

ভারতের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে হাসিনার নয়, তাদেরই পতন হয়েছে: অমিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২৪
ভারতের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে হাসিনার নয়, তাদেরই পতন হয়েছে: অমিত

যশোর: বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে, শেখ হাসিনার নয়; তাদের নিজেদের পতন হয়েছে। ভারত কেবল বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় আগুন দেয়নি, সমগ্র বাঙালির হৃদয়ে আগুন দিয়েছে।

আগরতলায় উপ-হাই কমিশনারে হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) যশোর জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত এসব কথা বলেন।

দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম। বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন প্রমুখ।

অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। ভারতে এই কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সেটা প্রতীয়মান। যে কোনো মূল্যে শেখ হাসিনার দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারত নিজেদের বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে। কিন্তু ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সমর্থন দেওয়ার মধ্য দিয়ে তারা সেটি ভুল প্রমাণ করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতে অবদান এ দেশের জনগণ কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করে। কিন্তু মহান স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর দেশের স্বার্থ কতটা বিকিয়ে দিলে কিংবা সীমান্তে ফেলানির মত নিরীহ নিরপরাধ বাঙালি হত্যা করলে ভারতের ঋণ পরিশোধ হবে?’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি উপ-দূতাবাসে হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ভারত যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তার যথাযথ জবাব ভারতকেই দিতে হবে। ’ 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক তীর্থ ভূমি। এই দেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকলের। এখানে সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘু বলতে কেউ নেই। আমাদের একটি পরিচয় আমরা বাংলাদেশি। এই ভূখণ্ডের বাইরে আমাদের কোনো পরিচয় নেই। কোনো মুসলিম অন্য কোনো ধর্মের প্রতিপক্ষ ভাবতে পারে না। নব্বই দশকে ভারতের বাবরি মসজিদ ভাঙার পর যেভাবে এই যশোর তথা সমগ্র বাংলাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীরা সনাতন ধর্মের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিল। ঠিক একইভাবে ৫ আগস্টের সন্ধ্যা থেকে আজ অবধি সনাতন ধর্মের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আসছে। যাতে কোনো দুষ্কৃতকারী কোনো কিছু ঘটাতে না পারে। ’

অনিন্দ্য ইসলাম অমিত দলীয় নেতাকর্মীদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরও তার প্রেতাত্মারা এই সমাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের অপকর্মের যথাযথ বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই সমাজে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি তাদের এই সমাজে ফিরে আসার সুযোগ দেয়, তাহলে সেও ফ্যাসিস্টের দোসর হিসেবে বিবেচিত হবে। ’

পরে দলীয় কার্যালয় থেকে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি পুরাতন পৌর ভবনের সমানের সড়ক, চৌরাস্তা মোড়, আর এন রোড হয়ে মনিহার এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম রেজা দুলু, আব্দুস সালাম আজাদ, মারুফুল ইসলাম, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, অ্যাডভোকেট হাজী আনিছুর রহমান মুকুল, সিরাজুল ইসলাম, নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, আশরাফুজ্জামান মিঠু, জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক উপাধ্যক্ষ মকবুল হোসেন, সদস্য সচিব শিকদার সালাউদ্দিন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রাশিদা রহমান, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌসা বেগম, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৪
ইউজি/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।