ঢাকা: রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে সংলাপে অংশ নিলেও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে অনুসন্ধান কমিটির কাছে কোনো নাম প্রস্তাব করবে না বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ও বাংলাদেশ ন্যাপ। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ও বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূইয়া বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিবন্ধিত এই দল দুটি এক সময় ২০ দলীয় জোটে থাকলেও বাংলাদেশ ন্যাপ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০ দল ত্যাগ করে। আর বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ২০ দলীয় জোটে থাকলেও তারা নিজেদের দলীয় সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে সংলাপে অংশ নিয়েছিল।
জানা গেছে, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে শুক্রবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে অনুসন্ধান কমিটির কাছে নাম প্রস্তাব করতে বলা হয়েছে। এর জন্য গণবিজ্ঞপ্তির পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে কমিটির পক্ষ থেকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চিঠি পেয়ে কল্যাণ পার্টি ও বাংলাদেশ ন্যাপ অনুসন্ধান কমিটিতে নাম না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অপরদিকে ২০ দলীয় জোটের প্রধান শরিক বিএনপিও সার্চ কমিটিতে নাম না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চিঠি পাওয়ার পর দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, তারা চিঠি পেয়েছেন। তবে অনুসন্ধান কমিটির কাছে কোনো নাম প্রস্তাব করবেন না।
সূত্র জানায়, অনুসন্ধান কমিটির কাছে কল্যাণ পার্টির নাম না দেওয়ার সিদ্ধান্তের পেছনে বিএনপির ভূমিকা থাকতে পারে। গত বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জোটের তিন শরিক দল জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), ইসলামী ঐক্যজোট (আবদুর রকিব) ও কল্যাণ পার্টির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক হয়। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ২০ দলের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকের পরই কল্যাণ পার্টি অনুসন্ধান কমিটিতে নাম না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, ওই বৈঠকে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও যোগ দেন। তিনিই হয়তো কল্যাণ পার্টিকে অনুসন্ধান কমিটিতে নাম না দেওয়ার অনুরোধ করেন। ফলে কল্যাণ পার্টি এই সিদ্ধান্ত নেয়।
এদিকে বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূইয়া বাংলানিউজকে বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে অনুসন্ধান কমিটির চাহিদা মোতাবেক নামের তালিকা দিচ্ছে না তাদের দল বাংলাদেশ ন্যাপ।
তিনি বলেন, সার্চ কমিটি আমাদের চিঠি দিয়েছে, এর জবাবে আমরা নিবন্ধিত দলগুলোর প্রতি পত্র প্রেরণ করায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি। একই সঙ্গে তাদেরকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি, দেশের বাস্তবতা হলো, আজ পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থাটাই ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে করে নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর জনগণের কোনো আস্থা নেই। তাই প্রয়োজন নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা। অন্যদিকে অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করলেই যে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হবে সেটিও প্রতিয়মান হচ্ছে না।
অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ন্যাপ মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপেও নির্বাচন কমিশন গঠনের চাইতে নির্বাচনী ব্যবস্থায় জনগণের আস্থা অর্জন ফিরিয়ে আনার বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করেছে। আমরা মনে করি, শুধু নির্বাচন কমিশন দিয়েই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়। তাই আমরা দলীয়ভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন কমিশনারের বিষয়ে কোনো নাম প্রস্তাব না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
এছাড়া ২০ দলীয় জোটের শরিক নিবন্ধিত দল এলডিপিও জানিয়েছে তারা অনুসন্ধান কমিটির কাছে কোনো নাম প্রস্তাব করবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২
এমএইচ/এজে