ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ফরিদপুর বিএনপি

‘পকেট কমিটি’র পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, বিরোধ তুঙ্গে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৫
‘পকেট কমিটি’র পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, বিরোধ তুঙ্গে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ফরিদপুর: ফরিদপুরের বিভিন্ন ইউনিট কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন বিএনপির নেতারা। পাল্টাপাল্টি সংবাদ সন্মেলন, ‘পকেট কমিটি’ গঠনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, হুমকি এবং পাল্টা হুমকি চলছে।



বিএনপির পরস্পরবিরোধী দুই গ্রুপই জেলার বেশিরভাগ উপজেলার ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে ‘পকেট কমিটি’ গঠনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছে। এ নিয়ে বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে।

রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) ‘ফরিদপুরে বিএনপির কমিটির নামে কাউকে পকেট কমিটি করতে দেওয়া হবে না’- বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক সাংসদ চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ। অন্যদিকে কামাল ইউসুফই নিজ বাড়িতে বর্ধিত সভার নামে কোতোয়ালি ও পৌর বিএনপির ‘পকেট কমিটি’ গঠনের পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ করে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির একাংশ।  

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা বিএনপির বর্ধিত সভায় বিরোধী পক্ষের প্রতি হুঁশিয়ারি দেন কামাল ইবনে ইউসুফ। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার ফরিদপুর শহরের কমলাপুরের বাসভবন ময়েজ মঞ্জিলে এ বর্ধিত সভার আয়োজন করে বিএনপির কোতোয়ালি থানা শাখার একাংশ।
   
বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কামাল ইউসুফ বলেন, ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলায় কমিটি গঠনের নামে ‘পকেট কমিটি’ গঠিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে দলের মধ্যেই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
  
কামাল ইউসুফ বলেন, কমিটিতে থাকলাম আর মন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে সালাম দিলাম তাতে তো আর বিএনপি করা হলো না। বিএনপির নিবেদিতপ্রাণদের নিয়েই কমিটি গঠন করতে হবে।

সমগ্র ফরিদপুরকে আওয়ামী লীগের বেল্ট হিসেবে উল্লেখ করে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, এ জেলা থেকে বিএনপির সংসদ সদস্য হওয়া খুব কঠিন। তারপরও ৩০ বছর ফরিদপুর সদর আসনটি (ফরিদপুর-৩) বিএনপির দখলে ছিল। কিন্তু ২০০৯ সালের নির্বাচনে দলের একাংশের ষড়যন্ত্রের কারণে আমি পরাজিত হয়েছি।

সাবেক মন্ত্রী জেলা বিএনপির বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ‘পকেট কমিটি’ করা হচ্ছে। তারা যদি আশা করেন, আগামীতে ঢাকা থেকে কমিটি পাস করিয়ে নিয়ে আসবেন, সে আশা পূরণ হবে না। কেননা, এবার তা আমারা হতে দেবো না।

বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন কোতোয়ালি বিএনপির সভাপতি খোন্দকার চাঁদ। সভায় জানানো হয়, সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এই ময়েজ মঞ্জিলেই পৌর বিএনপির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে।
  
অন্যদিকে সকাল সাড়ে দশটার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে কোতোয়ালি ও পৌর বিএনপির একাংশ অভিযোগ করে, কামাল ইউসুফ নিজ বাড়িতে বর্ধিত সভার নামে কোতোয়ালি ও পৌর বিএনপির ‘পকেট কমিটি’ গঠনের পাঁয়তারা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে কোতোয়ালি বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ সরদার ও পৌর বিএনপির সহ সভাপতি জসিম উদ্দিন মৃধা স্বাক্ষরিত একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার হোসেন জুয়েল।
  
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রাজনৈতিক শিষ্ঠাচারবর্হিভূত ভাবে নিজ বাড়িতে কোতোয়ালি বিএনপির বর্ধিত সভার নামে পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের ‘পকেটের দাস-দাসিদের’ নিয়ে কোতোয়ালি বিএনপির কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছেন।

‘দলকে দুর্বল করে রাখা কামাল ইউসুফের উদ্দেশ্য’ দাবি করে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, আমরা জেলা বিএনপির নেতাদেরকে এ বিষয়টি (কামাল ইউসুফের নিজ বাড়িতে বর্ধিত সভার বিষয়ে) অবগত করলে তারা বিষয়টির গুরুত্ব না দেওয়ায় দলের অস্তিত্ব বাঁচানোর স্বার্থে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। যেন বিষয়টি বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নজরে আসে এবং তিনি এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।                                                                                                   
এর আগে ফরিদপুরের নগরকান্দা এবং সালথা উপজেলা বাদে বাকি সব উপজেলার তৃণমূল নেতারা পকেট কমিটি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৫
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।