ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ পৌষ ১৪৩১, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

সিংড়ায় বিএনপি নেতার নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৫
সিংড়ায় বিএনপি নেতার নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ সিংড়ায় বিএনপি নেতার নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন।

নাটোর: নাটোরের সিংড়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক বিএনপির কর্মী এনায়েত করিম রাঙ্গার নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাঙ্গার নিজ গ্রাম জেলার সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের ছোট বাঁশবাড়িয়া এলাকায় এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দুই শতাধিক মানুষ অংশ নেয়। এ সময় রাঙ্গার স্ত্রী উম্মে কুলসুম পাপিয়াসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

এনায়েত করিম রাঙ্গা ঢাবির সাবেক জিয়া পরিষদের (জিসাপ) আহ্বায়ক ও ঢাকাস্থ নাটোর জেলা সমিতির সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক বলে জানা গেছে।

মানববন্ধনে ডাহিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাবেক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মৃধা, চৌগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শের আলী, স্থানীয় শিক্ষক শরিফুল ইসলাম, গ্রাম্য প্রধান রইচ উদ্দিন, বাহার উদ্দিন বাচ্চু, বিএনপি নেতা এনায়েত করিম রাঙ্গার সহধর্মিণী উম্মে সালমা পাপিয়া, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য নাজমা বেগম, ছাত্রদল নেতা রবিউল করিম, সাকিব হাসান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বিএনপি নেতা এনায়েত করিম রাঙ্গা বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এছাড়া জুলাই-আগস্ট বিল্পবে নিজের জীবন বাজি রেখে ঢাকার সভা-সমাবেশে অংশ গ্রহণ করেন। কিন্তু পারিবারিক বিরোধের জের ধরে আপন ভাতিজা ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল আহমেদ নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে আপন চাচা রাঙ্গাকে ঢাকার সূত্রাপুর ও বনানী থানায় তিনটি হত্যা মামলায় জড়িয়ে দেন। আর ফয়সাল আহমেদের বাবা আবু জাহিদও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা। সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সাথে বাবা ও ছেলে সখ্যতা ছিল।  

বক্তারা অভিযোগ করেন, পারিবারিক বিরোধে প্রতিশোধ নিতে আপন ভাতিজা ও ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল আহমেদ নিজেকে সমন্বয়ক দাবি ও প্রভাব খাটিয়ে ঢাকার রাজনৈতিকসহ তিনটি হত্যা মামলায় চাচা রাঙ্গাকে জড়িয়ে দিয়েছেন। সেই মামলায় গত ২৮ ডিসেম্বর রাঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে সিংড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে এনায়েত করিম রাঙ্গাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে আদালতে পাঠায় সিংড়া থানা পুলিশ। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে।

রাঙ্গার স্ত্রী উম্মে কুলসুম পাপিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল আহমেদের বাবা-চাচাদের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। ২০২৩ সালের ১৮ আগস্ট পূর্ব বিরোধের জেরে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সালের বাবা তার সৎ ভাই তৈয়ব আলীকে প্রকাশ্যে গুলি করেন।

এ ঘটনায় হত্যা চেষ্টার মামলায় তার (ছাত্রলীগ নেতার) বাবা গ্রেপ্তার হয়ে ২১ দিন জেলখাটার পর তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী পলকের সহযোগিতায় ছাড়া পান। এই ঘটনার সময় রাঙ্গা নির্যাতিত তৈয়ব আলীর পক্ষে থাকায় এখন তাকে ভাতিজা ফয়সাল শায়েস্তা করার জন্য একের পর হত্যা মামলায় আসামি করাচ্ছেন।

তিনি বলেন, তার স্বামী সারাজীবন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। জুলাই বিপ্লবে নিজের জীবন বাজী রেখে নিজের শিশুপুত্রসহ ঢাকার সব সভা সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। আন্দোলনে আহত ২০ জনকে চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছেন। এখন দুভার্গ্যজনকভাবে তার স্বামীর আপন ভাতিজা ঢাবি সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ফয়সাল আহম্মেদ পারিবারিক বিরোধের জের ধরে জুলাই বিপ্লবের পর নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে নিজের চাচাকে ঢাকার সূত্রাপুর থানায় একে একে তিনটি হত্যা মামলায় জড়িয়ে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২৫
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।