বরগুনা: বরিশাল অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির বিরুদ্ধে বরগুনার অ্যাম্বুলেন্স আটকে চাঁদাবাজি, চালকদের মারধর, গাড়ি ভাঙচুর ও রোগীদের হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে।
রোববার (৫ জুন) ১২টার দিকে জেলা পৌর সুপার মার্কেটের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপস্থিত বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বরগুনা থেকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বরখা জেলা প্রশাসন আমাদের ৩ হাজার ২০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে দিলেও এটি একটি সেবামূলক কাজ বিধায় আমরা সব সময়ই রোগীদের আর্থিক সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে বরিশালে রোগী পরিবহন করি। অনেক রোগী নিজেদের সুবিধার্থে বরগুনা থেকে আসা-যাওয়ার জন্য আমাদের ঠিক করে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নেন।
কিন্তু অতিব দু:খের বিষয় হচ্ছে , গত তিন মাস ধরে বরিশাল অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতি আমাদের বরগুনার রোগীদের বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বরগুনা নিয়ে আসতে পথে বাধা দেয়। বরিশাল অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির একটি বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী প্রতিদিনই বরিশাল দপদপিয়া টোলের সামনে বরগুনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সমস্ত অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে রোগীদের নামিয়ে আমাদের গাড়ির চাবি ও চালকদের ফোন আটকে ৩ৎ-৪ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছে।
গত ২৫ জানুয়ারি তারিখে বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের রশিদ উদ্দীন সরদারের ছেলে অ্যাম্বুলেন্স মালিক ও চালক ফরিদ উদ্দীনের কাছ থেকে ২০০০ হাজার টাকা আদায় করে। এরপর যথাক্রমে চালক ও মালিক বেল্লাল, সবুজ, আনোয়ার, মো. মনির মিয়ার কাছ থেকে একইভাবে সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন ২ হাজার হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছে।
গত ১৭ মে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে বরিশাল অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির লোকজন বরগুনাগামী হাওলাদার নামের মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স আটকে ১ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা নিয়েছে। বরিশাল অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির উপদেষ্টা শেবাচিম এলাকার স্থানীয় কাউন্সিলর মজিবুর রহমানের নাম ভাঙিয়ে বরিশাল অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির সভাপতি ফিরোজ আলম, সাধারণ সম্পাদক সজিব মিয়া ও তাদের লোকজন মিলে চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট তৈরি করেছে।
চলতি বছরের ১৪ মার্চ বরগুনার ব্যবসায়ী ইসমাইল বিহারী একজন আত্মীয়কে নিয়ে বরিশাল থেকে বরগুনার আম্বুলেন্সে আসার পথে বরিশাল সেতুর পর আটকে দেওয়া হয়। এ সে সময় অ্যাম্বুলেন্স চালককে গালিগালাজ ও মোবাইলফোন ও চাবি কেড়ে নিয়ে টাকা দাবি করেন তারা। পরে ইসমাইল বিহারীকে ৩ হাজার টাকা দিয়ে রোগী নিয়ে আসতে হয়েছে।
এ সময় সভাপতি ম. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অ্যাম্বুলেন্স একটি অতি জরুরি সেবা। মানুষের সঙ্কটাপন্ন অবস্থায়, অন্তিম মুহূর্তে আমরা মানবিক। নিতে গিয়ে অমানবিক চাঁদাবাজির শিকার হয়ে আসছি। আমরা যারা মানুষকে সেবা দেব, আমরাই এখন নিজেরা চাঁদাবাজির শিকার। সরকারের আইন ভঙ্গ করে যারা অ্যাম্বুলেন্স সেবা দেওয়ার কাজ বাধাগ্রস্ত করেন, তাদের নামে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার ও আমাদের এই সমস্যার সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া বিনীত অনুরোধ জানাই।
উপস্থিত ছিলেন বরগুনা অ্যাম্বুলেন্স চালক সমবায় সমিতির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, বরগুনা অ্যাম্বুলেন্সচালক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম সরোয়ার লিটন মৃধা, রাজ্জাক, মনিরসহ ৬টি উপজেলার অ্যাম্বুলেন্স চালক ও মালিকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২২
এসআরএস