তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত ছিল ভোট ডাকাতির নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা শপথ নেবেন না। এখন যদি গণফোরামের দু’জন শপথ নেয় তাতে ঐক্যফ্রন্টের কোনো অসুবিধা হবে না।
রোববার (৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে তিনি জিয়ার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
ড. মোশাররফ বলেন, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত ছিল তথাকথিত ভোট ডাকাতির সংসদে যাব না। এখন ঐক্যফ্রন্টের দু’জন সদস্য সংসদে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এটা গণফোরামের বিষয়, তারা জানাবে।
একজন ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচিত এ ব্যাপারে বক্তব্য কী? জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে যা বিধিবিধান আছে, অবশ্যই সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দু’জনের শপথের মাধ্যমে ঐক্যফ্রন্টে টানাপোড়েন হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোশাররফ বলেন, এটা এত আগে বলা যাবে না। আমরা বড় একটা টার্গেট নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট করেছি। বিএনপি এই ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ও বৃহৎ দল। অতএব আমি বিশ্বাস করি, গণফোরামের কেউ যদি সংসদে যায়ও তারপরও যেহেতু ঐক্যফ্রন্টের বৃহৎ একটা লক্ষ্য আছে, সেজন্য ঐক্যফ্রন্টের কোনো অসুবিধা হবে না।
তিনি বলেন, আজকে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ভুলুণ্ঠিত, দেশে গণতন্ত্র নেই। মানুষের ভোটের অধিকার নেই। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নেই। এমনি একটি অবস্থায় দেশ চলছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নামে যে প্রহসন হয়েছে, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোট ডাকাতি হয়ে গেছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, কয়েকদিন আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোটার ভোটকেন্দ্রে যায়নি। তার মাধ্যমে প্রমাণিত যে, জনগণ এ সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করছে। এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো রকমের সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না, সেটা জনগণ বুঝতে পেরে এর প্রতিবাদে সিটি নির্বাচনে কেউ অংশগ্রহণ করেনি।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়াকে সরকার এতই ভয় পায় যে, মিথ্যা মামলায় তাকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। গণতন্ত্রের মা কারাগারে সেজন্য দেশে গণতন্ত্র নেই। আজকে বিএনপি, কৃষকদলের ওপরে দায়িত্ব পড়েছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। আর গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হলে, গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
উপজেলা নির্বাচনে অযথা জনগণের টাকা অপচয় না করার আহ্বান জানিয়ে ড. মোশাররফ বলেন, উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন ৯০০ কোটি টাকা বাজেট করেছে। এর আগে উপজেলা নির্বাচনে ৪০০ কোটি টাকা বাজেট ছিল। যেহেতু প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই, তাই নৌকার প্রার্থীদের ঘোষণা করে দিলেই নির্বাচনের নাটক শেষ হয়ে যাবে। জনগণের ৯০০ কোটি টাকা খরচের মতো অপচয় দরকার হবে না।
সরকার বার বার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে অভিযোগ করে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর কথা বলছে। এ সরকারতো মানুষের রক্তচোষা সরকার। গ্যাসের দাম বাড়ালে জনগণ সংকটে পড়বে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, দেশ ও জনগণের কথা চিন্তা করে গ্যাসের দাম বাড়ানো উচিত হবে না। গ্যাসের দাম বাড়ালে বিএনপি কর্মসূচি দেবে।
এসময় কৃষক দলের নবনির্বাচিত আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু, সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, তকদির হোসেন মোহাম্মদ জসিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৯
এমএইচ/আরবি/