ঢাকা, রবিবার, ২১ পৌষ ১৪৩১, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

আ.লীগ দেশে পৌনে ২ কোটি ভুয়া ভোটার তৈরি করেছে: জামায়াত আমির

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৫
আ.লীগ দেশে পৌনে ২ কোটি ভুয়া ভোটার তৈরি করেছে: জামায়াত আমির বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান

নাটোর: প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন তা অযৌক্তিক মনে করছে না জামায়াত ইসলাম এমন মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশে এখন প্রায় ১১ কোটি ভোটার রয়েছে। বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ পৌনে ২ কোটি ভুয়া ভোটার তৈরি করেছে।

সেগুলো বাদ দিলে ভোটার সংখ্যা কমে আসবে। তবে অনেক তরুণ-তরুণী ভোটার তালিকাভুক্ত হতে পারেনি। তাদের ভোটার করা হলে এ সংখ্যা আরও বাড়বে। এজন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করতে হবে।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে নাটোর শহরের জেলা পরিষদ (অনিমা চৌধুরী) মিলনায়তনে জেলা জামায়াত আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

সুধী সমাবেশে চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াত আমির ড. মীর নুরুল ইসলাম।

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের একটি দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। এটাকে জামায়াত অযৌক্তিক মনে করছে না। তবে তাদের আন্তরিকতার পরিচয় দিতে হবে। যে সংস্কার জাতির প্রাণের দাবি, সেখানে মৌলিক বিষয়গুলো সংস্কারে যেন কোনো গড়িমসি না হয়। কোনো ষড়যন্ত্রের কাছে সংস্কার যাতে হারিয়ে না যায়। যাতে গুলিয়ে না যায় এজন্য দৃঢ়ভাবে তাদের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর যেসব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি, দখলবাজিতে মেতেছেন তাদের উদ্দেশে শফিকুর রহমান বলেন, গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশে এত রক্ত, এত গণহত্যা, এত মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করল, এত মানুষ ঘর ছাড়লো, দেশ ছাড়লো তবুও কী এ জাতির শিক্ষা হবে না। এ শিক্ষা যারা নেবে না, আমরা কী তাদের সমর্থন করতে পারি। তাদের কী বন্ধু মনে করতে পারি, রাজনীতিবিদ মনে করতে পারি। একজন রাজনীতিবিদ কখনো চাঁদাবাজ হতে পারে না। চাঁদাবাজের দলীয় কোনো পরিচয় নেই, সে চাঁদাবাজ।

গত ১৬ বছরে দেশে খুন, গুম, গণহত্যা, লুটপাট ও বিদেশে টাকা পাচারে জড়িতদের বিচারের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, এসবের বিচারের মাধ্যমেই তারা দেশ ও জনগণের কাছে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে, যা এখন বড় দায়িত্ব ও কর্তব্য। কেননা তারা যত খুন করেছে, গুম করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, লুট করেছে, বিদেশে টাকা পাচার করেছে এজন্য তাদের বিচার হওয়া প্রয়োজন। এখন বিচারের মাধ্যমে তাদের নিষিদ্ধ করাটাই সবচেয়ে উপযুক্ত দাওয়াই। আশা করি সরকার সেদিকে লক্ষ্য রাখবে এবং সংস্কার কাজ চালিয়ে যাবে।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী সত্যের পথে অবিচল। তারা কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি। তাদের নিয়ে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমাদের নেতারা মাথা নত করেননি। তারা জীবন দিয়েছেন, হাসতে হাসতে ফাঁসিতে ঝুলেছেন, মাথা কিন্তু নত করেননি। বহু ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সমস্ত প্রস্তাব ও ষড়যন্ত্র ঘৃণা মনে করে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।  

সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন ও মোবারক হোসেন, নাটোর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী, জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আতিকুল রহমান রাসেল প্রমুখ।

পরে নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ মিলনায়তনে মহিলা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত আমির। এর আগে সকালে নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ডা. শফিকুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২৪
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।